২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আজ সিসিকের ১৬ কেন্দ্রে পুনঃভোট গ্রহণ

আরিফ-কামরানের ভাগ্য নির্ধারণ আজ - ছবি : সংগৃহীত

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে হাঙ্গামার কারণে স্থগিত হওয়া দু’টি কেন্দ্র এবং একটি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে দুই প্রার্থীর ভোট সমান হওয়ায় ১৪টি কেন্দ্রে আজ শনিবার পুনঃভোটগ্রহণ হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে টানা ভোটগ্রহণ। ইতোমধ্যে এসব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। ১৬টি কেন্দ্রে সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, ব্যাটালিয়ন পুলিশ, ব্যাটালিয়ন আনসার ও আনসার-ভিডিপির হাজারখানেক সদস্য মোতায়েন থাকবেন। শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট বক্সসহ ভোটগ্রহণের সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছেছেন ভোটগ্রহণের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এসব কেন্দ্রে শ’ খানেক প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পুলিং কর্মকর্তা ভোট গ্রহণের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। মহানগর পুলিশ, আর্মড পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন আনসার, আনসার-ভিডিপির প্রায় সহস্রাধিক ফোর্স নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। ১৬টি কেন্দ্রের জন্য সাতজন ম্যাজিস্ট্রেট ও চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। ম্যাজিস্ট্রেটদের দু’জন স্থগিত হওয়া দু’টি কেন্দ্রে পুলিশের টিমের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক অবস্থান করবেন। এ ছাড়া বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্সে চারজন ও র্যাবের ছয়টি টিমের একটির সাথে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।

৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত সিসিক নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচন স্থগিত করা হয়। গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজার ১২১ ভোটার এবং হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ হাজার ৫৬৬ জন ভোটার রয়েছেন।
এ ছাড়া সংরক্ষিত সাত নম্বর ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্রে ভোটার রয়েছেন ৩৪ হাজার ১২৩ জন।

আরো পড়ুন :

জাল ভোট ঠেকাতে ইসির পদক্ষেপ চান আরিফুল
নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেট সিটিতে স্থগিত হওয়া দুই কেন্দ্রে যেন জাল ভোট না পড়ে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সিইসির কাছে দাবি জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসারের ঘোষিত ফলে এগিয়ে থাকা বিএনপির মেয়রপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সাথে সাাৎ করে ভোটের দিন মৃত ও প্রবাসীদের ভোট গণনায় না নেয়ার দাবি জানান তিনি। ৩০ জুলাইয়ের ভোটে দুই কেন্দ্রের জন্য সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল স্থগিত রয়েছে। সেই দুই কেন্দ্রে ভোট হবে শনিবার। 

গতকাল সিইসির সাথে দেখা করে বের হয়ে সাংবাদিকদের আরিফুল হক চৌধুরীর বলেন, সিলেটে যেসব ভোটার মৃত্যুবরণ করেছেন এবং প্রবাসে আছেন তাদের নামের তালিকাটা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে দিয়েছি। নামসহ এ তালিকা দেয়া হয়েছে। আমার তাদের (ইসির) প্রতি অনুরোধ থাকল মৃত এবং প্রবাসীদের ভোটগুলো যেন কাস্ট না হয়। 


আরিফুল জানান, তার দাবির বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন সিইসি। তিন বলেন, এমনিতেও আমি আনেক ভোটে এগিয়ে আছি। সিইসি আমাকে বলেছেন, এটা তারা দেখবেন। এখন তারা দেখছেন। সার্বিকভাবে সিলেটের নির্বাচন নিয়ে আরিফুল হক বলেন, এগুলো বলে লাভ নেই, আমার মনে হয় লাইভ হলে ভালো হতো। আপনারা এগুলো জনগণকে দেখান না। 

সিলেট সিটির ভোট নিয়ে সিইসিকে কী জানানো হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে আরিফুল হক বলেন, বলার জায়গায় সব বলেছি। আমি এখন আপনাদেরকে লাইভ (সরাসরি প্রচার) ছাড়া কিছু বলতে চাই না। লাইভ হলে আপনারা কাট করতে পারবেন না। আর না হলে আসল কথাটা জনগণ জানল না। নানা অভিযোগের পরও এগিয়ে থাকার বিষয়ে আরিফুল বলেন, আমি প্রত্যেকটা মিডিয়ার সামনে একই কথা বলেছি, সুষ্ঠু নিরপে নির্বাচন হলে আমি এক লাখের উপরে ভোট পাবো। কারণ জনগণের প্রতি আমার কনফিডেন্স আছে। আমি সে কনফিডেন্স নিয়েই কথা বলেছি। তার প্রমাণও পেয়েছেন। সিলেট সিটি নির্বাচনের আসল চিত্র জনগণ দেখার সুযোগ পায়নি। তার পরও আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমি এখনও এগিয়ে আছি। 

গত ৩০ জুলাই রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাথে সিলেট সিটিতে ভোটগ্রহণ করা হয়। অনিয়মের কারণে দু’টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করে ইসি। সিলেটের রিটার্নিং অফিসার ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টির যে ফলাফল ঘোষণা করেন, তাতে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ৪ হাজার ৬২৬ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের বদর উদ্দীন আহমদ কামরানের চেয়ে এগিয়ে আছেন। সিলেটের গত মেয়াদের মেয়র আরিফুল ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৩ ভোট। আর সাবেক মেয়র কামরান নৌকা প্রতীকে ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট পেয়েছেন। স্থগিত থাকা গাজী বোরহান উদ্দিন মাদ্রাসা (১১৬ নম্বর কেন্দ্র) ও হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৩৪ নম্বর কেন্দ্র) কেন্দ্রে মোট ভোট আছে ৪৭৮৭টি। অর্থাৎ দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধানের চেয়ে ১৬১টি ভোট বেশি রয়েছে স্থগিত কেন্দ্র দুটিতে।

গত ৩০ জুলাই নির্বাচনে বাসগাড়ি প্রতীকে ৪ হাজার ১৫৫ ভোট পান নাজনীন আক্তার কণা। তার প্রতিদ্বন্দ্বী নার্গিস সুলতানাও চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সমান সংখ্যক ভোট পান, যে কারণে তাদের মধ্যে পুনঃভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।

৩০ জুলাই সিসিক নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডে ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টির ঘোষিত ফলাফলে মেয়র পদে আরিফুল হক চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৬ ভোট। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট। ফলাফলে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের চেয়ে ৪ হাজার ৬২৬ ভোটে আরিফুল হক চৌধুরী এগিয়ে থাকলে স্থগিত কেন্দ্র দু’টির ভোটের চেয়ে ১৬১ ভোট কম পেয়েছেন। স্থগিত কেন্দ্র দু’টির মোট ভোট ৪ হাজার ৭৮৭। যে কারণে গত ১ আগস্ট নির্বাচন কমিশন স্থগিত কেন্দ্র দু’টিসহ ১৬ কেন্দ্রে ১১ আগস্ট পুনর্নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে।


আরো সংবাদ



premium cement