২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পাকিস্তান থেকে কেন সরাসরি ভারত গেলেন না সৌদি যুবরাজ?

যুবরাজের সাথে মোদি - সংগৃহীত

ভারতে না গিয়ে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। পাকিস্তান সফর শেষে দিল্লিতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু ‘শেষ মুহূর্তে সরাসরি পাকিস্তান থেকে দিল্লি সফর না করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, কাশ্মির ইস্যু এবং সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে আরো ভালোভাবে উপলব্ধি করতে চায় রিয়াদ। এই ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরেই দ্বন্দ্ব রয়ে গেছে। তারপর মঙ্গলবার রাতেই তিনি ভারতে  পৌঁছানো। 

ধারণা করা হচ্ছে, কাশ্মির ইস্যুতে ভারতীয়দের সংবেদনশীলতা উপলব্ধি এবং দিল্লির কৌশলগত তাৎপর্য অনুধাবন করেই তিনি সরাসরি পাকিস্তান থেকে দিল্লি সফর বাতিল করে দেশে ফিরে গেছেন। তবে তার দেশে ফিরে যাওয়া সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে কিছু জানানো হয়নি।

বুধবার ভারতের সাথে তার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এরপর সেখান থেকে যুবরাজের চীনে সফর করার কথা। চীন সফরের মাধ্যমেই তার এশিয়া সফর শেষ হবে। বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ ও আবাসন খাতে দিল্লি এবং রিয়াদের মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। কাশ্মির ইস্যুতে পাকিস্তানকে একঘরে করার প্রচেষ্টার মধ্যেই সৌদি প্রিন্সের পাকিস্তান সফরকে বিপত্তি হিসেবে দেখছে না ভারত। কারণ তার এই সফরের পরিকল্পনা কাশ্মিরের পুলওয়ামার হামলার আগেই করা হয়েছিল।

ভারতীয় একটি সূত্র বলছে, গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাবাসন থেকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত এবং সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক আমূল পরিবর্তন হয়েছে। তাই সব দিক থেকে ভারতের নয় বরং পাকিস্তানেরই চিন্তিত হওয়ার কারণ রয়েছে।

সূত্র : ইকনোমিক এক্সপ্রেস

পাক-ভারত উত্তেজনা কমাতে কাজ করতে চায় সৌদি আরব
বিবিসি 

গত সপ্তাহে কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় ভারতীয় আধা-সামরিক পুলিশের ৪৪ জওয়ান নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রতিবেশী পাকিস্তানের সাথে ভারতের সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতি প্রশমনে সৌদি আরব কাজ করতে চায় বলে জানিয়েছে রিয়াদ। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দিল্লি সফরের আগে এ ঘোষণা দিল দেশটি।
দক্ষিণ এশিয়া ও চীন সফরে যুবরাজ মোহাম্মদ এখন দক্ষিণ এশিয়া সফর করছেন। ইতোমধ্যেই পাকিস্তান সফল সফর শেষ করেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার তিনি দিল্লি গেছেন। সোমবার সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবের বলেছেন তাদের উদ্দেশ্য হলো, দুই দেশ, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমন এবং তাদের মধ্যে বিদ্যমান মতপার্থক্য শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের কোনো পথ খুঁজে পাওয়া যায় কি না তা দেখা।

গত সপ্তাহে ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় দেশটির আধা-সামরিক পুলিশের ৪৪ জওয়ান নিহত হওয়ার পর দিলি-ইসলামাবাদের মধ্যে বৈরিতা নতুন করে বেড়ে গেছে। পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করে। তবে এই হামলার ব্যাপারে হাত থাকার ভারতের অভিযোগ পাকিস্তান প্রত্যাখান করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় প্রতিবেশী পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে ‘একঘরে’ করার ঘোষণা দিয়েছে নয়াদিল্লি। পাকিস্তানকে দেয়া ‘সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের’ মর্যাদা প্রত্যাহার করে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত।

ভারত-পাকিস্তান উভয়েই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মিরের পুরো ভূখণ্ডের মালিকানা দাবি করে আসছে কিন্তু এর একটি অংশই শুধু নিয়ন্ত্রণ করছে। ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই কাশ্মির নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। কাশ্মিরি জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুয়ায়ী গণভোটের মাধ্যমে পাকিস্তান বা ভারতের সাথে যোগ দেয়ার আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার দাবি করে আসছে। কিন্তু ভারত এই প্রস্তাব মানতে নারাজ।


আরো সংবাদ



premium cement