২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পাকিস্তানকে অব্যাহত সমর্থনের প্রতিশ্রুতি চীনের

শনিবার চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সাথে এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান - এএফপি

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দেশটির প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গতকাল শুক্রবার চীন সফরে পৌঁছে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকের সময় এই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।

বৈঠকে ইমরান খান পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থাকে ‘খুবই জটিল’ বলে মন্তব্য করেন। চার দিনের সরকারি সফরে তিনি শুক্রবার বেইজিং পৌঁছান এবং চীনের গ্রেটহলে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকে বসেন। ইমরান খান বলেন, ‘তিনি শিখতে এসেছেন’।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার গত আগস্ট মাসে ক্ষমতায় আসার পর দেশের অর্থনীতিকে খুব কঠিন অবস্থায় পেয়েছে। তিনি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বলেন,‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশ একটি আবর্তের ভেতর দিয়ে চলে। তাদের উচ্চ পয়েন্ট ও নিম্ন পয়েন্ট থাকে। কিন্তু আমাদের দেশ এই মুহূর্তে খুবই বড় দুটি ঘাটতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। একটি হলো বাজেট ঘাটতি এবং অন্যটি হলো চলতি হিসাবের ঘাটতি। এজন্যই বলেছি যে, আমরা শিখতে এসেছি।’

বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, চীন ও পাকিস্তান সকল অবস্থায়ই বন্ধু ছিল। তবে সাংবাদিকদের সামনে তিনি কোনো আর্থিক সহায়তার কথা ঘোষণা করেন নি।

প্রেসিডেন্ট শি বলেন,‘আমি পাকিস্তান-চীন সম্পর্ককে খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকি এবং প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে কাজ করে দুইদেশের সর্বাত্মক কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরো শক্তিশালী করতে আগ্রহী যেন পাকিস্তান ও চীনের গন্তব্যের নতুন অধ্যায় শুরু হয়।’

আরো পড়ুন: তাইওয়ানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল পাকিস্তান
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ০২ নভেম্বর ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম চীন সফরের আগ মুহূর্তে তাইওয়ানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ইমরান খানের দফতরের এক নির্দেশে তাইওয়ানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ও সহযোগিতা ছিন্ন করার কথা বলা হয়েছে। আগামী ৩ নভেম্বর তারিখে পাক প্রধানমন্ত্রীর তিনদিনের সফরে বেইজিং যাওয়ার কথা রয়েছে।

সফরে ইমরান খান পাকিস্তান ও চীনের অর্থনৈতিক করিডোর এবং পাকিস্তানে চীনের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার বিষয়ে চীনা নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করবেন। তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন দেশ দাবি করলেন, চীন এই ভূখণ্ডটিকে নিজের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে। তবে বিগত বছরগুলোতে সাই ইং ওয়েন তাইওয়ানের ক্ষমতা গ্রহণের পর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। সাই ইং ওয়েন চীন থেকে তাইওয়ানকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করতে চান।


চীনের কমিউনিস্ট বিপ্লবের পর ১৯৪৯ সালে তাইওয়ান চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চীন এ বিচ্ছিন্নতা মেনে নেয়নি এবং বেইজিং তাইওয়ান দ্বীপকে নিজের একটি প্রদেশ বলে মনে করে।

সম্প্রতি চীন সরকার কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে ঘোষণা করে, তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষাকারী দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে বেইজিং। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করতেই পাকিস্তান তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।

আরো পড়ুন: ইমরান খানের সম্পদের পরিমাণ কত?

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরানের সম্পদের পরিমাণ কত এই নিয়ে কৌতুলহ সৃষ্টি হয়েছে অনেকের। বিশেষ করে এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ইমরান খানের দল জেতার পর এই কৌতুহল জোরদার হয়েছে। বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার ইমরান হয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। এক সময়ের পেশাদার ক্রিকেটার ইমরান খান। সে সময় ক্রিকেট খেলাই ছিলো তার উপার্জনের পথ। ক্রিকেট বোর্ড থেকে প্রাপ্ত অর্থ, স্পন্সরদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ, বিভিন্ন টুর্নামেন্ট থেকে প্রাপ্ত নগদ অর্থ ছিলো তার আয়ের উৎস। তবে ক্রিকেট ছাড়ার পর তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। সেসব ক্ষেত্র থেকে আরো বেড়েছে ইমরানের সম্পদ।

নির্বাচনের কয়েকদিন আগে পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ দলের এই নেতা তার সম্পদের একটি বিবরণ প্রকাশ করেছেন দলের ওয়েবসাইটে। তাতে দেখা গেছে, ইমরান খানের মোট সম্পদের ৩ কোটি ৮৬ লাখ ৯৪ হাজার পাকিস্তানি রুপি, মার্কিন ডলারে যা দাড়ায় ৩ লাখ ডলারের কিছু বেশি। আগের বছরের(২০১৭) তুলনায় তার সম্পদ কমেছে ২৩ লাখ রুপি।


অনেক কৃষি জমির মালিক ইমরান খান। ২০১৭ সালে তিনি ১৬৮ একর জমির খাজনা বাবদ ৩ লাখ ১৯ হাজার রুপি পরিশোধ করেন। গত বছর ইমরান খানের মোট আয় হয়েছে প্রায় ৪৮ লাখ রুপি, যার জন্য তিনি আয়কর বাবদ তিনি প্রায় ১৪ হাজার রুপি পরিশোধ করেন।

রাজধানী ইসলামাবাদের বানিগালা আবাসিক এলাকায় ৬ কানাল জমি(৭৫ একর) আছে তার যার মূল্য ১ কোটি ১৪ লাখ ৭১ হাজার পাকিস্তানি রুপি। একই এলাকায় আরেকটি জমি রয়েছে যার মূল সাড়ে পঞ্চাশ লাখ রুপি। ইসলামাবাদে দুই বেড রুমের একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে যার মূল্য প্রায় সোয়া কোটি রুপি। কয়েকটি পশু পালন করেন ইমরান যার মূল্য দুই লাখ রুপি, বাসায় আসবাবপত্র আছে পাঁচ লাখ রুপির। তবে তার নিজের কোন ব্যক্তিগত গাড়ি নেই।

এদিকে পাকিস্তানের সামা টিভি অনলাইনের এক খবরে দেখা গেছে, ২০১৭ সালে ইমরান খানের সম্পদ ছিলো একশো চল্লিশ কোটি রুপি। সেখানে বলা হয়েছে বানিগালায় প্রায় ৪০ একর জমির ওপর ইমরানের বাসভবনের দাম ৭৫ কোটি রুপি। লাহোরের জামান পার্ক এলাকায় তার পারিবারিক বাসভবনের মূল্য আছে প্রায় ৩ কোটি রুপি। বেশ কিছু ব্যবসায় তার বিনিয়োগ রয়েছে। এখানেও ইমরানের নিজের নামে কোন গাড়ি না থাকার বিষয়টি উল্লেখ আছে।

এদিকে উইকিপিডিয়ার এক হিসাবে দেখা গেছে, ইমরান খান পাকিস্তানের সেরা ধনীদের তালিকায় ৩৩ নম্বরে অবস্থান করছেন। এখানেও তার সম্পদের পরিমাণ একশো ৪০ কোটি রুপি দেখানো হয়েছে। এই তালিকায় তার চেয়ে উপরে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ(৩১), শহিদ খাকান আব্বাসি(২৭) ও সাবেক অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি(২৬ নম্বরে)।


আরো সংবাদ



premium cement