২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

যন্ত্রণাময় মুখ, চোখে স্বপ্ন আকাশছোঁয়া

বোনদের সাথে সেলফি তোলায় ব্যস্ত ললিত - ছবি : সংগৃহীত

স্কুলে প্রথম যেদিন গিয়েছিল ললিত, সেদিন দেখেছিল সহপাঠীদের প্রতিক্রিয়া। কেউবা তাকে দেখে পালিয়ে যায়। আবার কেউবা সরে থাকে ভয়ে। অন্য গ্রামে গেলে মানুষজন ব্যঙ্গ করে ‘বানর’ বলে। এর বাইরে শ্বাস নেয়ার কষ্ট, ভালো করে দেখতে না পারার কষ্ট তো আছেই।

তবুও স্বপ্ন তার আকাশছোঁয়া। শত বঞ্চণার পাশাপাশি কিছুটা সহানুভূতি কিছুটা জেদে বেঁচে আছে ললিত পাটিদার। বেঁচে আছে পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে।

ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের রত্লম এলাকায় ললিত জন্ম নেয় মারাত্মক এক সমস্যা নিয়ে। স্বাভাবিকভাবে 'werewolf syndrome' নামে পরিচিত এই রোগের নাম চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘hypertrichosi’।

ডেইলি মেইল, মিররে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিরল সমস্যা নিয়ে জন্ম নেয় ললিত। জন্মের সময়ই তার চেহারায় ছোট ছোট চুল ছিল। এখন সেগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ৫ সেন্টিমিটারে। ফলে চেহারা একরকম ঢেকেই গেছে।


মিররের কাছে বলা এক অভিজ্ঞতায় ললিত জানায়, ‘মাঝে মাঝে মনে হয় আমি যদি অন্যদের মতো হতে পারতাম! বন্ধুরা প্রথমে খেলতে চাইতো না। স্কুলে কেউ পাশে বসত না। আমাকে দেখলে পাথরও ছুড়ত তারা।’

ললিতের মা পার্বতীবাঈ পাটিদার পরপর পাঁচ মেয়ের জন্ম দেন। এরপর একটি ছেলের আশায় অনেক জায়গায় মানতও করেন। এরপর ললিতের জন্ম হয়। পাবর্তীবাঈ জানান, সন্তানকে দেখে নিজেই বিস্মিত হয়েছিলেন। ‘জন্মের আধা ঘণ্টা পর আমি ললিতকে দেখি। সব জায়গায় চুল দেখে অবাক হয়েছিলাম।’

তিনি বলেন, ললিতকে ছোট-বড় অনেক জায়গায় ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কিন্তু কোনো উপকার পাওয়া যায়নি। সব জায়গা থেকে বলা হয়েছে, এর কোনো চিকিৎসা নেই।

ললিতের বাবা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বঙ্কটলাল জানান, ‘ললিতের বয়স যখন দুই বছর, তখন একটি বড় হাসপাতালে নিয়ে যাই ওকে। বেশ কয়েক জন ডাক্তার তাকে পরীক্ষা করে বলেন, এর কোনো চিকিৎসা নেই। যদি কোনো উপায় বের করা যায়, তাহলে নাকি জানাবে। এরপর তারা আর কোনো কিছু জানায়নি। এখন ললিতের বয়স ১৩ বছর।

কিন্তু এই প্রতিবন্ধকতা নিয়ে ললিত থেমে থাকতে চায় না। মা-বাবার প্রতি ভীষণ কৃতজ্ঞ ললিত একদিন পুলিশ হয়ে তাদের সেবা করতে চায়।

ললিত জানায়, ‘চুল না থাকলে খুব ভালো হতো। কেউ আমাকে ব্যঙ্গ করত না। আমি পুলিশ হয়ে সব চোরকে জেলে দেব। আমি সৎ থেকে আয় করতে চাই। মা-বাবা আমার জন্য অনেক কিছু করেছেন। তারা বৃদ্ধ হলে আমি কষ্ট দেব না।’

ললিতের শিক্ষকেরা জানান, সে লেখাপড়ায় খুব ভালো। ভালো খেলাধুলায়ও। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাবুলাল বলেন, ‘ললিত দুই বছর ধরে আমার ছাত্র। পড়ালেখা ও খেলাধুলায় খুব ভালো। ক্লাসে আগে সবাই ওকে ভয় পেত। এখন ও সবার প্রিয়।’

ললিতের ‘সবচেয়ে প্রিয়’ এক বন্ধুও আছে। নাম তার দিলীপ রাঠোর। কেউ ললিতকে আক্রমণ কিংবা ব্যঙ্গ করলে এ দিলীপ তাকে রক্ষা করে।

‘ললিত এখন আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু। ওকে প্রথমবার দেখে আমিও ভয় পেয়েছিলাম,’ বন্ধুর কথা বলতে বলতে দিলীপ কিছুটা আবেগী হয়ে যায়, ‘ওকে কেউ কিছু বললে আমার মাথা ঠিক থাকে না। এখন সব সময় একসঙ্গে থাকি। ও একদিন নিশ্চয়ই ভালো হয়ে যাবে।’

সূত্র : ডেইলি মেইল, মিরর


আরো সংবাদ



premium cement
ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে প্রথম হয়েছেন যারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিজ দেশে ৫ বছর পর ফিরল দিপক চট্টগ্রামে ৬ কিশোর গ্যাংয়ের ৩৩ সদস্য আটক শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : শামসুল ইসলাম ইউরো ২০২৪’কে সামনে রেখে দল নির্বাচনে বিপাকে সাউথগেট ভারতীয় পণ্য বর্জনকে যে কারণে ন্যায়সঙ্গত বললেন রিজভী মাকে ভরণ-পোষণ না দেয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত ঢাবির সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিরাপত্তা-বিষয়ক আলোচনা করতে উত্তর কোরিয়ায় রুশ গোয়েন্দা প্রধান

সকল