মৌলভীবাজার শহরের আরো অনেক এলাকা প্লাবিত
- মৌলভীবাজার সংবাদদাতা
- ১৭ জুন ২০১৮, ১৫:১৫, আপডেট: ১৭ জুন ২০১৮, ২০:৪১
মৌলভীবাজার শহরতলীর বড়হাটের বারইকোনা এলাকায় মনুর বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়ায় মৌলভীবাজারের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে করে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছে বানভাসি মানুষ।
রোববার সকাল থেকে পৌরসভাধীন বড়হাট এলাকায় মৌলভীবাজার-সিলেট রোডে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এর আগে, মৌলভীবাজার-রাজনগর-সিলেট রোডের রাজনগর উপজেলাধীন কদমহাটা এলাকায় বন্যার পানিতে রাস্তা তলিয়ে গেলে এই রোডে যান চলাচল বন্ধ করা হয়। এর ফলে সিলেটের সঙ্গে মৌলভীবাজারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া জেলার রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এদিকে দুপুরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের ভিতরে যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য কুসুমভাগ এলাকায় সেনা বাহিনীর নেতৃত্বে একটি বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তা দিতে দেয়নি। এলাকাবাসীর দাবী এখানে বাঁধ দিলে তারা আরো পানিতে তলিয়ে যাবে।
মৌলভীবাজার জেলা খাদ্য গুদামের ইনচার্জ মো: সাখাওয়াত হোসেন জানান, রাতে হঠাৎ বন্যা দেখা দেয়ায় সরকারি খাদ্য গুদামের ভিতর প্রায় ২ হাজার মেট্রিকটন চাল ছিল তা উদ্ধার করা যায়নি। কিছু সংখ্যা চাল উদ্ধার করা হয়েছে।
মনুর বাঁধ ভাঙায় মৌলভীবাজার শহরের একাংশ প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ড ও তিনটি ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন নিচু এলাকার ড্রেন দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। শহর ও শহরতলীর বাসাবাড়িতে তিন থেকে চার ফুট পানিতে ডুবে আছে।
এদিকে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো: তোফায়েল ইসলাম ৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষনা করেছেন আশ্রয় কেন্দ্র গুলো হলো মৌলভীবাজার সরকারী কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারী মহিলা কলেজ, প্রাইমারি টিচার্স ইনস্টিটিউট, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরতলীর বড়হাট এলাকা,কুসুমবাগ, বড়কাপন, যোগীডর দূর্লভপুর, ঘরুয়া, বাহারমর্দন, সমপাশি, ভুজবল, খিদুর, দ্বারক, পাগুলিয়া,এবং সদর উপজেলার হিলালপুর ও শেখেরগাওঁ প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে, ভাঙনকবলিত এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের কর্মীরা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে তৎপর রয়েছেন। তবে এসবের মধ্যেও আতঙ্কে বাসিন্দারা এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করছেন মালামাল নিয়ে। এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
মৌলভীবাজার পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী রণেদ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, তি নদিন ধরে বিপদসীমার ওপরে পানি থাকায় বাঁধ ফেটে বেশ বড় জায়গাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেনাবাহিনীসহ আমরা পানি আটকানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু পানির গতি বেশি হওয়ায় বস্তা ফেলেও তা ঠেকানো যায়নি। নৌকা দিয়ে পানিবন্দিদের উদ্ধার কাজ চলছে ।
অন্যদিকে, জেলার কুলাউড়া, রাজনগর ও কমলগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।