২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

সীমান্তে পাকিস্তানের জঙ্গিবিমান : জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্র চেয়েছে ভারতের বিমানবাহিনী

সীমান্তে জঙ্গিবিমান মোতায়েন করেছে পাকিস্তান - ছবি : সংগৃহীত


ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার পর এক মাসের বেশি সময় কেটে গেলেও দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা একবারে শেষ হয়ে যায়নি। বরং লড়াইয়ের জন্য সরকারের কাছে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্র চেয়েছে ভারতের বিমানবাহিনী। তারা বলছে, পাকিস্তান সীমান্তজুড়ে জঙ্গি বিমান মোতায়েন করেছে। তার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সরকারের কাছে অস্ত্র চাওয়া হয়েছে।

ভারতের বিমানবাহিনীর বরাত দিয়ে ইকোনমিক টাইমস দাবি করছে, পাকিস্তান তার সীমান্ত জুড়ে নিজেদের ঘাঁটিগুলোতে জঙ্গিবিমান এফ-১৬ মোতায়েন করছে। এ অবস্থায় যে কোনো পরিস্থিতির জন্য তারা তৈরি থাকতে চায়। আর সে জন্যই সরকারের কাছে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্র ক্রয়ের দাবি জানিয়েছে তারা।

সূত্র জানায়, পাকিস্তান তাদের এফ-১৬ বিমানের নতুন একটি স্কোয়াড্রন তৈরি করেছে, এর নাম দেয়া হয়েছে অ্যাগ্রেসর। পাকিস্তানের ২৯তম এ স্কোয়াড্রনে মোট ৮টি এফ-১৬ জঙ্গিবিমান রয়েছে। জরুরি মুহূর্তে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এটি তৈরি করা হয়েছে।

নতুন করে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্র ক্রয়ের আহ্বান সম্পর্কে ভারতের বিমানবাহিনী জানায়, তাদের হাতে আগে থেকেই মিসাইল রয়েছে। কিন্তু বিমান হামলা আরো বেশি সূক্ষ্ম করতে নতুন অস্ত্র ক্রয়ের আহ্বান জানানো হয়েছে। অবশ্য অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছে, ভারতের অনেক অস্ত্রেরই মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ফলে আসলে যুদ্ধ শুরু হলে বিপদেই পড়ে যাবে দেশটি।

ভারতের এ ধরনের উদ্বেগের ব্যাপারে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধের জন্য তারা এসব মোতায়েন করছে না। তবে ভারতের পক্ষ থেকে উস্কানিমূলক কোনো তৎপরতা পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে জবাব দিতেই তারা এসব জঙ্গিবিমান মোতায়েন করছে। আগে থেকেই এসব ঘাঁটিতে এফ-১৬ মডেলের যুদ্ধ বিমান ছিলই। এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাটি কিছু বাড়ানো হচ্ছে।

 

আরো পড়ুন : ভারতীয় সাবমেরিন প্রতিরোধ পাকিস্তানের
নয়া দিগন্ত ডেস্ক, ০৬ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

পাকিস্তানের নৌবাহিনী তাদের সমুদ্রসীমায় ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি সাবমেরিনের অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে। গত সোমবার রাতে ভারতীয় সাবমেরিনটি পাকিস্তানের সমুদ্রসীমায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের নৌবাহিনী। পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী এ দুই দেশের মধ্যে আকাশযুদ্ধের পর ভারতীয় নৌবাহিনীর এ ধরনের চেষ্টা নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০১৬ সালেও ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি সাবমেরিন পাকিস্তানি সমুদ্রসীমায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল। এ দিকে পাকিস্তান বিমানবাহিনী প্রধান মার্শাল মুজাহিদ আনোয়ার খান বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের সদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। খবর ডন নিউজ, দ্য নিউজ ও আলজাজিরার। 

গতকাল মঙ্গলবার পাকিস্তানি নৌবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশেষ দক্ষতা কাজে লাগিয়ে তারা ভারতীয় সাবমেরিনকে তাদের সমুদ্রসীমায় প্রবেশে বাধা দেয় এবং সেটিকে তারা হটিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, পাকিস্তান নৌবাহিনী আধুনিক প্রযুক্তি বহনকারী ভারতীয় সাবমেরিনকে শনাক্ত করেছে যা ভারতের নৌবাহিনীর জন্য ক্ষতিকর। পাকিস্তান সরকারের শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপের কথা মাথায় রেখে তারা ভারতীয় ওই সাবমেরিনকে টার্গেট করেনি। এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতের শান্তির পথে এগিয়ে আসা উচিত বলেও পাকিস্তানি নৌবাহিনীর বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

নৌবাহিনীর ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান নৌবাহিনী তাদের আঞ্চলিক জলসীমা রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে এবং যেকোনো ধরনের আগ্রাসনের কঠোর জবাব দিতে তারা সম্পূর্ণ সক্ষম।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মিরের পুলওয়ামায় দেশটির কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনীর (সিআরপিএফ) গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জন নিহত হয়। এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানশাসিত আজাদ কাশ্মিরে বিমান হামলা চালায় ভারত। এর পর দিন দুই দেশের আকাশসীমায় পাল্টাপাল্টি যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে। পাকিস্তান ভারতীয় দু’টি জঙ্গিবিমান ভূপাতিত এবং একজন পাইলটকে আটক করে। অন্যদিকে ভারতও দাবি করে তারা পাকিস্তানের একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। 

চ্যালেঞ্জ এখনো শেষ হয়নি : বিমানবাহিনী প্রধান
ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান বিমানবাহিনীর প্রধান মার্শাল মুজাহিদ আনোয়ার খান। তিনি বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের সদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। গত সোমবার বাহিনীর একটি ফরোয়ার্ড অপারেটিং ঘাঁটিতে গিয়ে কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার এ নির্দেশ দেন। 

গত সপ্তাহে ভারতীয় দুটি জঙ্গিবিমান ভূপাতিত করার কথা উল্লেখ করে বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, আমাদেরকে জাতির আশা পূরণের শক্তি দেয়ায় মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে মাথানত করছি আর তার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কেননা সফলভাবে জাতিকে রক্ষার সামর্থ্য তিনি আমাদেরকে দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, পুরো দেশ পাকিস্তান বিমানবাহিনীকে নিয়ে গর্ব করে। সম্প্রতি আমাদের শত্রুরা দেশের সার্বভৌমত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করার যে প্রয়াস চালায় আমরা অদম্য সাহসিকতার সাথে তা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। তবে সে চ্যালেঞ্জ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। যেকোনো সময় যদি দেশে আবার হামলা হয় তার জন্য আমাদের সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

পাকিস্তানের হুঁশিয়ারির পর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে পিছু হটে ভারত : পাক-ভারত উত্তেজনার সময় ইসরাইলের সহায়তায় পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিকল্পনা করেছিল ভারত। তবে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এ পরিকল্পনার কথা সঠিক সময়ে জেনে যাওয়ার পর ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে যথাযথ জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বার্তা পাঠায়। ফলে বিপজ্জনক পথে পা বাড়ানো থেকে ভারত বিরত থাকে। মঙ্গলবার পাকিস্তান সরকারের উচ্চপর্যায়ের সূত্রের বরাত দিয়ে ডনের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে বলছে, ভারতের রাজস্থানের বিমানঘাঁটি থেকে পাকিস্তানের ভেতরে অন্তত ছয়-সাতটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিকল্পনা করেছিল ভারত। তবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ায় ভারতের এ পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে যায়।

পাকিস্তানের সরকারি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান ভারতের এ পরিকল্পনার ব্যাপারে ঠিক সময়েই জানতে পারে এবং দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে সতর্ক করে দেয় যে, এ ধরনের যেকোনো হামলার যথাযথ প্রতিশোধ নেয়ার জন্য পাকিস্তান প্রস্তুত রয়েছে। পাকিস্তানি গোয়েন্দারা সময় ভারতকে জানান, ভারত যে হামলা চালাবে তার তিনগুণ বেশি হামলা চালাবে পাকিস্তান। এরপর ভারত পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিকল্পনা থেকে সরে আসে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল