২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পুরোনো শত্রুর সাথে হাত মেলালেন প্রেসিডেন্ট : কী ঘটছে শ্রীলংকায়

বাঁ দিক থেকে: রাজাপাক্সে, বিক্রমসিংহে এবং সিরিসেনা। - সংগৃহীত

রাতারাতি ওলট পালট ঘটে গেছে শ্রীলঙ্কার সরকার ও রাজনীতির মানচিত্রে। প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনা হঠাৎ করেই বরখাস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রামাসিংহেকে। যিনি কিনা তার বহুদিনের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্র। আর তার জায়গায় প্রধানমন্ত্রী করেছেন তারই একসময়ের প্রতিপক্ষ সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাক্সেকে।

তার আগে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা ক্ষমতাসীন জোট থেকে তার দল ইউপিএফএ'কে প্রত্যাহার করে নেন। প্রধানমন্ত্রী বিক্রামাসিংহে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে সংসদের জরুরী সভা ডাকার ঘোষণা দেওয়ার পর আজ প্রেসিডেন্ট ১৬ই নভেম্বর পর্যন্ত সংসদ স্থগিত করে দেন।

তবে রানিল বিক্রমাসিংহের ইউএনপি বলছে, প্রধানমন্ত্রীকে এভাবে বরখাস্ত করার কোনো ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের নেই। রানিল বিক্রমাসিংহের সমর্থক এবং মন্ত্রী শরৎ ফনসেকা বলছেন প্রেসিডেন্ট বেআইনী কাজ করেছেন, সংবিধান লঙ্ঘণ করেছেন।

শরত ফনসেকা বলছেন, সংসদে এখনো তাদের দলই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা এরই মধ্যে রাষ্ট্রীয় টিভি স্টেশনে ঢুকে জোর করে দখল করেছে। তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের সংসদে গিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধার করা ছাড়া কোনো পথ নেই।’

তবে সংসদ স্থগিত করে দেয়ার পর কীভাবে তারা সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করবেন, সেটা এখন অনিশ্চিত।

আর দুর্বৃত্ত বলতে মি ফনসেকা সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ পাওয়া মাহিন্দা রাজাপাক্সের সমর্থকদের প্রতি ইঙ্গিত করেন। জানা গেছে, গভীর রাতে মিস্টার রাজাপাক্সের সমর্থকরা রাষ্ট্রীয় টিভি স্টেশনে হামলা করলে কিছুক্ষণের জন্য সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা এভাবে তার সাবেক রাজনৈতিক মিত্রর ওপর চড়াও হলেন? তার দল ইউপিএফএ-র এমপি অনুরা প্রিয়দার্শানা ইয়াপা বলছেন অর্থনীতির যে বেহাল দশা দাঁড়িয়েছে তাতে সরকার পরিবর্তন করা ছাড়া উপায় ছিলনা।

মি ইয়াপা বলছেন অর্থনীতি দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে। মানুষজন ক্ষুব্ধ, ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ। শ্রীলঙ্কা রুপির মূল্যমান ২৮ শতাংশ পড়ে গেছে। তিন বলেন, প্রেসিডেন্ট ঠিক কাজই করেছেন, না হলে শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়ে যেত, রাস্তায় অসন্তোষ তৈরি হতো।

তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক কিছু সমীকরণও হয়তো রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট আবার সামনের নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান, এবং তিনি হয়তো মনে করছেন, মিস্টার রাজাপাক্সের সাথে এখন থেকে গাঁটছড়া বাঁধলে তার সুবিধা হতে পারে।

অন্যদিকে, তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল বলে সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় খবর বেরিয়েছে যদিও সেই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তারপরও কথিত সেই ষড়যন্ত্রের সাথে প্রেসিডেন্টের এই নাটকীয় সিদ্ধান্তের কোনো যোগাযোগ রয়েছে কীনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছেন কেউ কেউ।

আরো পড়ুন : শ্রীলঙ্কায় সরকার পরিবর্তনে উদ্বেগে ভারত
নয়া দিগন্ত অনলাইন ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ১৬:৫২

শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক নাটকে নয়া মোড়। সাবেক ‘স্ট্রংম্যান’ মাহিন্দা রাজাপাকসেই এবার দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসলেন। শুক্রবার তাকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রেসিডেন্ট মাইত্রিপালা সিরিসেনা। সিরিসেনার দল শাসক জোট থেকে বেরিয়ে আসার পর সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী পদে মেনে নেয়া ছাড়া অন্য পথ খোলা ছিল না সিরিসেনার সামনে।

রাজাপাকসের প্রধানমন্ত্রী পদে শপথের খবর সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে প্রেস নোট দিয়ে। সরকারি টিভিতেও সেই শপথের অনুষ্ঠান দেখানো হয়েছে।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দেশের এক শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে এক ভারতীয় নাগরিককেও গ্রেফতার করা হয়। তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা হত্যা চক্রান্তের অভিযোগে ধৃত নালাকা ডি সিলভা শ্রীলঙ্কা পুলিশের কাউন্টার-টেররিজম ফোর্সের সাবেক প্রধান। পাঁচ দিন জেরার পরেই নালাকা ডি সিলভাকে গ্রেফতার করা হয়।

সম্প্রতি সিরিসেনার বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট ইউনাইটেড পিপলস্‌ ফ্রিডম অ্যালায়েন্স প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্গের ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির সঙ্গে গড়া বর্তমান জোট সরকার থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। এরপরেই শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক সঙ্কট দেখা দেয়। ইউপিএফএ-র সাধারণ সম্পাদক ও কৃষিমন্ত্রী মাহিন্দা অমরাবীরা বলেন, দলের সিদ্ধান্ত পার্লামেন্টকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

বিক্রমাসিঙ্গের সমর্থনে সিরিসেনা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৫ সালে জোট সরকার গঠিত হয়। আর তাতেই প্রায় দশক দীর্ঘ রাজাপাকসে সরকারের অবসান হয়েছিল। সেই রাজাপাকসেই ফের দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে। শুক্রবার তাকে যে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা শপথবাক্য পাঠ করালেন, তিনি একসময় রাজাপাকসের সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি রাজাপাকসের সঙ্গ ত্যাগ করেন।

তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসানোয় দেশে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে। কারণ, সংবিধানের ১৯-তম সংশোধনী অনুযায়ী গরিষ্ঠতা ছাড়া প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্গেকে অপসারণ করা যায় না। বিক্রমাসিঙ্গের আসন সংখ্যা ১০৬, অন্যদিকে রাজাপাকসে ও সিরিসেনার সম্মিলিত আসন সংখ্যা মাত্র ৯৫।

এদিকে লঙ্কার রাজনৈতিক ডামাডোলে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। চীনের সঙ্গে দহরম মহরম রয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের। অন্যদিকে বিক্রমাসিঙ্গে ভারতপন্থী। বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার সঙ্গেও সম্পর্ক মজবুত দিল্লির। ২০১৪-এ রাজাপাকসের ক্ষমতা হারানোর নেপথ্যে অনেকটাই হাত ছিল ভারতের। ফলে এবার রাজাপাকসের ক্ষমতায় ফিরে আসা দিল্লির পক্ষে অশনিসংকেত বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


আরো সংবাদ



premium cement
জামালপুরে হিট স্ট্রোকে মরিচ ব্যবসায়ীর মৃত্যু প্রধানমন্ত্রী ৬ দিনের সফরে বুধবার থাইল্যান্ড যাচ্ছেন রায়গঞ্জে পাটভর্তি ট্রাকে আগুন জামালপুরে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা ৪৬তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার আসন বিন্যাস প্রকাশ ছোট দেশ কাতার অর্থনীতি ও কূটনীতিতে যেভাবে এত এগোল আশুলিয়ায় ছিনতাইকারীর হামলায় আহত নারীর মৃত্যু ‘মুসলিমদের সম্পদ পুনর্বণ্টন’ অভিযোগ মোদির, এফআইআর সিপিএমের প্রথম ধাপের উপজেলা ভোটে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী বিখ্যাত চালকবিহীনবিমানের আবিষ্কারক কটিয়াদীতে আসছেন গাজার গণকবরের ‘বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন’ তদন্তের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের

সকল