২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মসজিদে নামাজরত অবস্থায় শাবি শিক্ষকের মৃত্যু

মো: খায়রুল্লাহ। - ছবি: নয়া দিগন্ত

জুমার নামাজরত অবস্থায় হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো: খায়রুল্লাহ। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো: ইশফাকুল হোসেন জানান, শুক্রবার জুমার নামাজে সুন্নাত পড়ার সময় হঠাৎ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মো: খায়রুল্লাহ। পড়ে তাকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মৃত্যুবরণ করেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় তার প্রথম জানাজা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও দ্বিতীয় জানাজা শনিবার সকালে গ্রামের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে।

মরহুমের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ডর্মেটরিতে থাকতেন। তার স্ত্রী ফারহানা শাহরিয়ার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞানের প্রভাষক বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে মো: খায়রুল্লাহ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৯৮-৯৯ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। কানাডা থেকে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন শেষে গত এপ্রিলে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেন তিনি। তার সহকর্মীরা জানান, বেশ কয়েকদিন যাবত মো: খায়রুল্লাহ অসুস্থ ছিলেন। তার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।

আরো পড়ুন: শাবি শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যুর তদন্ত দাবি

শাবি সংবাদদাতা, ০৮ জুলাই ২০১৮


শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মৃত্তিকা রহমানের রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় ‘শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীবৃন্দ’ এর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। 
বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন শেষে একটি মৌনমিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

সমাবেশে মৃত্তিকার সহপাঠী আনিকা তাবাস্সুম বলেন, মৃত্তিকার স্বামী আব্দুল্লাহ জুবেরির পরকীয়া ছিল বলে মৃত্তিকা আমাদের আগে বলেছিল। তার স্বামী তাকে প্রায়ই মারধর করতো। স্বামীর নির্যাতনের মধ্যে তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়।


সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৃত্তিকা রহমান গত ৩ জুলাই পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায় স্বামীর বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্তিকার স্বামী আব্দুল্লাহ জুবেরি বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের পঞ্চগড়ের শাখায় কর্মরত।

নিহতের পরিবার ও স্বামীর বাড়ির পক্ষ থেকে মৃত্যুর ঘটনাটিকে আত্মহত্যা দাবি করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়। এরপর থেকে মৃত্তিকার মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যা নয় বলে সন্দেহ করে আসছেন তার বন্ধু ও বিভাগের শিক্ষকরা।

 

আরো পড়ুন: শাবি শিক্ষকদের পেটাল ছাত্রলীগ


আহত ১০সিলেট ব্যুরো ও শাবি সংবাদদাতা৩১ আগস্ট ২০১৫,সোমবার, ০০:০০
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের পেটাল ছাত্রলীগ। হামলায় অন্তত ১০ শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মুখপাত্র অধ্যাপক ড. সৈয়দ শামসুল আলম। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় ভিসিকে তার কার্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেয়া হলে শাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষকদের ওপর চড়াও হন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রোববার বেলা ৩টায় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা আহ্বান করেন ভিসি অধ্যাপক ড. আমিনুল হক ভূঁইয়া। সভা ঠেকাতে শনিবার রাতেই বৈঠক করেন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ। বৈঠক শেষে পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সৈয়দ শামসুল আলম রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা দেন। একই সাথে ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। কিন্তু রোববার ভোরে ভিসির সমর্থনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সকাল ৭টায় মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদের শিক্ষকেরা পদযাত্রা করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে পৌঁছলে শিক্ষকদের সাথে ধ্বস্তাধস্তি করে ব্যানার ছিনিয়ে নেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ সময় পুরো ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আন্দোলনকারী শিক্ষক ও ছাত্রলীগের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেই সকাল ৮টায় কার্যালয়ে প্রবেশ করতে যান ভিসি। এ সময় শিক্ষকেরা তাকে বাধা দিলে ছাত্রলীগ কর্মীরা পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষকদের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনুস, অধ্যাপক ড. সৈয়দ শামসুল আলম ও সহযোগী অধ্যাপক মো: ফারুক উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন তারা। শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক সৈয়দ সামসুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের হামলায় ১০ জন শিক্ষক আহত হয়েছেন।
তবে শিক্ষকদের ওপর হাত তোলার অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ কর্মীরা বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং আন্দোলনকারী শিক্ষকেরাই বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন। ছাত্রলীগ কর্মীরা নিজেদের ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ দাবি করে বলেন, কয়েকজন শিক্ষকের আন্দোলনের কারণে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, হামলায় ছাত্রলীগ কর্মীদের নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবু সাইদ আকন্দ, সহসভাপতি অঞ্জন রায় ও যুগ্ম সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম সবুজ। এ ছাড়াও ঘটনাস্থলের পাশেই অবস্থান করছিলেন শাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিবন চক্রবর্তী পার্থ ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সঞ্জিবন চক্রবর্তী পার্থ বলেন, এটা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নয়। তবে নেতাকর্মীরা নিজের ইচ্ছাতেই এতে অংশ নিয়েছেন। আর শিক্ষকদের ওপর হামলা হয়ে থাকলে তা অবশ্যই নিন্দনীয়।

এ দিকে ছাত্রলীগ কর্মীদের সহায়তায় কার্যালয়ে ঢুকার পর ভিসি অধ্যাপক ড. আমিনুল হক ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষকদের এই আন্দোলন একেবারেই অযৌক্তিক। এ ছাড়া কার্যালয়ে প্রবেশের সময় আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তাকে লাঞ্ছিত করেছেন বলেও পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।

অধ্যাপক ড. আমিনুল হক ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার অপসারণের দাবিতে গত ১৩ এপ্রিল থেকে আন্দোলন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী-বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ’। এরপর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিভিন্ন সময় পদক্ষেপ নিলেও এ পর্যন্ত উভয়পক্ষ নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। এমতাস্থায় গত ২৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ১১ দফা নির্দেশনা সংবলিত চিঠি পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জিন্নাত রেহানা স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে আন্দোলন বন্ধ করে কাস পরিচালনায় মনযোগী হতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি আগামী ৬ মাস ভিসিকে পর্যবেক্ষণে রেখে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। তবে এই চিঠি পাওয়ার পরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রোববার আন্দোলনরত শিক্ষক ও ছাত্রলীগ মুখোমুখি অবস্থান নেয়ার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।


আরো সংবাদ



premium cement