২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাকিস্তানকে ‘কড়া জবাব’ দেয়ার হুশিয়ারি মোদির

হামলার পরদিন কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর পাহাড়া - ছবি : এএফপি

কাশ্মিরে ভারতীয় প্যারামিলিটারি বাহিনীর গাড়িতে বোমা হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে ‘কড়া জবাব’ দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই সাথে পাকিস্তানকে পুরোপুরি আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার আহ্বান জাননো হয়েছে দিল্লির পক্ষ থেকে। ভারত মনে করে এই হামলার পেছনে যারা জড়িত তাদের আশ্রয় দিচ্ছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার ওই হামলায় ভারতীয় বাহিনীর ৪২ জওয়ান নিহত।

শুক্রবার সকালে মোদি তার নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে নির্দেশ দিয়েছেন এই ঘটনার কড়া জবাব কিভাবে দেয়া যেতে পারে সেটি নিয়ে চিন্তা করতে। গত এক দশকের মধ্যে ভারতীয় বাহিনীর ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার ঘটনা এটি। এদিন এক বক্তৃতায় মোদি বলেন, ‘এর যথাযথ জবাব দেব আমরা। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে। আর যারা এদের সমর্থন দিচ্ছে তাদেরও শাস্তি পেতে হবে।

নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘যদি আমাদের প্রতিবেশীরা ভেবে থাকে এর ফলে ভারতকে অস্থিতিশীল করা যাবে, তবে তারা ভুল করছে’।

বৃহস্পতিবার কাশ্মিরে ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর বাসে আত্মঘাতি গাড়ি বোমা হামলা হয়েছে। পাকিস্তান ভিত্তিক জইশ-ই মোহাম্মদ এই হামলার দায় শিকার করেছে। ২০০০ সালে এই গোষ্ঠিটি গঠিত হওয়ার পর তারা ভারতীয় বাহিনীর ওপর তারা বেশ কয়েকবার আত্মঘাতি হামলা চালিয়েছে।

বৃহস্পতিবারের হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান তাদের মাটিতে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে। যদিও পাকিস্তান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

এদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অরুন জেটলি ‘পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন’ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেছেন, ভারতের হাতে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে যে, এই হামলার পেছনে ‘ইসলামাবাদের সরাসরি হাত রয়েছে’।

ভারত অধিকৃত কাশ্মির একটি মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা যেখানে কয়েক দশক ধরেই চলছে সংঘাত।

পূর্বেকার খবর

কাশ্মিরে আত্মঘাতী হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪

ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে বৃহস্পতিবার দেশটির কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) গাড়ি লক্ষ্য করে চালানো আত্মঘাতি হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪-এ পৌঁছেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৪১ জন।

এর আগে কাশ্মিরে উরির সেনাঘাঁটিতে বিদ্রোহীদের হামলায় ১৯ জন সেনার মৃত্যুর পরে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মিরে সার্জিকাল স্ট্রাইক লিয়েছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। ভোটের রাজনীতিতেও বিষয়টির অনেক প্রচার করে বিজেপি পক্ষ।

কিন্তু বৃহস্পতিবার মোদী সরকারের শেষ মুহূর্তে এসে কাশ্মিরে আরও বড় মাপের হামলার শিকার হয় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। পুলওয়ামার অবন্তীপোরায় সিআরপিএফ কনভয়ে গাড়িবোমা হামলায় হতাহতের সংখ্যা ৮৫তে গিয়ে ঠেকেছে।

জম্মু-কাশ্মির পুলিশের ডিএসপি অমিত কুমার জানান, বৃহস্পতিবার ৭৮টি গাড়ির সিআরপি কনভয় জম্মু থেকে শ্রীনগরের দিকে যাচ্ছিল। বাস, ট্রাক ও এসইউভি মিলিয়ে ২৫৪৭ জন সদস্য ছিলেন তাতে। দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কে অন্তত ৩৫০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ঠাসা একটি স্করপিয়ো কনভয়ের দু’টি বাসে ধাক্কা মারে। প্রবল বিস্ফোরণের পরে একটি বাসে আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণের পরে সিআরপি সদস্যদের লক্ষ্য করে গ্রেনেড ও গুলি চালায় জঙ্গিরা।

জম্মু-কাশ্মির পুলিশের প্রধান দিলবাগ সিংহ জানিয়েছেন, তুষারপাতের কারণে গত তিন দিন ধরে বন্ধ ছিল জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক। ফলে যেখানে সাধারণত একটি কনভয়ে ১ হাজার জওয়ান যাওয়ার কথা, সেখানে এই কনভয়ে ২৫৪৭ জন জওয়ান ছিলেন।

একটি গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, কাশ্মিরে আইইডি বিস্ফোরণের সম্ভাবনা নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি সতর্ক করা হয়েছিল সিআরপিএফকে। কিন্তু বাহিনী তাতে গুরুত্ব দেয়নি। হামলার পর এ বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার কাশ্মিরে যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

এ হামলার দায় স্বীকার করেছে জয়েশ-ই-মোহাম্মদ। উরির হামলাতেও তারাই জড়িত ছিল। জয়েশের মুখপাত্র মুহাম্মদ হাসান দাবি করেন, আদিল আহমেদ ওরফে ওয়াক্কাস নামে তাদের এক আত্মঘাতি সদস্য এ হামলা চালিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement