২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাম মন্দির ঘিরে দুই আয়োজনে অযোধ্যায় উত্তেজনা

বাবরি মসজিদ -

রাম মন্দির স্থাপনে চাপ তৈরিতে চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ভারতের অযোধ্যায় রামের জন্মস্থানে দু’টি অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে দুই কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠন। ওই অনুষ্ঠান ঘিরে অযোধ্যায় চলছে উত্তেজনা। এরই মধ্যে প্রয়োজনে সেখানে সেনা মোতায়েনে সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আহ্বান জানান রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। আর উত্তেজনার মধ্যে নিজেদের নিরাপত্তা জোরদারের দাবি তুলেছে রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলমানরা।

বাবরি মসজিদের অবস্থান উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একাংশের দাবি, যেখানে মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে সেই জায়গাটি ছিল তাদের কল্পিত দেব রামের জন্মভূমি। ১৯৯২ সালে হিন্দু সন্ত্রাসবাদীরা ষোড়শ শতকে নির্মিত ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে। এরপর দাঙ্গা বাধিয়ে হত্যা করা হয় দুই হাজার মুসলমানকে। এলাহাবাদ হাইকোর্টে একবার রায় ঘোষণার পরেও চূড়ান্ত মীমাংসা হয়নি। ওই রায়ে মসজিদের জমিকে বিবদমান তিন পক্ষের মধ্যে তিন ভাগ করা হয়। তখন অযোধ্যার বিতর্কিত জমির মামলা চলে যায় শীর্ষ আদালতে। আগামী বছর ওই মামলায় চূড়ান্ত রায় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগেই সেখানে রাম মন্দির তৈরিতে চাপ জোরালো করতে চাইছে ভারতের চরমপন্থী হিন্দু মৌলবাদীরা।

রোববার রাম জন্মভূমিতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে শিবসেনা। এরই মধ্যে দুই দিনের সফরে অযোধ্যায় পৌঁছেছেন কট্টরপন্থী সংগঠনটির প্রধান উদব ঠাকরে। রোববার তিনি রাম জন্মভূমিতে পূজায় অংশ নেবেন। এ ছাড়া সারায়ু নদীর তীরে আরতিতে অংশ নিয়ে সেখানে সমবেত ভক্তদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন তিনি। এ ছাড়া পুনের শিবনেরি দুর্গ থেকে আনা মাটিভর্তি পাত্র তিনি রাম জন্মভূমির পূজারকের কাছে হস্তান্তর করবেন। অযোধ্যায় আরো একটি বড় সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। ‘ধর্ম সংসদ’ নামের ওই আয়োজনও হবে রোববার। সংগঠনটি বলছে, ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার পর রাম মন্দির সমর্থক ও পূজারিদের এটাই হবে সবচেয়ে বড় সমাবেশ। এর আলোচ্যসূচি হবে রাম মন্দির তৈরির কাজ এগিয়ে নেয়ার উপায়।

ওই আয়োজনকে সামনে রেখে গত কয়েক দিনে উত্তরপ্রদেশজুড়ে মোটরসাইকেল র্যালি ও মিছিল আয়োজন করছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এ ধরনের একটি আয়োজন থেকে পূর্বাঞ্চলীয় উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অযোধ্যার ভূমি বিরোধ মামলার অন্যতম মামলাকারী ইকবাল আনসারি বলেছেন, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকার মধ্য দিয়ে রাম জনকির বাইক যাত্রার সময়ে ও কানপুরে ছোট সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দু’টি ঘটনার কোনোটিতেই প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন মুসলিম মামলাকারীদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য যথেষ্ট।

১৯৯২ সালে আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, এখানে যদি ১৯৯২ সালের মতো সমাবেশ হয় তাহলে অযোধ্যার মুসলমান আর আমার নিরাপত্তার দরকার। যদি আমার নিরাপত্তা জোরদার না করা হয় তাহলে আমি ২৫ নভেম্বরের আগেই শহর ছেড়ে চলে যাবো। তবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দাবি করেছে- রাম ভক্তরা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পরিষদের মুখপাত্র শারদ শর্মা বলেন, ‘এরা সবাই সুশৃঙ্খল মানুষ। সব সময়ই নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাদের শুধু নির্দেশনা দরকার আর আমাদের পূজারিরা তা দেবেন। এটা একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান।’ তবে প্রয়োজন পড়লে সেনা পাঠাতে সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। সমাজবাদী পার্টির প্রধান বলেন, বিজেপি না সুপ্রিম কোর্ট, না সংবিধান মান্য করে।


আরো সংবাদ



premium cement