২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সেই বিলকিস বানুকে ৫০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট, ইনসেটে বিলকিস বানু - ছবি : সংগৃহীত

গুজরাটে ২০০২ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় গণধর্ষণের শিকার বিলকিস বানুকে ৫০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তার হাতে এই অর্থ তুলে দিতে হবে। একই সাথে তাকে সরকারি চাকরি এবং বাসস্থানের ব্যবস্থাও করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে গুজরাট সরকারকে।

মার্চ মাসে মামলার শুনানি চলাকালে বিলকিস বানুকে ৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দিয়েছিল গুজরাট সরকার। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন বিলকিস। শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি দীপক গুপ্ত ও বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘দোষীদের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু চরম উন্মত্ততার সাক্ষী থাকা বিলকিসকে ছেড়ে দেয়া হয় রাস্তায়।’

আদালত আরো বলেছেন, ‘২১ বছরের বিলকিসকে শুধুমাত্র ২২ বার ধর্ষণই করা হয়নি, নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল তার তিন বছর দুই মাসের মেয়েকেও। তার পর থেকেই যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন বিলকিস। এখন তার ৪০ বছর বয়স। তার পরিবারের আর কেউ বেঁচে নেই। পড়াশোনাও তেমন জানেন না। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দয়ায় বেঁচে রয়েছেন।’ রাজ্যের বেশ কিছু পুলিশ অফিসার তদন্ত ভিন্ন পথে চালিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে এর আগে মুম্বাই হাইকোর্টে অভিযোগ করেছিলেন বিলকিস বানু। ২০০৮ সালে সেখানে ১১ জন দোষী সাব্যস্ত হলেও ওই পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

এ দিন বিলকিস বানুর আইনজীবী আদালতে জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে চারজন অবসর নিয়েছেন। পঞ্চমজন, আইপিএস অফিসার আরএস ভাগোরা অবসর নেয়ার পথে। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে গুজরাট সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ওই দাঙ্গার সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

 

আরো পড়ুন : ‘মুসলমানদের কাপড় খোলার জন্য এত উদগ্রীব কেন বিজেপি?’
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১১:১৯

ভারতের কেরালা রাজ্যের বিজেপি সভাপতি নেতা শ্রীধরন পিল্লাই মুসলমানদের চিহ্নিত করতে যে ন্যাক্কারজনক বক্তব্য রেখেছেন তার দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমীনের (এআইএমআইএম) সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়েইসি।

এক টুইটে ওয়েইসি বলেন, মানুষের লাশের ওপর পরীক্ষা চালাতে তারা খুবই অভিজ্ঞ। তাদের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার পূর্ণ হয়েছে ২০০২ সালে গুজরাটে। এছাড়া বিলকিস বানু, এহসান জাফরি, আখলাক, পেহলি খান, জুনায়েদ, শওকত আলীসহ বিজেপি সমালোচক আরো অসংখ্য মানুষের লাশের ওপর দিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হয়েছে।

তিনি আরো লিখেন, আপনি যদি কোনো মুসলমানের পরিচয় জানতে চান, তাহলে তাদের জিজ্ঞাসা করুন। কাপড় খোলার তো কোনো প্রয়োজন নেই। মুসলমানদের কাপড় খোলার জন্য তারা এত উদগ্রীব কেন?

এর আগে ভারতের কেরালা রাজ্যের বিজেপি সভাপতি পি এস শ্রীধরন পিল্লাই বলেছেন, কাপড় খুলে পরীক্ষা করে কেবল মুসলমান চিহ্নিত করা যেতে পারে। তার এই বিতর্কিত মন্তব্যে সেখানে সমালোচনার ঝড় বইছে।

ভারতের গণমাধ্যম দ্য নিউজ মিনিট-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কেরালার আট্টিনগালে বিজেপির স্থানীয় প্রার্থী শোভা সুরেন্দ্রের নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় শ্রীধরন এ কথা বলেন। সরকার বিরোধীরা বালাকোট হামলায় নিহতদের ব্যাপারে বিজেপির দেয়া তথ্যের যে সমালোচনা করেছে, তার জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বালাকোটে বিমান হামলার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের রাহুল গান্ধি, ইয়েচুরি এবং পিনারাইরা আমাদের সেনাদের অপমান করতে চায়। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ঘায়েল করে তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন, যদি এটা ইসলাম হয়, তাহলে তাদের আর কোনো চিহ্ন রয়েছে? যদি তাদের কাপড় খুলে ফেলা হয়, তাহলেই কেবল তাদের চেনা যেতে পারে।

তার এ বক্তব্য ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন বিজেপির এই নেতা। কিন্তু তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি এ ধরনের বক্তব্য দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দেন।

তার এ বক্তব্যে সেখানে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এলডিএফ ও কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ পক্ষ থেকে তার এ বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এদিকে সিপিআই নেতা ভি এস সিভাঙ্কুট্টি নির্বাচন কমিশনে এক অভিযোগ দায়ের করে বলেছেন, শ্রীধরন পিল্লাইয়ের এ বক্তব্য নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement