২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কাশ্মিরে বাবার কারণে আত্মঘাতী মেয়ে : কী লেখা ছিল চিরকুটে?

- ছবি : নয়া দিগন্ত

একজন মানুষ সবচেয়ে নিরাপত্তা বেশি নিরাপত্তা বোধ করে তার নিজ পরিবারে। সেখানেই থাকে তার সবচেয়ে প্রিয় মানুষেরা। কিন্তু সে জায়গাতেই যদি সে নির্যাতিত হয়, নিপীড়িত হয়, তাহলে হয়তো এ পৃথিবীতেই থাকার জায়গা থাকে না। গতকাল শনিবার এমনই এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপোরা জেলায়।
জানা গেছে, বান্দিপোরা জেলার চালিয়ান গ্রামে ২০ বছর বয়সী এক নারী শনিবার বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিজ পিতার নিকট কয়েক বছর ধরেই ধর্ষিত হচ্ছিল সে। তারপরই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সে। সে বিষ খাওয়ার পর তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আত্মঘাতী হওয়ার আগে অবশ্য এক চিঠিতে বাবার দ্বারা ধর্ষিত হওয়ার কথা লিখে গিয়েছেন তিনি। নিহত ওই নারীর বোন জানায়, তাদের পিতা তাকেও ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সে কোনোভাবে নিজেকে রক্ষা করে।
ঘটনা সামনে আসার পর ওই অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বান্দিপোরার এসপি রাহুল মালিক বলেছেন, ওই নারীর পরিবারের কাছে ঘটনার কথা জানার পর আমরা তদন্ত শুরু করি। মেয়েটির বাবাকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এফআইআর দায়ের হয়েছে। তদন্ত চলছে।
পুলিশ আরো জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তের পর আত্মঘাতী নারীর লাশ পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
টুইটারে এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা করেছেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। তিনি বলেছেন, একজন নারীকে বলা হয়, তার জন্য পরিবারই হচ্ছে সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। সেখানেও যদি সে এ পরিস্থিতির শিকার হয়, তাহলে তারা কোথায় যাবে?

 

আরো পড়ুন : কাশ্মিরে ২২ স্বাধীনতাকামী নেতাসহ ৯১৯ জনের নিরাপত্তা প্রত্যাহার
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ০৬ এপ্রিল ২০১৯, ১০:১৮

ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরের ৯১৯ জনের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গতকাল শুক্রবার ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়। এদের মধ্যে ২২ জন স্বাধীনতাকামী নেতার নামও রয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এনডিটিভি জানায়, ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় যে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়, তারপর থেকে এ ৯১৯ জনের নিরাপত্তা উঠিয়ে নেয় প্রশাসন। ভারত সরকারের দাবি, সন্ত্রাসের সাথে কোনো না কোনোভাবে এদের নাম জড়িয়ে আছে। তাই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

যেসব ব্যক্তির নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলে নেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে সৈয়দ শাহ গিলানি, সৈয়দ মোসভি, মৌলভী আব্বাস আনসারি, ইয়াসিন মালিক, সাহিদ উল ইসলাম, জাফর আকবর ভাট, নইম আহমেদ খান, মুক্তার আহমেদসহ ২২ জন স্বাধীনতাকামী নেতার নামও রয়েছে বলে জানায় রাজ্য পুলিশ ৷ এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করে তারা।

জানা গেছে, জম্মু-কাশ্মিরে রাজ্যপালের শাসন জারি করার পর থেকেই নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে কড়াকড়ি শুরু হয়। তখনই এ ৯১৯ জনের ওপর থেকে নিরাপত্তা সরানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়। এর আগে এই ৯১৯ জনের নিরাপত্তায় ২৭৬৮ জন পুলিশ সদস্য নিয়োজিত ছিল। তাদের নিরাপত্তায় ব্যবহৃত হতো ৩৮৯টি গাড়ি।

প্রশাসনের এ পদক্ষেপের পক্ষে জম্মু কাশ্মির পুলিশ জানায়, এসব ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দেয়ার থেকে গোটা রাজ্য জুড়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো মজবুত করা উচিত৷

এর আগে পুলওয়ামা হামলার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জম্মু-কাশ্মির প্রশাসনের কাছে নির্দেশ এসেছিল, থানায় দায়ের করা প্রতিটি মামলার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য খতিয়ে দেখতে হবে৷ সেই মামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের নিরাপত্তা দেয়া হবে না বলেই জানানো হয়৷

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় আধা-সামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৪৪ সদস্য নিহত হয়। এ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে জয়েশ-ই মোহাম্মদ। ভারত দাবি করে এর পেছনে সরাসরি পাকিস্তানের হাত রয়েছে।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভারত যদি এ ব্যাপারে নিরেট প্রমাণ দিতে পারে তাহলে তারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। ভারতের পক্ষ থেকে দুই দফায় যেসব প্রমাণ দেয়া হয়েছে, তাতে ওই হামলার সাথে পাকিস্তানের যোগসাজশের প্রমাণ পায়নি বলে দাবি করে ইসলামাবাদ।

ভারত প্রমাণ হিসেবে যেসব লিঙ্ক বা নাম্বার দিয়েছে, তার কোনোটিই ওই হামলার সাথে যুক্ত নয় বলে জানিয়েছে তারা। শেষ পর্যন্ত নয়াদিল্লির কাছে পুলওয়ামা হামলার ব্যাপারে আরো প্রমাণ চায় পাকিস্তান।

এর মধ্যেই ইস্যুটি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা শুরু হয়। এমনকি পুলওয়ামা হামলার ১২ দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে হামলা চালায়। পাকিস্তানও এর জবাবে পাল্টা হামলা চালায়।

ভারত আবারও হামলা চালাতে এলে পাকিস্তানের প্রতিরোধের মুখে ভারতের মিগ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয় এবং এর পাইলট অভিনন্দন বর্তমান আটক হন। পরে অবশ্য শান্তির বার্তা হিসেবে কোনো শর্তারোপ ছাড়াই ওই পাইলটের মুক্তি ঘোষণা করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।


আরো সংবাদ



premium cement