২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

‘তোকে বিবস্ত্র করে পেটাবো, ধর্ষণ করাবো’

এএসআই কামরুজ্জামান - সংগৃহীত

সিলেটের বিশ্বনাথ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী এক তরুণীকে ধর্ষণের হুমকির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ভোর থেকে সিলেট পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে বিশ্বনাথ থানা পুলিশের এএসআই কামরুজ্জামানকে। বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে কামরুজ্জামান ধর্ষনের হুমকিসহ অশালীন আচরন করেন-এমন তথ্য তুলে ধরে ওইদিন রাত ১০টার দিকে সিলেটের ওসমানীনগর সার্কেলের এএসপি সাইফুল ইসলামের নিকট লিখিত অভিযোগ দেন দ্বাদশ শ্রেনীতে পড়ুয়া ওই তরুণী।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে কলেজ ছাত্রীর সৎ-মা মনোয়ারা বেগমের দেয়া অভিযোগ তদন্তে বিশ্বনাথ উপজেলার সদর ইউনিয়নের জানাইয়া (মশুলা) গ্রামের বাড়িতে সাদা পোষাকে যান এএসআই কামরুজ্জামান। সেখানে অভিযোগকারীর পক্ষ নিয়ে অশালীন আচরণসহ কলেজ ছাত্রীকে বখাটে ছেলেদের দিয়ে ধর্ষণের হুমকি দেন। বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, কলেজ ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ভোর থেকে এএসআই কামরুজ্জামানকে সিলেট পুলিশ লইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
ওসমানীনগর সার্কেলের এএসপি সাইফুল ইসলাম জানান, কলেজ ছাত্রীর পুরো পরিবারের লোকজন তার কাছে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কলেজ ছাত্রী ওই তরুণীর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর বাবার কাছ থেকে কিছু জমি ক্রয় করে একই বাড়িতে বসবাস করছিলেন তারা। দীর্ঘদিন ধরে সৎ মায়ের সাথে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়া চলে আসছিল তাদের। সৎ মায়ের দেয়া অভিযোগের তদন্ত করতে ৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় সাদা পোশাকে তাদের বাড়িতে যান এএসআই কামরুজ্জামান। এসময় বাড়িতে ছিলেন ওই তরুণী, তার ছোটবোন (১৬) ও মা (৪৬)।
স্থানীয় কিছু বখাটেদের নিয়ে কামরুজ্জামান প্রথমেই অশ্লীল গালি দিয়ে বিনা অনুমতিতে ঘরে প্রবেশ করেন। উচ্চ আওয়াজে অকথ্য ভাষায় সবাইকে গালি দেন। কারণ জিজ্ঞাস করলে তিনি চড়াও হন কলেজছাত্রী ওই তরুণীর উপর। পরে তার মা ও বোনের ঘরে কামরুজ্জামান প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেন ওই তরুণী।এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে কামরুজ্জামান বলেন, ‘তোকে বিবস্ত্র করে পেটাবো, সঙ্গীয় ছেলেদের দিয়ে ধর্ষণ করাবো। তোরা নষ্টা মেয়ে মানুষ। আমি তোর এমন অবস্থা করব আর কেউ তোকে বিয়ে করবে না।’ এসময় হট্টগোল শুনে ওই কলেজছাত্রীর মা ও বোন ঘর থেকে বেরিয়ে এলে তাদের সাথেও অভদ্র আচরণ করেন কামরুজ্জামান। সঙ্গীয় বখাটে ছেলেদের বলে যান তারা যেন এই তরুণীদের ভালোভাবে ঠিক করে দেয়।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে এএসআই কামরুজ্জামানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, 'আমি যা বলেছি ওদের ভালোর জন্যেই বলেছি। ওদের শাসিয়েছি মাত্র।'
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কলেজ ছাত্রীর মায়ের অনুমতি ছাড়াই তার পিতা আশিক আলী ২০১০ সালে সিলেটের বাদাঘাটে ৪ সন্তানের জননী মনোয়ারা বেগমকে ২য় বিয়ে করেন। এরপর থেকে পারিবারিক কলহসহ নানা বিষয়াদি নিয়ে শত্রুতার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে একই বাড়িতে পৃথক ঘরে বসবাস করে আসছেন তারা। সম্প্রতি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলে গত ৫ সেপ্টেম্বর কলেজ ছাত্রী ও তার মা-ভাই-বোনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন সৎ মা মনোয়ারা। আর ওই অভিযোগ তদন্তে গিয়েই অশালীন আচরণসহ বখাটেদের দিয়ে ধর্ষণের হুমকি দেন এএসআই কামরুজ্জামান।

 

ফুল নিয়ে বিসিএসের ভেরিফিকেশনে পুলিশ
নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) সংবাদদাতা
বিসিএস ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া দুইজনের ব্যক্তিগত তথ্য যাচাইয়ে গিয়ে তাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় বিরামপুরের খানপুর ইউনিয়নের চ্যাংমারি গ্রামে ও দুপুর ১টায় হাকিমপুরের বোয়ালদার ইউনিয়নের বোয়ালদার গ্রামে ওই দুইজনের বাসায় ভেরিফিকেশন করতে গিয়ে তাদের শুভেচ্ছা জানান বিরামপুর-নবাবগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিথুন সরকার।
৩৭তম বিসিএস পরীক্ষায় সড়ক ও পরিবহণ ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া বিরামপুরের চ্যাংমারি গ্রামের মো: ইলিয়াস ফারুক ( সুজন) রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাশ করেছেন; আর প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া হাকিমপুরের বোয়ালদার ইউনিয়নের বোয়ালদার গ্রামের মো: গোলাম রব্বানী সরদার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে থেকে মাস্টার্স পাশ করেছেন।
সার্কেলের এএসপি মিথুন সরকার নয়া দিগন্তকে বলেন, “কয়েক লাখ প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এই দুইজন ৩৭ তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাকরির সুপারিশ পেয়েছেন। “নিঃসন্দেহে তারা অনেক মেধাবী। তাদেরকে অভিনন্দন জানানো উচিত আমাদের।”
৩৩ তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়া মিথুন সরকার আরো বলেন, “নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া দুইজনের ঠিকানা আমার জোনের অধীনে। সুপারিশ পাওয়াদের অনেকের পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়ে ভীতি ও নেতিবাচক ধারণা থাকে। সে ধারণা থেকে বের হয়ে আসার জন্য আমি তাদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলাম।”
দুপুরে দুইজনের বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। দুইজনের বাবা-মাকেও পুলিশ অভিনন্দন জানিয়েছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়ে অনেকের কাছ থেকে নানা ধরনের হয়রানির কথা শুনেছেন তারা। তবে তাদের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ঘটেছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের খোঁজ খবর নেওয়ার পর তাদের বাসায় আসেন এবং ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
কোনো ধরনের হয়রানি ও টাকা ছাড়া তাদের ভেরিফিকেশন হয়েছে বলে জানান, বিসিএস ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া ওই দুইজন।


আরো সংবাদ



premium cement