১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সরকারি আইন যে গ্রামে অচল

- ছবি : সংগৃহীত

ভারতের মহারাষ্ট্রের গাডচিরিলি জেলার একটি গ্রাম মেণ্ডালেখা। গ্রামটির অধিবাসীরা ভারতের কেন্দ্রীয় আইন মেনে চলে না। গ্রামবাসীর দণ্ডমুণ্ডের কর্তা এখানকার গ্রামসভা। গ্রামের প্রত্যেক বাসিন্দা মহারাষ্ট্র গ্রাম দান আইনের মাধ্যমে নিজেদের সব সম্পত্তি গ্রামসভাকে দান করেছেন। মেণ্ডালেখা গ্রামে ১০৪টি পরিবারের বাস। জনসংখ্যা ৪৮০ জন। মূলত গোন্ড উপজাতির মানুষের বাস এ গ্রামে।

উপজাতিটি বিচ্ছিন্ন জমির মালিকানায় বিশ্বাস করে না। তাদের মতে, জমির ব্যক্তিগত মালিকানা থাকলে তা বহিরাগতরা সহজে কিনতে পারে। ফলে আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে বহিরাগতদের ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা ব্যাপক।

গ্রাম দান আইন অনুযায়ী, এ গ্রামের অর্থনীতি এখন নিয়ন্ত্রিত হয় গ্রামসভার মাধ্যমে। গ্রামের সম্পদ জমা হয় গ্রামসভার হাতে। তারাই গ্রামবাসীর সব সুযোগ সুবিধা দেন। মেণ্ডালেখা গ্রামে পঞ্চায়েত ব্যবস্থাও কার্যত অচল। এ গ্রাম থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতে কোনো প্রতিনিধি যান না। সবটাই হয় গ্রামসভার মাধ্যমে। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর গ্রামটি আর্থিক দিক থেকেও সচ্ছল। অরণ্যের অধিকার আইন অনুযায়ী, আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামটি নিকটবর্তী জঙ্গলের সম্পদ সংগ্রহ করতে পারে।

গ্রামটির আশপাশে প্রায় ৩০০ একর জমিজুড়ে রয়েছে বাঁশবন। বছরে কোটি টাকার বাঁশ বিক্রি হয়। যার স্বত্ব পায় গ্রামসভা অর্থাৎ পরোক্ষভাবে গ্রামবাসী সবাই। বাঁশ বিক্রির টাকা গ্রামবাসীদের মধ্যেই বিলিয়ে দেয় গ্রামসভা। স্থানীয় যুবকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় বাঁশের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তৈরির। গ্রামবাসী রোজগারের ১০ শতাংশ গ্রামসভায় দান করেন যা পরে অভাবের সময় তাদেরই ঋণ হিসেবে দেয়া হয় বিনা সুদে।

আর্থিক সচ্ছলতার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিক থেকেও স্বতন্ত্র গ্রামটি। এ গ্রামের বেশ কিছু নিজস্ব আইন আছে। তবে ফৌজদারি মামলায় তারা হস্তক্ষেপ করে না। গোটা গ্রামের সম্পত্তি এক জায়গায় থাকায় গ্রামটি একটি পরিবারের মতো। ফলে সামাজিক অশান্তিও তেমন নেই বললেই চলে। ইন্টারনেট।


আরো সংবাদ



premium cement