২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মহারাষ্ট্রের মহানাটকের সমাপ্তি

ভারতের মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ফডনবিসের পদত্যাগে রাজনৈতিক মহানাটকের সমাপ্তি ঘটে - গ্রাফিক্স : আনন্দবাজার পত্রিকা

জল্পনাই সত্যি হলো। শেষ পর্যন্ত পদত্যাগই করলেন দেবেন্দ্র ফডনবিস। আস্থা ভোটের আগেই ভারতের মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেন তিনি।

সুপ্রিম কোর্ট আগামীকাল আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার নির্দেশ দেয়ার পরেই সংখ্যা জোগাড়ে তৎপর হয়ে ওঠে বিজেপি শিবির।

কিন্তু যে অজিত পওয়ারের কাঁধে ভর দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নিয়েছিলেন ফডনবিস, সেই অজিতই উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের পর বিজেপির কাছে কার্যত সংখ্যা জোগাড় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সে কারণেই তার এ পদত্যাগ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সংবাদ সম্মেলনে সে কথাই জানিয়েছেন ফডনবিস।

আজ সকালের দিকেই ফডনবিসের বাড়িতে বৈঠকে বসে দলের কোর কমিটি। তার মধ্যে আবার ফডনবিসের সাথে দেখা করে আসেন অজিত পওয়ারও।

মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, বুধবার বিধানসভায় আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে ফডনবিস সরকারকে। অতি দ্রুত প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ করে আস্থাভোট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার নির্দেশও দেয় শীর্ষ আদালত। শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশ প্রোটেম স্পিকারই বিধায়কদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন এবং তিনিই আস্থা ভোট পরিচালনা করবেন।

শীর্ষ আদালতের এ রায়ের পরেই বিজেপি শিবিরে শুরু হয় চূড়ান্ত তৎপরতা। তড়িঘড়ি নিজের বাড়িতে দলের কোর কমিটির বৈঠক ডাকেন ফডনবিস। অন্যদিকে দিল্লিতে বৈঠকে বসেন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ। সেখানেও পরবর্তী রণকৌশল স্থির হয়। কিন্তু তার মধ্যেই উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন অজিত পওয়ার। তার পরে ফডনবিস সংবাদ সম্মেলনের কথা ঘোষণা করেন।

মোদি-অমিতের বৈঠক থেকেই ফডনবিসকে পদত্যাগের নির্দেশ
নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহর জরুরি বৈঠকের পরই তড়িঘড়ি বার্তা যায় মহারাষ্ট্রে। মোদি-অমিতের নির্দেশেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন দেবেন্দ্র ফডনবিস। উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের আচমকা পদত্যাগের পর এ চমক দেন তিনি।

নয়াদিল্লিতে ওই বৈঠকে ছিলেন বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জে পি নাড্ডাও।

বুধবার আস্থাভোটে শুধুমাত্র দেবেন্দ্র ফডনবিসে সরকারকেই পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হতো না। তা মোদি-অমিতের কাছেও সম্মানরক্ষার প্রশ্ন। কারণ, শনিবার সাতসকালে মহানাটকীয় চালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফডনবিস। এবং তার আগে ভোরেই তড়িঘড়ি যেভাবে রাজ্যের রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করানো হয়, তাতে মোদি-অমিত জুটিরই হাত দেখছেন অনেকে। ফলে এই আগামিকালের আস্থাভোট শুধুমাত্র বিজেপির রাজ্য রাজনীতির ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এমনটা নয়। তা ছিল কার্যত ওই জুটিরও মুখ বাঁচানোর লড়াই।

মঙ্গলবার সকালে আস্থাভোট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর থেকেই বেশ চাঙ্গা শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোট। তার উপর এ দিন দুপুরেই উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে বিজেপি শিবিরকে আরো চাপে ফেলে দেন এনসিপির অজিত পওয়ার। ফলে, ১৭০ বিধায়কের সমর্থনের যে দাবি বরাবর করে আসছিল বিজেপি শিবির, তাতে স্বাভাবিকভাবেই বড়সড় ধাক্কা লাগে।

এ দিন প্রথমে অজিত পওয়ার এবং পরে দেবেন্দ্র ফডনবিসের ইস্তফার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কী রণকৌশল নেবেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব? অথবা আস্থাভোটের ঠিক আগেই দেবেন্দ্র ফডনবিস পদত্যাগের পর কোন পথেই বা এগুতে হবে, তা নিয়েও ভাবনা-চিন্তা হয় মোদি-অমিতের বৈঠকে।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement