২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

যে কারণে ভারতের প্রযুক্তি খাতের নেতৃত্বে বাংলাদেশীকে দেখতে চান মাইক্রোসফট প্রধান

সত্য নাদেলা - ছবি : বিবিসি

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা। তার ক্ষোভের মাত্রা এতটাই বেশি যে, তিনি বলেছেন, ভারতের প্রযুক্তি খাতের নেতৃত্বে কোনো বাংলাদেশি অভিবাসীকে দেখলেই তিনি খুশি হবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারনেটভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বাজফিডের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

খবরে প্রকাশ, ভারতীয় বংশোদ্ভুত নাদেলা বলেছেন, সিএএ নিয়ে ভারতে যা হচ্ছে তা ‘দুঃখজনক’।

নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সহিংস বিক্ষোভের মধ্যেই এই মন্তব্য করলেন সত্য নাদেলা।

ভারতের প্রযুক্তি খাতের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত হায়দরাবাদে জন্ম নেয়া সত্য নাদেলা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।

সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের নিয়ে মাইক্রোসফট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ক্ষোভের কথা জানান সত্য নাদেলা।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, যা হচ্ছে তা দুঃখজনক, বিশেষ করে সেখানে বেড়ে ওঠা কারো জন্য…আমি মনে করি খুব খারাপ।’

‘আমি খুশি হব যদি দেখি একজন বাংলাদেশি অভিবাসী ভারতে এসে পরবর্তী ইউনিকর্ন তৈরি করে অথবা ইনফোসিসের পরবর্তী সিইও হয়।’

পরে নাদেলার পক্ষে মাইক্রোসফট ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিও দেয়া হয়। সেখানেও তিনি একই কথা বলেছেন।

বিবৃতিতে নাদেলা বলেন, ‘প্রত্যেক দেশেরই নিজস্ব সীমানা, জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত এবং অভিবাসন নীতি ঠিক করার অধিকার আছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এসব নিয়ে সরকার ও জনগণের মধ্যে বিতর্কও হবে এবং তার মধ্যে দিয়েই এসব ঠিক করতে হবে।

আমি ভারতীয় ঐতিহ্য ও বহুমুখী সংস্কৃতির মধে বেড়ে উঠেছি এবং যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের অভিজ্ঞতাও আছে। আমি এমন ভারত আশা করি যেখানে একজন অভিবাসী এসেও ব্যবসা শুরু করতে অনুপ্রাণিত হবে কিংবা কোনো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেবে, যেখান থেকে মোটা দাগে ভারতীয় সমাজ এবং অর্থনীতিও উপকৃত হবে।’

মুসলিম সদস্যদের আপত্তির পরও গত ১১ ডিসেম্বর ভারতের লোকসভায় পাস হয় বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন।

১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে গিয়ে ভারতে শরণার্থী হওয়া হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে বিলে।

১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা ছিল, অন্তত ১১ বছর ভারতে থাকলে তবেই কোনো ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব দেয়া হবে। নতুন বিলে ওই সময় কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। তবে তাতে বাইরে থেকে আসা মুসলিমদের কথা বলা হয়নি।

গত ১০ জানুয়ারি নতুন আইন কার্যকর হওয়ার আগে থেকেই মুম্বাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদসহ বড় বড় শহরে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

উত্তর প্রদেশে গুলিতে ১৫ জনের মৃত্যুও হয়। বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।


আরো সংবাদ



premium cement