২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে শুরুতেই ঝড়ে পড়ছে শিশু শিক্ষার্থীরা

-

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের দীপ সাদৃশ্য গ্রাম গুলোর শিশুরা প্রতিনিয়ত প্রাথমিক শিক্ষার জ্ঞানের আলো থেকে বিঞ্চিত হচ্ছে। আর মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে পড়া শুনা করতে গিয়ে পরতে হয় নানা সমস্যায়। শিক্ষক,স্কুল সংকট,অসচেতনতা,আর্থিক,অভার-অনটন,অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানান সমস্যা থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সূচনা শেষ না করতেই ঝড়ে পড়ছে শিশু শিক্ষার্থীরা। ফলে সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে অবহেলিত সকল শিশুকেই স্কুলগামী নিশ্চিত করনের চেষ্টা রসা তলে যাচ্ছে দিন নিন।
জানাযায়,জেলার তাহিরপুর,জামালগঞ্জ,ধর্মপাশা,বিশ্বাম্ভরপুর,দিরাই,শাল্লাসহ প্রতিটি উপজেলার দীপ সাদৃশ্য যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন গ্রাম গুলোতে কাগজে কলমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান উন্নয়নে সফলতা দেখানো হলেও বাস্তবে এর চিত্র ভিন্ন রখমের। আর এর প্রধান সমস্যা শিক্ষার মান উন্নয়নের প্রধান সমস্যা হল শিক্ষক। শিক্ষকরা তাদের পছন্দের স্কুলে যোগদান করতে না পারায় প্রথমে চাকরীর প্রয়োজনে স্কুলে যোগদান করে এর পর পরই সংশ্লিষ্ট উর্ধবতন কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে বদলী হয়ে যায় নিজের পছন্দ আর চাহিদার স্কুলে। সময় মত স্কুলে না গিয়ে ক্লাস না নেওয়ার ফলে শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাগাত সৃষ্টি হচ্ছে অভিযোগ হাওরবাসীর। এছারাও রয়েছে স্কুলের দূরত্ব,সড়ক পথে যোগাযোগ না থাকা,বর্ষায় নৌকায় ঝুকিঁ নিয়ে চলাচলের ভয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের মা,বাবা স্কুলে পাঠাতে অনীহা রয়েছে। প্রত্যান্ত এলাকার যার জন্য হাওর এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পাড় হতে না পেরে জরিয়ে পড়ছে বিভিন্ন কাজ কর্মে পরিবারের সচ্ছলতার স্বার্থে শিশুরা আর বাড়ছে শিশু শ্রমিক। আরো জানাযায়,হাওর বেষ্টিত জেলার তাহিরপুর উপজেলার ২৪৯টি গ্রামের মধ্যে ১৩২টি বিদ্যালয় থাকলেও এ উপজেলার উত্তর শ্রীপুর,দক্ষিন শ্রীপুর,উত্তর বড়দল,দক্ষিন বড়দল ইউনিয়নের দীপ সাদৃশ্য গ্রাম ও সীমান্ত এলাকার অর্ধশতাধিক গ্রামেই নেই প্রাথমিক বিদ্যালয়। ঐসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রয়েছে ৩১হাজারের অধিক। ১৩২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে সরকারী ৫৭টি,জাতীয়করন ৬৩টি,রেজিষ্টার্ড ৪টি এবং কমিউনিটি ৩টি বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয় গুলোতে বিভিন্ন পদে শিক্ষকের পদ শূন্য আছে। উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের পরিসংখ্যায় দেখানো হয়েছে প্রথম শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেনী পড়া-শুনার মধ্যেই প্রায় ১৫.৫০ ভাগ শিক্ষাথী ঝড়ে পড়ে যায়। তবে সচেতন মহলের ধারনা প্রাথমিকের মধ্যেই প্রায় ৩৫ভাগের বেশী শিশু শিক্ষার্থী ঝড়ে পরে যায় শিক্ষা জীবন শুরু থেকে পঞ্চম শ্রেনীর মধ্যেই। উপজেলায় শিক্ষা কার্যালয়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার কোন সঠিক তথ্য না থাকলেও বেসরকারী ভাবে জানা গেছে ঝড়ে পরার সংখ্যা প্রায় ৭হাজারের বেশী। ইউনিসেফ এর তথ্য মতে তাহিরপুর উপজেলায় শিক্ষার হার ৭ভাগ। নাম লিখতে ও পড়তে পাড়ে ৩৪ভাগ।
হাওর পাড়ের শিক্ষার্থীরা জানান-আমরার বাড়ি থেইকা স্কুল অনেক দূরে,শুকনা মাসে পায়ে হাইটা যাইতে হয় তাও ভালা কোন রাস্তা নাই। আর বর্ষার সময় জীবনের ঝুকি নিয়ে স্কুলে যেতে হয় নৌকা দিয়ে। যাওয়ার সময় মাঝে মধ্যে বৃষ্টি ও হাওরের পানিতে পরে বই খাতা বিজ্জা যায়।
হাওর পাড়ের অভিবাবকগন জানান-আমরা হাওরবাসী সব ক্ষেত্রেই পিছিয়ে আছি যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায়। বিকল্প কাজের কোন বিকল্প নাই। আছে অভাব অনটন। বর্ষায় মাছ আর শুষ্ক মৌসুমে হাওরে ধান চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করি খুব কষ্টে। তার পরও ছেলে- মেয়েদের লেখা পাড়া কারোনো সর্বোচ্ছ চেষ্টা করি। তাই বর্ষায় নৌকার ব্যবস্থা করা ও শুষ্ক মৌসুমে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থার পরির্বতন আনা হাওরবাসীর জন্য সময় উপযোগী দাবী।
হাওরপাড়ের শিক্ষকগন হাদিউজ্জামান সহ অনেকেই জানান,হাওরপাড়ের স্কুল গুলোতে সড়ক পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ও পরিবারের আর্থিক অভাবের কারনে অনেক শিশু শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। স্কুলে আসার জন্য বর্ষায়র সময় নৌকার ব্যবস্থা ও হাওর পাড়ের অভাবী পরিবার গুলোকে বিশেষ আর্থিক সহায়তা করলে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাবে।
তাহিরপুর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী জানান-তাহিরপুর উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন গ্রাম গুলোতে শিক্ষার প্রসারে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যকর সর্বাতœক চেষ্টা অব্যাহত আছে। সাথে সাথে অভিবাবকদের শিক্ষার প্রসাবের জন্য গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রয়েছে তা পালন করতে হবে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন-তাহিরপুরের বর্ষার ৬মাস চারপাশ পানি থাকে তাই প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগাযোগে সমস্যা হয়। হাওরবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ও শিক্ষার প্রসারে জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের গুরুর্ত্বের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া খুবেই প্রয়োজন।


আরো সংবাদ



premium cement