২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কাশ্মিরে আবারো ব্যাপক সংঘর্ষে মেজরসহ ৫ ভারতীয় নিহত

পুলওয়ামায় সিআরপিএফের গাড়িবহরে হামলা - ছবি : সংগৃহীত

ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় বিদ্রোহীদের সাথে সংঘর্ষে এক মেজরসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে একজন বেসামরিক লোক রয়েছে।


গত রোববার রাতে বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে অভিযান চালায় সিআরপিএফ সদস্যরা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পিঙ্গলান এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়েছিল। রাতভর সন্ত্রাসীদের সাথে তাদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এতে একজন মেজরসহ সিরআপিএফের চারজন সদস্য নিহত হয়। এছাড়া দুই পক্ষের গোলাগুলিতে একজন বেসামরিক লোকও নিহত হয়। তবে বিদ্রোহীদের কাউকে আটক বা হতাহত করার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।


এনডিটিভি জানায়, গোপন সূত্রে খবর পাওয়ার পর সিআরপিএফের জওয়ানরা ওই এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি চালাতে শুরু করে। এ সময় উভয় পক্ষ থেকেই গোলাগুলি চলতে থাকে। মাঝরাত পর্যন্ত এ গোলাগুলি চলে। এতে পাঁচজন নিহত হওয়া ছাড়াও সিআরপিএফের বেশ কিছু জওয়ান আটক হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীদের আটক করতে ব্যর্থ হয় তারা।


পরে পুরো এলাকা ঘিরে রাখে নিরাপত্তাবাহিনী। এ দুই সন্ত্রাসী পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ওই এলাকায় আরো স্বাধীনতাকামী আত্মগোপন করে আছে বলে ধারণা করছে ভারত কর্তৃপক্ষ।


গত বৃহস্পতিবার যেখানে আত্মঘাতী হামলা হয়েছিল তার ছয় থেকে আট কিলোমিটারের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। সেদিন পুলওয়ামায় ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলায় সিআরপিএফ-এর কমপক্ষে ৪৪ সদস্য নিহত হয়েছিল। আহত হয়েছিল আরো ৮৫ জন জওয়ান। সন্ত্রাসী দল জয়েশ-ই-মোহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে।


এরপর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাকিস্তানকে একঘরে করার প্রচেষ্টা চালানো হয় ভারতের পক্ষ থেকে। কিন্তু চীনের পদক্ষেপে তা ভণ্ডুল হয়ে যায়। এতে ব্যর্থ হয়ে ভারত কাশ্মীরের মুসলিম নেতাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উঠিয়ে নেয়। অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে চাপে ফেলতে ভারতের সরকার পাকিস্তান থেকে আমদানি করা সমস্ত পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি করার ঘোষণা দেয়। এছাড়া পাকিস্তানকে এমএফএন-এর সুবিধা থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।


ওই ঘটনার জেরে জন্মু ও কাশ্মিরে চতুর্থদিনের মতো আজো কারফিউ অব্যহত রয়েছে। সেখানে সহিংসতা বা সংঘাতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে সেখানে উত্তেজনার ভাব বিরাজ করছে।


এদিকে ভারতের কনফেডারেশন অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (সিএআইটি) সোমবার ভারতজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রেখেছে। পুলওয়ামার ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সাথে সংহতি প্রকাশে তারা এ সিদ্ধান্ত নেয়।

সূত্র : এনডিটিভি

 

আরো পড়ুন : ভারতের বিভিন্নস্থানে কাশ্মিরিদের ওপর হামলা
আনন্দবাজার ও এনডিটিভি, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:১২

উত্তরাখণ্ডের দেরাদূন শহরে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন কাশ্মিরের কয়েক জন ছাত্র। পুলওয়ামা হামলার পরই বাড়িওয়ালা তাদের বলে দিয়েছেন, ঘর খালি করতে। বিহারে চাকরি সূত্রে ৩৫ বছর ধরে পটনায় থাকেন কাশ্মিরের বাসিন্দা বসির আহমেদ। পুলওয়ামা হামলার পর আচমকাই কয়েকজন তার বাড়িতে চড়াও হন। ওই হামলাকারীরা বাড়িতে ভাঙচুর চালান এবং তাকেও মারধর করেন বলে অভিযোগ।

পাটনায় কাশ্মিরি ব্যবসায়ীরা এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, উচ্ছৃঙ্খল জনতা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ব্যবসায়ী বসির আহমেদ বলেছেন, ‘একদল লোক লাঠিসোটা হাতে আমার দোকানের সামনে হাজির হয়। তারা শ্লোগান দিতে থাকে। তখনও পর্যন্ত পুলওয়ামার ওই হামলার ঘটনার কথা জানতাম না আমি। কিন্তু তারা দোকানের জিনিপত্র ধ্বংস করে আমাকে ও কর্মচারীদের মারধর করে।’

তিনি বলেন, ‘আমি গত ৩৫ বছর ধরে পাটনায় কাজ করছি, কিন্তু কখনো এ রকম পরিস্থিতিতে পড়িনি। আমি রাজনীতি করি না, আমি এতো ব্যস্ত থাকি যে খবর দেখার সময়ও পাই না।’

পঞ্জাবের অম্বালার একটি পঞ্চায়েত থেকে ফতোয়া জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কারও বাড়িতে কাশ্মিরি কেউ থাকলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের বের করে দিতে হবে।

বিহার ও হরিয়ান থেকেও একই ধরনের খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।


আরো সংবাদ



premium cement