২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার ৩০ কেজি গোশত!

চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার ৩০ কেজি গোশত! - ছবি : সংগ্রহ

খেলার মাঠের একপাশে টুর্নামেন্ট মঞ্চ। মঞ্চের বাঁশের খুঁটির সাথে বাঁধা চারটি ছাগল। টুর্নামেন্ট কমিটির লোকদের কেউ বটপাতা এগিয়ে দিচ্ছেন, কেউ বা মুঠোয় ঘাস ধরে সেগুলির মুখে। খেলা শুরুর ১০ মিনিট আগে শালবনে ঘেরা মাঠের চারপাশে উপস্থিত দর্শকদের দেখাতে ছাগলগুলিকে নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করেন উদ্যোক্তারা। খেলার হাফটাইমেও আবার তা করা হয়। খেলা শেষের ৫ মিনিট আগে ছাগলগুলিকে নিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়িতে। পরের দিনের খেলায় দেখা যায় একই ছবি।

ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার নলহাটি থানার একটি গ্রামের। থানার সন্তোষপুর আদিবাসী সিধো কানহো ক্লাবের উদ্যোগে গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে ৩২ দলকে নিয়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট। আশপাশের কয়েকটি এলাকার বিভিন্ন টিম অংশ নিচ্ছে টুর্নামেন্টে, দলগুলো সবই আদিবাসীদের।

টুর্নামেন্টের আয়োজকরা জানান, প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য বিজয়ী ট্রফিসহ ৩০ কেজি খাসির গোশত পুরস্কার থাকবে। রানার্স আপদের জন্য ট্রফিসহ থাকবে ২৫ কেজি গোশত। সেমিফাইনালে পরাজিত দু’টি দলও বাদ যাবে না। দুই দলের প্রতিটির জন্য বরাদ্দ থাকবে ১০ কেজি করে খাশির গোশত। আর যে ছাগলগুলো প্রতিটি ম্যাচের আগে মাঠে হাজির করা হয়, সেগুলোর গোশতই দেয়া হবে পুরস্কার হিসেবে।

আয়োজকরা জানান, তিন দিন ব্যাপী এই টুর্নামেন্টের খেলা দেখতে গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে শালবনের মাঠে আসছেন দূরদূরান্তের দর্শকেরাও। ফাইনাল খেলায় কোন দলের ভাগ্যে ৩০ কেজি গোশত জোটে, তা দেখতে আর বেশি লোক মাঠে আসবেন বলে আশায় রয়েছেন আয়োজকরা। সূত্র: আনন্দবাজার

আরো পড়ুন: আত্মহত্যা প্রবণ দেশ হিসেবে কেন পরিচিত জাপান?
বিবিসি
জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত তিন দশকের মধ্যে গত বছরই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিশু আত্মহত্যা করেছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের মার্চ মাস পর্যন্ত প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া ২৫০ জন শিশু আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে।

 

১৯৮৬ সালের পর থেকে একবছরে জাপানে এত বিপুল সংখ্যক শিশুর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি।

আত্মহত্যার আগে ঐসব শিশুরা যেসব সমস্যার কথা জানিয়েছিল তার মধ্যে রয়েছে পারিবারিক সমস্যা, ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা এবং বন্ধুদের কাছ থেকে অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্যপূর্ণ ব্যবহার। তবে স্কুলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এসব ঘটনার ১৪০টিরই সঠিক কারণ তারা জানে না কারণ সেসব ক্ষেত্রে শিশুরা আত্মহত্যার আগে কোনো নোট রেখে যায়নি।

আত্মহত্যা করা অধিকাংশ শিশুই মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। ১৮ বছরের কম বয়সী জাপানি শিক্ষার্থীরা সাধারণত এসব স্কুলে পড়ে।

২০১৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা প্রবণ দেশগুলোর একটি ছিল জাপান; তবে এই প্রবণতা বন্ধ করতে জাপান সরকার বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নেয়ার পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয় বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।

২০০৩ সালে জাপানে মোট আত্মহত্যার ঘটনা ছিল ৩৪ হাজার ৫০০টি, যা ২০১৭ সালে কমে ২১ হাজারে নেমে আসে।

কেন জাপানে আত্মহত্যার হার এত বেশি? ২০১৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জাপানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০ জন মানুষ আত্মহত্যা করে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সাথে তুলনা করলে দক্ষিণ কোরিয়া ব্যতীত অন্য কোনো দেশে আত্মহত্যার হার এত ব্যাপক নয়।

ঐতিহাসিক ধারা

আর্থ-সামাজিক এবং ঐতিহাসিক কারণে জাপানে মানুষের আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। টোকিও'র টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ওয়াতুরু নিশিদা বলেন,‘বিষণ্ণতা এবং আত্মহত্যার অন্যতম প্রধান কারণ বিচ্ছিন্নতা বা একা থাকার প্রবণতা।’

তিনি আরো বলেন,‘জাপানে একসময় বৃদ্ধ অভিভাবকদের দেখাশোনা করতো তাদের সন্তানরা, তবে বর্তমানে সেরকমটা হয় না বললেই চলে। বৃদ্ধাশ্রম বা হাসপাতালে একাকী মৃত্যুবরণের ঘটনা দিন দিন বাড়ছেই।’

এত ব্যাপকভাবে আত্মহত্যার মহামারীর পিছনে জাপানে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত 'সম্মানজনক আত্মহত্যা'র ঐতিহ্যকেও দায়ী মনে করেন অনেকে। জাপানের সামুরাই যোদ্ধাদের আত্মহত্যা, যাকে 'সেপ্পুকু' বলা হতো অথবা ১৯৪৫ সালে তরুণ 'কামিকাজে' বিমানচালকদের আত্মহত্যার ইতিহাস বর্তমান প্রজন্মের মানসিকতায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে বলে মনে করেন ঐ বিশেষজ্ঞরা।

মনোবিজ্ঞানী ওয়াতুরু নিশিদা বলেন,‘জাপানে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে, আত্মহত্যা করা পাপ নয়।’

জাপান হেল্পলাইনে কাজ করা কেইন জোসেফ মন্তব্য করেন, অনেকসময় বৃদ্ধ ব্যক্তিরা অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তা এবং বীমা সংক্রান্ত জটিলতা থেকে রেহাই পেতে আত্মহত্যা করেন।

জাপানে আত্মহত্যা সংক্রান্ত ঘটনায় বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই বীমার অর্থ হস্তান্তর করে। জোসেফ বলেন,‘যখন আর কোনে উপায় থাকে না, তখন অনেকেই মনে করেন, আত্মহত্যা করলে সহজেই পরিবারের টাকা-পয়সা সংক্রান্ত জটিলতা দূর হবে।

অর্থনৈতিক চাপ

জাপানে যে শুধু নিঃসঙ্গ বৃদ্ধরাই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন, তা নয়। আত্মহত্যা করা মানুষের বয়স যাচাই করলে দেখা যায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আত্মহত্যাকারী ২০ থেকে ৪৪ বছর বয়সী পুরুষ।

এসব আত্মহত্যার ঘটনা যাচাই করলে দেখা যায় যে, তারা জীবন নিয়ে হতাশ ছিলেন এবং কারো কাছে সাহায্য চাইতে অপারগ ছিলেন।

১৯৯৮ সালে এশিয়ার অর্থনৈতিক সঙ্কটের পর এ ধরণের আত্মহত্যার হার বেড়ে গিয়েছিল। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের পর আবারও এই হার বৃদ্ধি পায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জাপানে 'অনিশ্চিত চাকরি'র সংখ্যা বা তরুণদের স্বল্প মেয়াদী চুক্তিতে চাকরি দেয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে।

জাপানে এখনো অনেক বয়স্ক ব্যক্তিরা চাকরিক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং ব্যাপক সুবিধা পেলেও ২০১৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জাপানের তরুণদের প্রায় ৪০ শতাংশ স্থির চাকরি পান না।

মানসিকতা ও প্রযুক্তি

অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তা ও অনিরাপত্তার পাশাপাশি অভিযোগ না করার মানসিকতার সংস্কৃতিও তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যা বৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা রাখে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

ওয়াতুরু নিশিদা বলেন,‘জাপানের সামাজিক রীতিনীতি বা প্রথায় রাগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করার খুব একটা সুযোগ নেই। এটি একটি নিয়মতান্ত্রিক সমাজ। তরুণদের একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আবদ্ধ থাকতে হয়। নিজেদের মনোভাব প্রকাশের কোনো সুযোগই সত্যিকার অর্থে তাদের সামনে থাকে না।’

আর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন দিনদিন প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং প্রসারের কারণে এই অবস্থার আরো অবনতি হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি তরুণদের সমাজ থেকে আরো বিচ্ছিন্ন করছে বলে মনে করেন তারা।

সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার এই প্রবণতার একটি বিশেষ নামও রয়েছে জাপানে; এটিকে বলা হয় 'হিক্কিমোরি'।

জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভাষায়, হিক্কিমোরি হলো সেসব ব্যক্তি যারা ৬ মাসের বেশি সময় ধরে নিজেদের বাড়ির বাইরে বের হয়নি এবং নিজেদের সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে।

জাপানের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে জাপানে হিক্কোমোরি হিসেবে বসবাসরত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ৭ লাখ।

জাপান ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ওমান, স্পেন, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া ও ফ্রান্সেও এই ধরণের ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement
ঈদের ছুটিতে ঢাকায় কোনো সমস্যা হলে কল করুন ৯৯৯ নম্বরে : আইজিপি সিরাজগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের নৈশ প্রহরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ৬ দাবিতে উত্তাল বুয়েট, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন মোরেলগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নদীতে ডুবে কিশোরের মৃত্যু আল-আকসায় কোনো ধরণের সহিংসতা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হলো তৃতীয় জুমআর জামাত ‘পেশাগত স্বার্থে সাংবাদিকদের ঐক্যবব্ধ হতে হবে’ গাজাবাসীর প্রধান কথা- ‘আমাদের খাবার চাই’ অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশপ্রেমিক জনতার ঐক্যের বিকল্প নেই : ডা: শফিকুর রহমান সোনাগাজীতে জামাতে নামাজ পড়ে বাইসাইকেল পুরস্কার পেল ২২ কিশোর গফরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল

সকল