১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সম্পর্কোন্নয়নে পাকিস্তানের কূটনীতিকরা কাবুলে

- সংগৃহীত

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব সোহেল মাহমুদ ও আন্তঃবাহিনী গোয়েন্দা সংস্থার (আইএসআই) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদ গত সোমবার কাবুল সফর করেছেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে সম্প্রতি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে এমন কিছু ঘটনা নিয়ে আফগান কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার জন্য তারা এ সফর করেন।

মাহমুদ ও জেনারেল হামিদ আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মুহিবের সাথে কাবুলে সাক্ষাৎ করেছেন। আফগান জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র কবির হকমল সাংবাদিকদের কাবুলের বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং বলেছেন, উভয়পক্ষ সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে।

সূত্রের মতে, আলোচনার এজেন্ডায় পেশোয়ারের আফগান বাজার নিয়ে বিরোধ, সীমান্তে গুলি চালানোর ঘটনা এবং কূটনীতিকদের হয়রানির পারস্পরিক অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত ছিল। সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে বিরোধের ধারাবাহিকতায় গত মাসে পেশোয়ারের বাজারে পুলিশ অভিযানের বিষয়ে আফগান সরকার প্রতিবাদ জানিয়েছিল। ওই ঘটনার পর কাবুল পেশোয়ারে তার দূতাবাসও বন্ধ করে দিয়েছিল।

পাকিস্তান সরকার দাবি করে আসছে যে বাজার নিয়ে বিতর্কটি বেসরকারি নাগরিক এবং আফগান ব্যাংকের মধ্যে ছিল এবং ১৯৯৮ সালে একটি আদালত এই বিষয়ে বেসরকারি নাগরিকদের পক্ষে মামলা পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, আফগান ব্যাংক সব আইনি প্রতিকার সম্পন্ন করার পর অধিগ্রহণের ব্যবস্থা নিয়েছিল। কবির হকমল বলেন, কাবুলে তাদের আলোচনায় উভয় পক্ষই বাজারের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সম্প্রতি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি সীমান্ত চৌকি নির্মাণ বন্ধে আফগান পক্ষ শক্তি প্রয়োগের পর পাকিস্তান ও আফগান সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষ কয়েক দিন অব্যাহত ছিল এবং সে সময় আফগান বাহিনী চিতরাল সীমান্তের পাকিস্তান অংশের বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে হামলা চালালে সেনাসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনার পর উভয় পক্ষই একে অপরকে তাদের কূটনীতিকদের হয়রানির জন্য অভিযুক্ত করে।

এদিকে বন্দী বিনিময় চুক্তি আওতায় গুরুত্বপূর্ণ দুই তালেবান নেতাসহ তিনজনকে মুক্তি দেয়া হবে বলে গতকাল মঙ্গলবার আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ঘোষণা দিয়েছেন। ২০১৬ সালে অপহরণের শিকার একজন আমেরিকান ও একজন অস্ট্রেলিয়ান অধ্যাপককে মুক্তি দেয়ার বিনিময়ে দু’জন শীর্ষ তালেবান কমান্ডার ও হাক্কানি মিলিশিয়া গোষ্ঠীর এক নেতাকে মুক্তি দেয়া হবে।

জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে আশরাফ গনি বলেছেন, কাবুলের আফগানিস্তান আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিদেশী অধ্যাপককে মুক্তি দেয়ার বিনিময়ে সরকার আনাস হাক্কানিকে মুক্তি দেবে। গনি বলেন, ‘আমরা আনাস হাক্কানি ও তালেবান কমান্ডার হাজী মালি খান ও হাফিজ রশিদকে বাগরাম কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনজনই ২০১৪ সালে ধরা পড়েছিলেন। তাদের কাতারে তালেবান রাজনৈতিক কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হবে বলে সূত্র আনাদোলু এজেন্সিকে জানিয়েছে।

আনাস হাক্কানি হলেন হাক্কানি নেটওয়ার্কের সোভিয়েত বিরোধী নেতা জালালউদ্দিন হাক্কানির ছেলে, যিনি ২০১৮ সালে মারা যান। এই বন্দী বিনিময় এমন এক সময় হতে যাচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরুর চেষ্টা চলছে।

হাক্কানি নেটওয়ার্ক সা¤প্রতিক বছরগুলোতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ব্যাপক আকারে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক একটি সংগঠন এবং আফগানিস্তানের তালেবানের অংশ বলে মনে করা হয়। তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক কেভিন কিং এবং অস্ট্রেলিয়ার টিমোথি উইকসকে, দুইজনই অধ্যাপক, ২০১৬ সালের আগস্টে কাবুলে অবস্থিত আফগানিস্তান আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপহরণ করেছিল। সূত্র : দ্য ডন।


আরো সংবাদ



premium cement