২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া)

পেশায় কৃষক হলেও মতিন এমপি ৫ বছরে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়

মৌলভীবাজার-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল মতিন - নয়া দিগন্ত

মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়া আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল মতিন বিগত পাঁচ বছরে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। হয়েছেন গাড়ি বাড়ির মালিক। পাশাপাশি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি মহাজোটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর পুণরায় দলে ফিরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বও পান।

দশম ও একাদশ, এই দু’টি জাতীয় নির্বাচনের ফাঁকে তিনি কোটি কোটি টাকা এবং দু’টি দামি গাড়ির মালিক হয়েছেন। স্থাবর (জমিজমা) সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ। নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামায় পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেয়া হলফনামায় এইচএসসি পাশ মোঃ আবদুল মতিনের পেশা ছিল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তিনি নিজের পেশা কৃষি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

পূর্বেকার পেশা অর্থাৎ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে থেকে পাওয়া সম্মানী থেকে বছরে আয় হতো ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে মাত্র ৪০ হাজার টাকা ছিল। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, ৪০ হাজার টাকার বৈদ্যুতিকসামগ্রী এবং ৪০ হাজার টাকার আসবাবসমাগ্রী ছিল। যৌথ মালিকানায় ৫ একর স্থাবর সম্পদ ছিল।

বিগত পাঁচ বছরের ব্যবধানে শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো পরিবর্তন না হলেও অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নিজের নামে ৬০ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩ টাকা নগদ রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি ব্যাংকে জমা আছে ৪৫ লাখ ১৯ হাজার ৪০৩ টাকা। ব্যাংকে এবং নগদ অর্থ মিলে তার আছে মোট এক কোটি ৫ লাখ ৯২ হাজার ৪৯৩ টাকা। ৫৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের একটি এবং ১৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের আরেকটি গাড়ি রয়েছে।

অন্যদিকে স্ত্রীর ৫ ভরি স্বর্ণালংকার বৃদ্ধি পেয়ে পাঁচ বছরে পরিণত হয়েছে ১১৮ ভরিতে। ৮০ হাজার টাকা মূল্যের বৈদ্যুতিক সামগ্রী ও ৭০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবসামগ্রী রয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

এদিকে অস্থাবর সম্পদের বিবরণীতে নিজের নামে ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ১২৪ শতক কৃষি জমি, ৩৩ লাখ টাকা মূল্যের ৩৩ শতক অকৃষি জমি আছে। তাঁর কোনো ঋণ বা দায় নেই।

নিজের এবং স্ত্রীর বিপুল অর্থসম্পদ সম্পর্কে সংসদ সদস্য মোঃ আবদুল মতিন বলেন, এমপি হিসেবে তিনি প্রতি মাসে প্রচুর টাকা সম্মানী পান। সম্মানীও বেড়েছে। এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। এ কারণে নগদ ও ব্যাংকে টাকা বেড়েছে। কিনেছেন গাড়ি। সরকারিভাবে তিনি কিছু জমিও পেয়েছেন।

এসব বিপুল সম্পদ অর্জনের পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই বলেও দাবি করেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement