১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যুদ্ধ চান না নিহত ভারতীয় সেনার স্ত্রী

সিআরপিএফ জওয়ান বাবলু সাঁতরার কফিন আঁকড়ে স্ত্রী, পাশে মেয়ে - ছবি : সংগ্রহ

শনিবার তখনও এসে পৌছায়নি তার স্বামীর কফিনবন্দি লাশ। সকাল থেকে বাউড়িয়ার চককাশী রাজবংশীপাড়ায় ভিড়। ক্ষণে ক্ষণে স্লোগান উঠছে, ‘বাবলু সাঁতরা অমর রহে’। দাবি উঠছে দোষীদের শাস্তির। তার মধ্যেই মুখ খুললেন মিতা। কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতি হামলায় নিহত সিআরপিএফ জওয়ান বাবলুর স্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করি না। যুদ্ধে আরও মায়ের কোল খালি হবে। সরকারের উচিত সমাধানের পথ খোঁজা। তবে, যুদ্ধের মাধ্যমে নয়।’

নিহতদের মধ্যে দুজন রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের। তাদের একজন বাউড়িয়ার বাবলু সাঁতরা, আরেকজন নদিয়ার সুদীপ বিশ্বাস। দুজনের লাশ শনিবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমানে আনা হয় নিজ নিজ বাড়িতে।

ভারতীয় জওয়াদের ওপর আত্মঘাতি হামলার ঘটনায় দেশটির সর্বত্র প্রতিবাদে ঝড় উঠছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে অনেক সাধারণ ভারতীয় মনে করেন যুদ্ধ কোন সমাধান নয়। কার্গিল-যুদ্ধে বাবাকে হারানো গুরমেহর কৌর আগেই বলেছিলেন, ‘আমাদের আসল শত্রু যুদ্ধ।’ শুক্রবার আবারো তিনি টুইট করেন, ‘দেশবাসীকে তাতানো চলছে। হামলার চক্রটা বন্ধ হওয়া দরকার।’ দু’দিন আগে স্বামীকে হারানো মিতাও বললেন, যুদ্ধ সমাধান নয়।

সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমানে দুই জওয়ানের কফিনবন্দি লাশ কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় শনিবার বিকেলে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় একটি কফিন কাঁধে করে নামান। বিমানবন্দরের ৪ নম্বর ভিআইপি গেটের সামনে ছাউনিতে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে। সিআরপিএফ-এর তরফে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয় নিহত জওয়ানদের। তিন বাহিনীও শ্রদ্ধা জানায়। পুলিশ কর্মকর্তা, মন্ত্রীরাও ফুল-মালা দেন।

এ দিন সকাল থেকে রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ। তারা একবার বাবলুর কফিন ছুঁতে চান। বাবলুর কফিন তার বাড়িতে এসে পৌছায় সাড়ে ছ’টা নাগাদ। বাড়ির সামনের মাঠে সিআরপিএফের পক্ষ থেকৈ ‘গান স্যালুট’ দেওয়া হয়। বিদায় জানানো হয় নিহত সেনানীকে।

তার স্ত্রী মিতা আগেই বলেছিলেন, ‘শুনেছি, ওঁদের কনভয়ে নিরাপত্তায় গাফিলতি ছিল। ঠিক-ভুল জানি না। তবে স্বামীর ইউনিট ছাড়া এ দিন বিকেল পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে কেউ যোগাযোগ করেননি। আমি সামান্য বেতনে বেসরকারি স্কুলে পড়াই। মেয়েকে নিয়ে চলাটাই এখন চিন্তার। সরকার কিছু করুক।’

প্রয়োজনে তিনি সেনাবাহিনীতেও নাম লেখাতে রাজি বলে জানিয়েছেন মিতা। তার প্রশ্ন, ‘সবাই যদি পিছিয়ে যায়, দেশরক্ষা করবে কারা?’


আরো সংবাদ



premium cement