২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গরু নিয়ে যাওয়ায় ফের পিটিয়ে খুন মুসলিমকে

গরু নিয়ে যাওয়ায় ফের পিটিয়ে খুন মুসলিমকে - ছবি : সংগৃহীত

নেপথ্যে ফের সেই গরু। ফলাফল- যথারীতি সেই লিঞ্চিং। ভারতজুড়ে এই ধরনের ঘটনা কমার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। এবার ঘটনাটি ঘটেছে নীতীশ কুমারের রাজ্য বিহারে।

গরু নিয়ে যাওয়ার কারণে এক মুসলিম ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করা হয়। জানা গেছে, গরু পাচারের অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে ঘিরে ধরে পেটাতে শুরু করে এক দল দুষ্কূতিকারী। যার পরিণতি হয় মৃত্যু।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তিকে গরু নিয়ে যেতে দেখে ঘিরে ধরে কয়েকজন দুষ্কূতিকারী। তারা হুমকি দিয়ে বলে, ‘গরু পাচার করে নিয়ে যাচ্ছিস। পরিস্থিতি ভয়ংকর হবে। টাকা দে। না হলে ছাড় পাবি না।’ ওই ব্যক্তি টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে ধরে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে ওই দুষ্কূতিকারীরা।

জানা গেছে নিহতের নাম মুহাম্মদ জামাল। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার জামাল ও তার ভাই গরু নিয়ে যাচ্ছিলেন পাশের এক রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কাটিহারের লাভা ব্রিজের কাছে পৌঁছাতেই তাদের দু’জনকে ঘিরে ধরে দুষ্কূতীরা। দুষ্কূতিকারীদের মধ্যে একজনের নাম সাগর যাদব। সাগর ও তার দলবল জামাল ও তার ভাইয়ের থেকে মোটা টাকা দাবি করতে থাকে। কিন্তু, জামাল টাকা দিতে অস্বীকার করলে সেখানেই তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তার ভাই অবশ্য ঘটনাস্থল থেকে কোনোক্রমে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। মৃতের লাশ কাটিহার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ময়না তদন্তের জন্য।

পুলিশের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে, সাগরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কাটিহার সদরের সাব-ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার (এসডিপিও) অনিল কুমার জানান, সাগর যাদব ও তার সঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। জামাল পেশায় গরু ব্যবসায়ী। ভিন্ রাজ্যে গরু পৌঁছে দিতেন তিনি। সেইমতো মঙ্গলবারও তিনি প্রতিবেশী এক রাজ্যে পৌঁছে দেয়ার জন্য গরু নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেইসময়ই এই ঘটনা ঘটে যায়।

উল্লেখ্য, অন্যান্য ক্ষেত্রে সচরাচর যা হতে দেখা যায় না– এক্ষেত্রে অবশ্য তেমনটা হয়েছে। এর আগে একাধিক মর্মান্তিক ও নৃশংস লিঞ্চিংয়ের ঘটনা ঘটে গেলেও গেরুয়া শিবিরের কট্টর নেতা-সমর্থক ও গোরক্ষকদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতেন না। এক্ষেত্রে অবশ্য তেমনটা হয়নি। জামালের খুনের প্রতিবাদে শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। ৩১ নম্বর কাটিহার-গিরাবাড়ি জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। নিহতর পরিবারকে ২৫ লক্ষ রুপি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানাতে থাকেন। একইসঙ্গে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে সরব হন। প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিন ঘণ্টা পর অবরোধ উঠে যায়।
সূত্র : পূবের কলম


আরো সংবাদ



premium cement