২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পাকিস্তানের প্রস্তাব মানবে কী ভারত?

কাশ্মির
ইমরান খান ও নরেন্দ্র মোদি - ছবি: সংগৃহীত

ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলাওয়ামার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত বিপজ্জনক চেহারা নিয়েছে।

মঙ্গলবার পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতীয় বিমান হামলার জেরে গতকাল বুধবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত একটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয় বলে পাকিস্তান দাবি করেছে।

ভারতীয় বিমানবাহিনীর একজন পাইলট এখন পাকিস্তানীদের জিম্মায়, যা নিয়ে ভারতে জনমনে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সংঘর্ষ বাদ দিয়ে মীমাংসায় বসার জন্য ভারতের প্রতি নতুন করে আহ্বান জানিয়েছেন।

ভারত সাড়া দিবে ইমরানের প্রস্তাবে?
ইমরান খানের আলোচনার জন্য যে প্রস্তাব তুলেছেন তাতে ভারতের সায় দেওয়ার সম্ভাবনা কতটা রয়েছে - জানতে চাইলে অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, ভারতের প্রত্যক্ষভাবে এখনই এই মুহূর্তে সায় দেয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও শেষপর্যন্ত এটা আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই সমাপ্তি টানতে হবে।

কারণ দুপক্ষের কারো জন্যেই এই যুদ্ধ ইতিবাচক নয়। তার ওপর গোটা দক্ষিণ এশিয়া-জুড়ে ভারত ও পাকিস্তানের ভেতরেও যুদ্ধের বিরুদ্ধে যে মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে তাতে কোনো পক্ষ খুব বেশি অগ্রসর হতে পারবে না, বলছেন মি. রিয়াজ।

‘এর চেয়েও বড় বাস্তব বিষয় হলো ভারতের যে পাইলট পাকিস্তানে ইতোমধ্যে আটক আছে তাকে ছাড়াবার ব্যবস্থা করতে হলে আলোচনার পথ খুঁজতে হবে তাদের। সে আলাপ আলোচনা কিভাবে হবে - সেটা আমরা জানি না।’

শুধু পাকিস্তানের প্রস্তাবের কারণে না, বাস্তব পরিস্থিতির কারণেই আলাপ-আলোচনার পথ খুঁজে বের করে এর সমাধান করতে হবে বলে তিনি মনে করছেন।

ইমরানের সতর্কবাণী কতটা গ্রহণযোগ্য?
এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি তার বা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে মি. খান সতর্ক করেছেন।

পরিস্থিতি যে কোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে -পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এই সাবধান বাণী কতটা গ্রহণযোগ্য?

এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতির অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ মনে করেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যে হুঁশিয়ারির কথা বলেছেন সেটা এক অর্থে গুরুত্ব দয়েই বিবেচনা করতে হবে।

‘কারণ এই যুদ্ধাবস্থার যে প্রধান নির্ণায়ক সেটা রাজনৈতিক, দুপক্ষেই রাজনীতিটা প্রধান।’

আলী রিয়াজের মতে, ‘বিষয়টির একটি দিক হলো- ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি - সেখানে একধরনের রাজনীতিকরণ হচ্ছে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতৃত্বে।’

‘সামনে নির্বাচন - সমস্ত পরিস্থিতি মিলে তাদের মধ্যে উগ্র জাতীয়তাবাদী চিন্তা। সেটার কারণে পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকে সেটা নিয়ে ইমরান খানের আশঙ্কা ঠিক উড়িয়ে দেয়া যায় না,’ বলেন মি. রিয়াজ।

‘বিপরীত দিকে পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও একধরনের রাজনৈতিক বিবেচনা আছে। ইমরান খান যেহেতু নতুন প্রধানমন্ত্রী, নতুন এই অর্থে যে পাকিস্তানে অতীতে যেসমস্ত দল ক্ষমতায় ছিল তাদের প্রতিনিধিত্ব তিনি করেন না।’

‘অভিযোগ বা ধারণা রয়েছে যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে তার একধরনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। সুতরাং তার পক্ষে আসলে সেনাবাহিনীর যে চাপ - এক ধরনের অবস্থান বজায় রাখার, সে কারণেও হয়তো ইমরান খান এ সমস্ত কথা বলছেন,’- বিশ্লেষণ অধ্যাপক রিয়াজের।

উল্লেখ্য, পুলাওয়ামায় এক হামলায় ভারতের অন্তত ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানভিত্তিক বিদ্রোহী গ্রুপ জইশ-ই-মোহাম্মদ এর দায় স্বীকার করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement