২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

উত্তরপ্রদেশ যার, ভারত তার

মায়াবতী, নরেন্দ্র মোদি ও অখিলেশ যাদব - ছবি : সংগৃহীত

ভারতের লোকসভায় দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন উত্তর প্রদেশ রাজ্যের। দেশটির রাজনীতিতে তাই একটি কথা প্রচলিত আছে ‘উত্তরপ্রদেশ যার, দেশ তার’। এমনও বলা হয় উত্তরপ্রদেশের দখল নিতে পারলেই মসৃণ হয় প্রধানমন্ত্রিত্বের পথ। ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে সব থেকে বেশি সংখ্যক প্রধানমন্ত্রী উপহার দিয়েছে এই রাজ্যই। নেহরু থেকে চন্দ্রশেখর, ইন্দিরা থেকে রাজীব গান্ধী— সংখ্যাটা একেবারে কম নয়।

২০১৪ লোকসভাতেও উত্তরপ্রদেশে ব্যাপক জয় পেয়েছিলৈন মোদী-শাহ জুটি। উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব হাতে নিয়ে এই রাজ্যে যে গেরুয়া ঝড় তুলেছিলেন অমিত শাহ, তাতেই সহজ হয়ে গিয়েছিল মোদীর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইটা। সেই নির্বাচনে ৮০টি আসনের লড়াইতে রাজ্যকে কার্যত বিরোধীশূন্য করে ৭৩টি আসন তুলে নিয়েছিলেন তারা।

এবারের নির্বাচনেও তাই বিশেষ নজর ছিল উত্তরপ্রদেশের দিকেই। ক্ষমতাসীন জোট এনডিএ, কংগ্রেস বা মায়াবতী-মুলায়ম সিং যাদব, উত্তরপ্রদেশের দখল নিতে তৎপরতা দেখিয়েছিল সব পক্ষই। বিরোধীরা চেয়েছে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও রামমন্দির তৈরি করতে না পারা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, গোরক্ষকদের তাণ্ডব ইত্যাদি ইস্যুকে সামনে এনে ভোটারদের মন জয় করা। কিন্তু কাজ হয়নি। ৮০টি আসরে মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫৪টিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।

উত্তরপ্রদেশের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী আর মুলায়ম চির শত্রুতা ভুলে সমাজবাদী পার্টি আর বহুজন সমাজ পার্টি এক জায়গায় এসেছিল। এই কাজে ভুমিকা রেখেছিলেন মুলায়মের ছেলে ও দলের বর্তমান প্রধান অখিলেশ যাদব। আরো কয়েকটি দলকে এক করে গড়েছেন মহাজোট। মহাজোটের লক্ষ্যই ছিল যাদব-দলিত-মুসলিম-জাঠ ভোটব্যাঙ্ককে একাট্টা করা।

অন্য দিকে থেমে ছিল না কংগ্রেসও। মহাজোটে না নেওয়ায় ‘একলা চল’ নীতিতেই উত্তরপ্রদেশের রাস্তায় নেমেছিল তারা। যদিও কিছু আসনে প্রার্থী না দিয়ে, কোথাও শেষ মুহূর্তে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে মহাজোটের সুবিধা করে দিতে চেয়েচিল তারা। রাহুল নিজেও সে কথা বলেছেন। একই সঙ্গে শেষ মুহূর্তে তারা চমক দিয়েছিল প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে সরাসরি রাজনীতির ময়দানে নামিয়ে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক করার পাশাপাশি তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পূর্ব উত্তরপ্রদেশের। উত্তরপ্রদেশের মধ্যেই রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের গোরক্ষপুর বা খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বারাণসী এলাকা।

হিন্দুত্ববাদী বিজেপি রাজ্যটিতে তাদের নীতিতে অটল ছিলো। বিতর্কীত হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন স্থানে তথাকথিত গোরক্ষকদের সমর্থন দিয়েছে তারা। বাবরি মসজিদের জমিতে রামমন্দির নির্মার্ণের দাবিতেও অটল তারা। এগুলোই হয়তো রাজ্যটিতে তাদের আবারো বিজয়ী করতে চলেছে।


আরো সংবাদ



premium cement