২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আত্মঘাতী হামলার জুজু পিছু ছাড়ছেই না ভারতের

পুলওয়ামা হামলায় বিধ্বস্ত গাড়ি এবং নিহতদের কফিনে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি - ছবি : সংগৃহীত

ভারতের জম্মু কাশ্মিরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা সামরিকবাহিনী সিআরপিএফ আত্মঘাতী হামলার মুখে পড়েছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি। এরপর দুই মাসের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও সেই আত্মঘাতী হামলার জুজু থেকে বের হতে পারে নি ভারত।

ভারতের গোয়েন্দা রিপোর্টে বারবার উল্লেখ করা হচ্ছে, আবারো পুলওয়ামার মতো হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। কখনো বলা হচ্ছে, তারা গাড়িভর্তি বিস্ফোরক নিয়ে আবারো সেনা গাড়িবহরে হামলা চালাবে। কখনো বলছে তারা একাকীই হামলা চালাবে। এবার নতুন করে তারা রিপোর্টে বলছে, বাইকে করে হামলা চালাবে সন্ত্রাসীরা।

তারা দাবি করেন, আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের যে পরিকল্পনা করছে সন্ত্রাসীরা, তাতে মোটরবাইক আরোহীদের কথা বলা হয়েছে৷ এরা প্রশিক্ষণ নিয়ে হামলা চালাতে পারে বলে দাবি করছেন গোয়েন্দারা।

এ দাবির পক্ষে তারা বলেন, পুলওয়ামা হামলার পরে গাড়ি চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো হয়েছে৷ পাশাপাশি, বাড়ানো হয়েছে জম্মু-কাশ্মিরজুড়ে গাড়িগুলোতে তল্লাশি চালানোর পরিমাণ। আর সে কারণেই এবার গাড়ি বাদ দিয়ে, মোটর বাইকে করে হামলা চালাতে সক্রিয় হচ্ছে স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলো।

গোয়েন্দাদের সর্বশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, শ্রীনগর ও কুপওয়ারাজুড়ে সক্রিয় হচ্ছে এ মোটরবাইক আরোহীরা। এদের ছদ্মনাম রাখা হচ্ছে মোগল বাদশাহদের নামে। দুপাশে ব্যাগ ঝুলিয়ে এই মোটরবাইকগুলো হামলা চালাবে, ব্যাগে থাকবে উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক, যাতে হামলার প্রতিক্রিয়া বেশি হয়। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, যেহেতু বাইক যে কোনো জায়গায় সহজেই ঢুকে পড়তে পারে, ফলে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে বাইকের ব্যবহারই করা হতে পারে।

পুলওয়ামা হামলার পর ভারতের সামরিকবাহিনী ওই রাজ্যে বেশ কিছু নতুন নিয়ম আরোপ করে। কোথাও কোথাও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ বা সীমিত করে দেয়া হয়। ওই রাজ্যের নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনেকেরই নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হয়।

এছাড়া গত দুই মাসে বেশ কিছু অভিযানে সফল হওয়ার কথাও দাবি করেছে ভারতের সামরিক, আধা-সামরিক বাহিনী। কিন্তু তারপরও স্বস্তিতে নেই তারা। সবসময় তাদেরকে আত্মঘাতী হামলার জুজু তাড়া করে ফিরছে।

 

আরো পড়ুন : পুলওয়ামা ঘটনাকে ‘জঙ্গি হামলা’ বলেনি পাকিস্তান : ক্ষুব্ধ ভারত
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৮ মার্চ ২০১৯, ১২:৪৪

কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলা নিয়ে নাশকতার ঘটনার ব্যাপারে ভারতের হাতে কিছু তথ্য দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পুলওয়ামার ঘটনা নিয়ে ভারতের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব তথ্য বা বিবৃতিতে পুলওয়ামার ঘটনাটিকে ‘ঘটনা’র বেশি কিছু বলেনি পাকিস্তান। ফলে এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ ভারতীয় পক্ষ।

ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পাকিস্তান বলেছে, ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারত পুলওয়ামা ঘটনার ব্যাপারে নথি তুলে দেয়ার পর পাকিস্তান এ ব্যাপারে বিস্তারিত সহযোগিতা করেছে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও শান্তি রক্ষায় হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে ভারতের কাছে আরো প্রমাণ চাওয়া হয়েছে যাতে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।

খবরে বলা হয়, পুলওয়ামার হামলার ঘটনায় ভারত পাকিস্তানকে কিছু তথ্যপ্রমাণ দেয়ার পর ইসলামাবাদ এ ব্যাপারে আরো কিছু তথ্যপ্রমাণ চেয়েছে। পাশাপাশি পাকিস্তানের ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’গুলোর যেসব ঘাঁটির ব্যাপারে ভারত প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে সে সব ব্যাপারেও দিল্লির কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব তেহমিনা জানজুয়া গত বুধবার ভারতের হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়াকে ডেকে পাঠান। এ সময় তারা পুলওয়ামার ঘটনায় নিয়ে ‘প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ’ আদানপ্রদান করেন। পরে জানজুয়া সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ভারতের থেকে আরো তথ্যপ্রমাণ চেয়েছি।’

ভারত এর আগে ফেব্রুয়ারির ২৭ তারিখ নয়াদিল্লিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত পাক হাইকমিশনারের হাতে কিছু তথ্য তুলে দিয়েছিল। পুলওয়ামা হামলার পরদিনই ইমরান খান বলেছিলেন, ভারতের থেকে ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ’ পেলে তদন্ত প্রক্রিয়ায় পাকিস্তান সহযোগিতা করবে।

এদিকে এ পর্যন্ত পাকিস্তান তার কোনো বিজ্ঞপ্তিতে বা প্রতিবেদনে পুলওয়ামার ওই ঘটনাকে কোনো কিছু দিয়ে বিশেষায়িত করেনি। বরং তারা এটিকে ‘ঘটনা’ বলেই উল্লেখ করে আসছে। ভারত এটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’, ‘জঙ্গি হামলা’ বলেই উল্লেখ করে আসছে। ভারতের দাবি পাকিস্তানও এগুলোকে সেভাবেই বিশেষায়িত করুক। কিন্তু ইসলামাবাদের কোনো বিবৃতিতেই সে রকম কিছু দেখা যায়নি।

ভারত এক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকভাবে অবশ্য কিছু জানায়নি। কিন্তু ভারতের গণমাধ্যমগুলো বিষয়টিকে বেশ গুরুত্বের সাথে দেখছে। এমনকি কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমে এটিকে ‘পাকিস্তানের বজ্জাতি’ বলেও উল্লেখ করছে। তারা দাবি করছে, পাকিস্তানকে কোনো ভাবেই এ ধরনের ঘটনা থামাবার উদ্যোগ নেবে না, এটি তারই প্রমাণ।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল