২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যে কারণে কমে গেল মমতার আসন

মমতা ব্যানার্জি - সংগৃহীত

বিজেপির উত্থান ও তৃণমুলের আসন কমে যাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছেন মমতা ব্যানার্জি। মুসলমানরাও সমালোচনা করছেন মমতার। এখানে কিছু সমালোচনা তুলে ধরা হলো :
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ‍্যমন্ত্রী যে সংখ‍্যালঘুদের নিয়ে সস্তার রাজনীতি করেছেন, ধর্মীয় ভাবাবেগকে সুড়সুড়ি দিয়ে সমর্থন আদায় করেছেন, এটা সর্বজনবিদিত। শিক্ষা-কাজের সুযোগ-রোজগার বা জীবনযাত্রার মানের নিরিখে সংখ্যালঘুরা সেই তিমিরেই রয়েছেন। সাচার কমিটির রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সংখ্যালঘুদের যে পশ্চাদপদতার করুণ চিত্র তুলে ধরা হয়েছিল, তার কোন পরিবর্তন আসেনি তৃনমূল জামানায়। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ঝান্ডা বহন করতো এখনও করছে। এবারের গণতন্ত্রের উৎসবের বলি মাত্র একটা, সেও ঝান্ডাবাহী সংখ্যালঘু। শুধু তাই নয় তৃণমূল আমলে সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক শ্রেণীর মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। স্কুলের মতো রাজ‍্যের সরকারি মাদ্রাসাগুলোও শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে। আদালতেও সরকারের ভুমিকায় দ্বিচারিতা স্পষ্ট। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরও দশ হাজারেরর বেশি শূন্য পদে মাত্র ১৯০০ নিয়োগ দেয়ার পর মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে রেখে দেয়া হয়েছে।

ক্ষমতা দখল করার স্বার্থে তিনি ধর্মের অপব‍্যবহারই করেছেন। তারপর সস্তার রাজনীতি করতে গিয়ে এমনকিছু ঘোষণা এমনভাবে করেছেন যাতে সংখ্যালঘু ও সংখ‍্যাগুরু সম্প্রদায়ের মধ্যে তৈরি হয়েছে স্পষ্ট বিভাজন; যেমন ইমাম ভাতাসহ অন‍্যান‍্য। ইমাম ভাতার ঘোষণা পদ্ধতিতে ইমামদের কতটা লাভ হয়েছে জানা নেই তবে অবশ্যই ক্ষতি হয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির। কারণ ইমাম ভাতা , মাইনোরিটি স্কলারশিপ ইত‍্যাদি ইত‍্যাদি তিনি এমনভাবে ঘোষণা করেছেন যাতে সাধারণভাবে মনে হয়েছে সেগুলো তিনি রাজকোষ থেকে দিচ্ছেন। অথচ সেগুলো দেয়া হয়েছে মুসলিমদের নিজস্ব ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে।
তার এই সংখ‍্যালঘু তোষণের নাটকে সাধারণ সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষের মনে এই সরকারের প্রতি তৈরি হয় একরাশ ঘৃণা, বেড়ে যায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দূরত্ব।

এছাড়াও গণতন্ত্রহীনতা, ভোট দিতে না দেয়া, শিক্ষার মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়া, বেকারদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলা- সব কিছু মিলিয়েই বিজেপির এই উত্থান। লোকসভার পর ধরে নেয়ায় যায় রাজ‍্যে বিজেপি আসছে। এতে কোনো দ্বিমত নেই। তাদেরও সুযোগ প্রাপ‍্য। একদিক দিয়ে ভালোই হলো। অসাম্প্রদায়িক পরিচয়ের বিভিন্ন সুপ্ত সাম্প্রদায়িক দলগুলো ছাড়াও বিজেপিকে চাক্ষুষ করার একটা সুযোগ পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পেয়ে গেল। কিন্তু রাস্তাঘাট, সোশ‍্যাল মিডিয়ায় শিক্ষিত যুবকদের মধ‍্যেও এক ভয়ানক সংখ‍্যালঘু বিদ্বেষ অত‍্যন্ত প্রকটভাবে দেখা যাচ্ছে। এর সমাধান কিভাবে হবে? এই বিদ্বেষের আগুন থেকে মুসলমান পশ্চিমবঙ্গ সর্বোপরি ভারত বাঁচবে এমন প্রশ্ন মুসলমানরা করছেন।

অবশ্য ভোট বিশ্লেষণে দেখা যায়, মমতার ভোট ২০১৪ সালের তুলনায় কমেনি, বরং বেড়েছে। তবে বাম ফ্রন্টের যে ভোট ছিল, তা মমতার দিকে না গিয়ে গেছে বিজেপির দিকে। এখানেই সাফল্য পেয়ে গেছে বিজেপি।


আরো সংবাদ



premium cement