২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিজেপি প্রার্থীর উদ্ধত্য : ‘বাবরি ভেঙে বেশ করেছি’

সাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর - ছবি : সংগৃহীত

ভারতের চলমান লোকসভা নির্বাচনে হিন্দুত্ববাদ প্রমাণ করতে গিয়ে বারবার নির্বাচনী আচরণ ভাঙছেন বিজেপি প্রার্থীরা। এমনকি আচরণবিধি ভেঙে বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশন দুই দফা ভুপালের বিজেপি প্রার্থী সাধ্বীকে সতর্ক করেছে।

ভুপালের বিজেপি প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন, বাবরি মসজিদ ভেঙে বেশ করেছি। ওই ঘটনার জন্য তিনি রীতিমতো গর্ব বোধ করেন। তিনি বলেন, ‘বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়ার জন্য আমি গর্ব বোধ করি।’

লোকসভা নির্বাচনের দু’দফা হয়ে যাওয়ার পর নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি গর্বের সাথে বিষয়টি উল্লেখ করছেন।

টেলিভিশন চ্যানেল ‘আজতক’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাধ্বী বলেন, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভাঙার কাজে আরো অনেকের সঙ্গে আমিও সামিল হয়েছিলাম। তার জন্য আমি গর্ব বোধ করি। কারণ, ওই মসজিদ আমাদের দেশের একটি কলঙ্ক ছিল।’

টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে সাধ্বী আরো বলেন, বাবরি ধ্বংসের জন্য দুঃখ বোধ করব কেন? আমি তো রীতিমতো গর্ব বোধ করি। যে ক’জনে মিলে সে দিন বাবরি ভেঙেছিলাম, তাদের মধ্যে তো আমিও ছিলাম। রামমন্দিরে কিছু আগাছা ছিল। আমরা সে দিন সেটা হঠিয়ে দিয়েছিলাম।

তার এ মন্তব্যের জন্য মধ্যপ্রদেশের মুখ্য নির্বাচন অফিসার তাকে দ্বিতীয়বারের মতো নোটিশ দেন।

এ নিয়ে চার দিনের মধ্যে দুই দফা কথার বোমা ফাটালেন বিজেপি প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞা। এর আগেরবার তিনি মন্তব্য করেছিলেন মুম্বাই পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখার এক সময়ের প্রধান ‘অশোক চক্র’ বিজয়ী মৃত হেমন্ত করকরের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে তুলেছিলেন অত্যাচার ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ। এর প্রেক্ষিতে কমিশন তাকে প্রথম নোটিসটি ধরিয়েছিল।

এই সপ্তাহেই ভুপালে দলীয় কর্মীদের একটি সভায় সাধ্বী বলেন, ২০০৮ সালের বিস্ফোরণের ঘটনায় আমাকে কয়েদখানায় ঢোকানোর পর আমার উপর অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছিলেন হেমন্ত। আমার শ্লীলতাহানিও করেছিলেন। সে জন্য আমি তাকে অভিশাপ দিয়েছিলাম। সেই শাপেই ২৬/১১ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তাকে প্রাণ হারাতে হয়েছিল। বীরত্বের সঙ্গে ২৬/১১-র ঘটনার মোকাবিলার জন্য পরে ‘অশোক চক্র’ দিয়ে সম্মান জানানো হয়েছিল হেমন্ত করকরেকে।

 

আরো পড়ুন : আমাকে ভোট দিন, না হলে অভিশাপ দেবো : বিজেপি প্রার্থী
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ১১:১৪

ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচনের গণসংযোগ ও প্রচারণায় গিয়ে ভোট না দিলে ভোটারদের ‘অভিশাপ’ দেয়ার হুমকি দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী সাক্ষী মহারাজ। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার উত্তর প্রদেশের সোহরামউ থানা এলাকার শেষপুরে এক নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দেয়ার সময় ভোট না দিলে উপস্থিত ভোটারদের ‘অভিশাপ’ দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিজেপি প্রার্থী সাক্ষী মহারাজ।

এ বিষয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টির পর স্থানীয় নগর ম্যাজিস্ট্রেট রাকেশ কুমার গুপ্তা বলেন, বিজেপি প্রার্থী সাক্ষী মহারাজের মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তার বিরুদ্ধে সোহরামউ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বিজেপি সংসদ সদস্য ও দলীয় প্রার্থী সাক্ষী মহারাজ বলেন, আমি একজন সাধু। শাস্ত্রে লেখা আছে যে, কোনো সন্ন্যাসীর ইচ্ছাপূরণ না করলে, তিনি সব ভালো জিনিস নিয়ে চলে যান আর তার পরিবর্তে ‘পাপ’ দিয়ে যান। ফলে তাকে ভোট না দিলে উন্নাওয়ের ভোটারদের পাপিষ্ঠ হতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, আমি একজন সন্ন্যাসী, আপনারা আমাকে জেতালে আমি জিতব। তা না হলে মন্দিরে ভজন-কীর্তনে সময় কাটাব। কিন্তু আজ আমি এখানে এসেছি আপনাদের ভোট প্রার্থনা করতে। আমি আপনাদের দরজায় এসে ভোট ভিক্ষা করছি। কিন্তু সন্ন্যাসীকে আপনি ফিরিয়ে দিলে আপনার পরিবারের সুখ আমি ছিনিয়ে নেব এবং আপনাকে অভিশাপ দেবো।

সাক্ষী মহারাজের দাবি, তিনি যা বলেছেন তা শাস্ত্রে বলা হয়েছে। তিনি তার কথাকে ন্যায্য বলে অভিহিত করে বলেন, তিনি ধন-সম্পত্তি চাননি। লোকেদের কাছে ভোট চেয়েছেন মাত্র, যার ফলে দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তন হবে।

সাক্ষী মহারাজের অভিশাপ দেয়ার হুমকি সম্বলিত মন্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছে। তার বিরুদ্ধে নির্বাচনে অযৌক্তিক প্রভাব সৃষ্টির অভিযোগে ওই এলাকার থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সূত্র : পার্স টুডে।


আরো সংবাদ



premium cement