২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভারতের নির্বাচনের ফলপ্রকাশ আজ : কে বসছেন দিল্লির মসনদে?

ভারতের নির্বাচনের ফলপ্রকাশ আজ : কে বসছেন দিল্লির মসনদে? - সংগৃহীত

ভারতে একটানা দ্বিতীয়বার সরকার গঠনের রেকর্ড গত ৩০ বছরের মধ্যে ডঃ মনমোহন সিংয়ের রয়েছে। সুতরাং নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতায় ফিরে আসা কোনো নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে না। বরং তার নেতৃত্বে বিজেপি আবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে লোকসভা ভোটে জয়ী হয়ে ফিরে আসছে কি না, আপাতত সেটাই কৌতূহলের শীর্ষে। এক্সিট পোলই কি প্রতিফলিত হবে প্রকৃত ফলাফলে? নাকি বিরাট কোনো চমক অপেক্ষা করছে? জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ লোকসভা ভোটের প্রকৃত ফলপ্রকাশ হবে। গোটা ভারতের আগ্রহ একটাই। মোদি ম্যাজিকে ভর করে এবারো কি বিজেপি একাই গরিষ্ঠতার সীমা পেরিয়ে যাবে? নাকি একক গরিষ্ঠতা অর্জন করা বিজেপির পক্ষে সম্ভব হবে না? সেক্ষেত্রে কি সরকার গঠনের জন্য বিজেপিকে নির্ভর করতে হবে এনডিএ শরিকদের উপর? নাকি এনডিএ জোটের দলগুলোকে দিয়েও ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছবে না বিজেপি? প্রয়োজন হবে আরো আঞ্চলিক দলের সমর্থন!

কিংবা এক্সিট পোলকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে কংগ্রেস তথা বিরোধীরাই উঠে আসবে সরকার গড়ার দাবিদার হয়ে? অথবা এসব জল্পনা কিছুই মিলবে না? আদতে হবে ত্রিশঙ্কু পার্লামেন্ট? ভোটপর্বে প্রতিটি ভারতবাসীর মধ্যে চর্চিত এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া যাবে আজ। ২০১৪ সালে বিজেপি ৩০ বছর পর একক গরিষ্ঠতা পেয়ে জয়ী হয়েছিল। একাই বিজেপি পেয়েছিল ২৮২টি আসন। যার পুরো কৃতিত্ব নরেন্দ্র মোদির। বিজেপি যেমন সর্বাধিক আসন লাভ করে গড়েছিল দলীয় ইতিহাস, ঠিক তেমনই স্বাধীনতার পর থেকে সর্বনিম্ন আসন পেয়েছিল কংগ্রেস। মাত্র ৪৪। আর এবার প্রচারপর্বে নরেন্দ্র মোদি তথা বিজেপির অন্যতম ইস্যু ছিল পুলওয়ামা, বালাকোট। এবং সেই সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা একমাত্র মোদির হাতেই সুরক্ষিত এই হা‌ই ঩ভোল্টেজ বার্তা।

পক্ষান্তরে কংগ্রেসের প্রচারের অভিমুখ ছিল রাফাল কেলেঙ্কারিতে মোদিকে টার্গেট করা ও কৃষি, কর্মসংস্থান নিয়ে মোদি সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরা। আজ জানা যাবে, সিংহভাগ ভোটার কার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। যদি বিজেপি আবার একক গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে তাহলে মোদি আরো ক্ষমতাবান হয়ে আবির্ভূত হবেন ভারতীয় রাজনীতিতে। আর যদি তাকে এনডিএ অথবা জোটের বাইরে থাকা কোনো আঞ্চলিক দলের কাছে সমর্থন চাইতে হয় সরকার গড়ার জন্য, তাহলে মোদির শক্তি ও ভাবমূর্তি অনেকটাই ধাক্কা খাবে। কারণ তখন জোটশরিকদের কন্ঠস্বর অনেক উচ্চকিত হয়ে যাবে এবং সকলকে তুষ্ট করে মোদিকে সরকার চালাতে হবে। আর বিজেপি তথা এনডিএ যদি দুর্বল হয় কিংবা সরকার গঠন করতে না পারে, তাহলে সবথেকে বেশি সমীকরণ বদল হবে বিজেপির অন্দরে। দলের মধ্যে থেকেই মোদি বিরোধী শক্তি মাথাচাড়া দেবে। কিন্তু একক শক্তিতে বিজেপি সরকার গড়লে মোদি হবেন বিজেপির সর্বকালের সফলতম নেতা।

অন্যদিকে, কংগ্রেস যদি ভালো ফল করতে না পারে, তাহলে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। দেরিতে হলেও কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এবারো রাহুল ব্যর্থ হলে কি প্রিয়াঙ্কাই হবেন নয়া কংগ্রেস সেনাপতি? নাকি সমস্ত জল্পনাকে উড়িয়ে রাহুলের কংগ্রেস ও বিরোধী দলগুলিই এবার চমকে দেয়া ভালো ফল করবে?

প্রকৃতপক্ষে ৫৪২ আসন নয়। এবার দেশের আগ্রহ আসলে ১২২ আসন ঘিরে। পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরপ্রদেশ। বিগত দু’মাস ধরে এই দুই রাজ্যই ঩ছিল মিডিয়া থেকে সাধারণ মানুষের চর্চার ভরকেন্দ্র। বস্তুত এই ১২২ আসনের হারজিতই বিজেপির ভাগ্য নির্ধারণ করবে। উত্তরপ্রদেশে জোট আর পশ্চিমবঙ্গে মমতা, এই দু‌ই ফ্যাক্টর বিজেপিকে টেনশনে রেখেছে। নিছক ভোটের লড়াই নয়, এই দুই রাজ্য নরেন্দ্র মোদির কাছে প্রেস্টিজের লড়াই। সপ্তদশ লোকসভায় সরকারের মুখ হয়ে আবার প্রবেশ করবেন সেই নরেন্দ্র মোদিই? নাকি নতুন কোনো প্রধানমন্ত্রী, উত্তর মিলবে আজই।


আরো সংবাদ



premium cement