২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুসলিম ছাড়া অন্য আশ্রয়প্রার্থীদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত

- ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে গিয়ে বসবাসরত অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেয়ার বিল পাস করেছে ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভা। এর ফলে প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলোতে ধর্মীয় সহিংসতার শিকার হয়ে কোনো অমুসলিম ভারতে বসবাসের আবেদন করলে দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে। এই তালিকায় রয়েছে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, শিখ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরা।

কংগ্রেসসহ কয়েকটি বিরোধী দলের বিরোধিতার মধ্যেই ভারতের লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নামের এই আইনটি পাস হয়। শুধু কংগ্রেস বা বামেরা নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতে বিজেপির সাথে জোটবদ্ধ কয়েকটি দলও এই বিলের বিরোধিতা করেছে। সমালোচকেরা বলছেন, এই বিল সংবিধানের মূল ধারার পরিপন্থী। এ ইস্যুতে সোমবার আসামে বিজেপি সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে মিত্র রাজনৈতিক দল ‘আসাম গণপরিষদ’। সেখানে নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের বিরোধিতায় সরব হয় তৃণমূল কংগ্রেসও।

মঙ্গলবার লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল উত্থাপন করেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, এই বিল সাধারণ মানুষের জন্য রক্ষাকবচ। ভারতের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য এ আইন কার্যকর করা হবে। নির্যাতিতদের বোঝা পুরো দেশ বহন করবে। নাগরিকত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে সরকার ধর্মীয় ভেদাভেদ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা নেতারা। জবাবে রাজনাথ সিং বলেন, ভারত ছাড়া ওদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। 

নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল-২০১৬-এর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে দিনভর ধর্মঘট ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ বিলের বিরোধিতায় মঙ্গলবার ধর্মঘট ডাকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ছাত্র সংগঠনগুলো। জায়গায় রাস্তায় টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ধর্মঘট সমর্থকেরা। তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। ব্যবহার করে পানিকামান। এতেও আন্দোলনকারীরা না দমলে তাদের দিকে গুলি চালায় পুলিশ। এতে কমপক্ষে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

যখন লোকজসভায় তোলা হয় বিলটি তখন তা আরেকটি পার্লামেন্টারি কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানায় বিরোধী দল কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস। তবে সরকার তাদের এ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে। ফলে তারা লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। এরপর লোকসভায় বিতর্ক চলতে থাকে। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সব ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে আসাম ও পুরো দেশের স্বার্থের জন্য। এক্ষেত্রে আসাম চুক্তি ৬ নম্বর ধারা অনুসরণ করছে সরকার। তিনি বলেন, এই দায় বহন করতে হবে পুরো দেশকে। এ সময় তিনি বলতে চেষ্টা করেন যে, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে এভাবে অমুসলিমদের যাওয়ার কারণ হলো ধর্মভিত্তিক ভারতভাগ। 

তিনি ১৯৫০ সালের এপ্রিলে নেহরু-লিয়াকত চুক্তির এবং ১৯৭২ সালে ইন্দারা গান্ধী-শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যকার চুক্তির কথা তুলে ধরেন। রাজনাথ সিং বলেন, এসব চুক্তিতে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল যে পাকিস্তান ও বাংলাদেশী সংখ্যালঘুদের পূর্ণ সুরক্ষা দেয়া হবে।

আসামের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্বাস শর্মা বলেন, হিন্দুদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি সামনে আনার ক্ষেত্রে বিজেপিই প্রথম নয়। আমাদেরকে ধর্মভিত্তিক একটি অবস্থান নিতে হয়েছে। কারণ প্রতিবেশী দেশগুলোতে হিন্দুরা ধর্মের ভিত্তিতে নির্যাতিত হচ্ছেন। পণ্ডিত জওয়াহেরলাল নেহরু এবং মহাত্মা গান্ধীর সময় থেকেই হিন্দুদের অধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে ভারত। আমাদের জাতির প্রতিষ্ঠাতাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য ১২ বছরকে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু আমরা সেই সময়কে কমিয়ে ৬ বছর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এ বিলটি অসাংবিধানিক বলে সমালোচনা করছেন অনেকে। অনেক মানবাধিকারকর্মী বিশ্বাস করছেন, এভাবে নাগরিকত্ব দেয়া হলে তা আসাম চুক্তি-১৯৮৫-কে হালকা করে ফেলবে। ওই চুক্তিতে পরিষ্কার বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের পরে যেসব অভিবাসী অবৈধভাবে আসামে প্রবেশ করেছেন তাদের ধর্ম যাই হোক না কেন দেশ থেকে বের করে দিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন : দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির তদন্ত কমিটি নেতাদের মুক্তির দাবিতে রিজভীর নেতৃত্বে নয়াপল্টনে বিএনপির মিছিল বৃষ্টির জন্য দেশবাসীর প্রতি ইস্তিস্কার নামাজ আদায়ের আহ্বান আমিরে জামায়াতের সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে চুক্তি স্বাক্ষর করল তুর্কি, ইরাক, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ঢাকায় ‘হিট স্ট্রোকে এক ব্যক্তির মৃত্যু শ্যামবাজার ঘাটে লঞ্চে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৪ ইউনিট ‘আমার শিশু মেয়েটির যে সর্বনাশ সে করেছে’ বান্দরবানের ৩ উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজে মুসুল্লিদের ঢল বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের চাবিটা মনে হয় পার্শ্ববর্তী দেশকে দিয়েছে সরকার : রিজভী চীনের দক্ষিণাঞ্চলীলের গুয়াংডংয়ে সর্বোচ্চ স্তরের বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি

সকল