২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘রাজাকার পুত্রের’ মনোনয়ন মেনে নেবে না নেতাকর্মীরা

‘রাজাকার পুত্রের’ মনোনয়ন মেনে নেবে না নেতাকর্মীরা - ছবি : সংগৃহীত

সিলেট-৩ আসনের (দক্ষিণ সুরমা- ফেঞ্চুগঞ্জ- বালাগঞ্জ) বর্তমান সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েসকে ‘রাজাকার পুত্র’ আখ্যায়িত করে তার পুনরায় মনোনয়ন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু জাহিদ।
সোমবার নগরীর পূর্ব জিন্দাবাজারের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।

আবু জাহিদ বলেন, ‘সিলেট-৩ আসনের বর্তমান এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধূরী কয়েস একজন রাজাকারের পুত্র। তার বাবা দেলোয়ার হোসেন ফিরু মুক্তিযুদ্ধের সময় ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হকের ‘রণাঙ্গণে একাত্তর’ বইয়ে এর উল্লেখ আছে।’ মুক্তিযুদ্ধের সময় নারী নির্যাতন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের হত্যা ও অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে ফিরু রাজাকারের তালিকা অনুযায়ী। এমপি কয়েছও মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাকবাহিনীর স্থানীয় কমান্ডার ক্যাপ্টেন আনসারীর জলপাই রঙের গাড়িতে চড়ে ফেঞ্চুগঞ্জের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়িয়ে নির্যাতনের ছক তৈরি করেছিলেন স্থানীয়ভাবে।

তিনি বলেন, ‘ক্ষেভের চাপা আগুন নেতাকর্মীদের মনে। তারা সব কিছু মেনে নেবে, কিন্তু রাজাকার পুত্রের নৌকার মনোনয়ন কোনো অবস্থাতেই মেনে নেবে না। ইতোমধ্যে তাকে চূড়ান্ত প্রতিরোধের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রত্যাশা, স্থানীয় অবস্থা বিবেচনা করে দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত ইমেজ বহুল জনপ্রিয় ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ার পদক্ষেপ নেবেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী। জনগনের আবেগ ও চেতনার প্রতি দরদ দেখিয়ে মনোনয়ন চুড়ান্ত হলে নৌকার বিজয় কেউ রুখতে পারবে না।

দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মানুষ মাহমুদ উস সামাদের কারণে উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, ‘এমপির অসহযোগিতা ও উন্নয়নবিমুখ অসৎ মানসিকতা এর জন্য দায়ী। সিলেট-সুলতানপুর-বালাগঞ্জ সড়কের করুণ দশা । দক্ষিণ সুরমার একমাত্র ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে এমপি মাহমুদ উস সামাদের বিরুদ্ধে আধিপত্য বজায় রাখতে দলীয় নেতা-কর্মীদের কোনঠাসা করে রাখারও অভিযোগ আনেন আবু জাহিদ।

তিনি বলেন, ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে মাহমুদ উস সামাদ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে ঘড়ি মার্কা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নৌকার ভরাডুবি নিশ্চিত করেছিলেন। কিন্তু ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের টিকেট বগলদাবা করে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে নির্মূল করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রইছ আলী, মোগলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম সাইস্তা, আওয়ামী লীগ নেতা জামাল উদ্দিন, তপন চন্দ্র পাল, জেলা পরিষদ সদস্য নুরুল ইসলাম ইছন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা পান্নাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ।


আরো সংবাদ



premium cement