শ্রীলঙ্কায় সরকার পরিবর্তনে উদ্বেগে ভারত
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ১৬:৫২
শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক নাটকে নয়া মোড়। সাবেক ‘স্ট্রংম্যান’ মাহিন্দা রাজাপাকসেই এবার দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসলেন। শুক্রবার তাকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রেসিডেন্ট মাইত্রিপালা সিরিসেনা। সিরিসেনার দল শাসক জোট থেকে বেরিয়ে আসার পর সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী পদে মেনে নেয়া ছাড়া অন্য পথ খোলা ছিল না সিরিসেনার সামনে।
রাজাপাকসের প্রধানমন্ত্রী পদে শপথের খবর সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে প্রেস নোট দিয়ে। সরকারি টিভিতেও সেই শপথের অনুষ্ঠান দেখানো হয়েছে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দেশের এক শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে এক ভারতীয় নাগরিককেও গ্রেফতার করা হয়। তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা হত্যা চক্রান্তের অভিযোগে ধৃত নালাকা ডি সিলভা শ্রীলঙ্কা পুলিশের কাউন্টার-টেররিজম ফোর্সের সাবেক প্রধান। পাঁচ দিন জেরার পরেই নালাকা ডি সিলভাকে গ্রেফতার করা হয়।
সম্প্রতি সিরিসেনার বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট ইউনাইটেড পিপলস্ ফ্রিডম অ্যালায়েন্স প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্গের ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির সঙ্গে গড়া বর্তমান জোট সরকার থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। এরপরেই শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক সঙ্কট দেখা দেয়। ইউপিএফএ-র সাধারণ সম্পাদক ও কৃষিমন্ত্রী মাহিন্দা অমরাবীরা বলেন, দলের সিদ্ধান্ত পার্লামেন্টকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
বিক্রমাসিঙ্গের সমর্থনে সিরিসেনা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৫ সালে জোট সরকার গঠিত হয়। আর তাতেই প্রায় দশক দীর্ঘ রাজাপাকসে সরকারের অবসান হয়েছিল। সেই রাজাপাকসেই ফের দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে। শুক্রবার তাকে যে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা শপথবাক্য পাঠ করালেন, তিনি একসময় রাজাপাকসের সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি রাজাপাকসের সঙ্গ ত্যাগ করেন।
তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসানোয় দেশে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে। কারণ, সংবিধানের ১৯-তম সংশোধনী অনুযায়ী গরিষ্ঠতা ছাড়া প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্গেকে অপসারণ করা যায় না। বিক্রমাসিঙ্গের আসন সংখ্যা ১০৬, অন্যদিকে রাজাপাকসে ও সিরিসেনার সম্মিলিত আসন সংখ্যা মাত্র ৯৫।
এদিকে লঙ্কার রাজনৈতিক ডামাডোলে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। চীনের সঙ্গে দহরম মহরম রয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের। অন্যদিকে বিক্রমাসিঙ্গে ভারতপন্থী। বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার সঙ্গেও সম্পর্ক মজবুত দিল্লির। ২০১৪-এ রাজাপাকসের ক্ষমতা হারানোর নেপথ্যে অনেকটাই হাত ছিল ভারতের। ফলে এবার রাজাপাকসের ক্ষমতায় ফিরে আসা দিল্লির পক্ষে অশনিসংকেত বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন চাচ্ছেন বরখাস্তকৃত প্রধানমন্ত্রী
শ্রীলঙ্কার বরখাস্ত হওয়া প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্গে নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্যে শনিবার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন ডাকতে স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
দেশটির কর্মকর্তারা একথা জানান। খবর এএফপি’র।
বিক্রমাসিঙ্গে দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার কারু জয়সুরিয়াকে জরুরি অধিবেশন ডাকার কথা বলেছেন। যদিও আগামী ৫ নভেম্বর বাজেট বিতর্কের জন্যে পার্লামেন্ট অধিবেশন বসবে।
প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে পার্লামেন্টে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে চান।’
উল্লেখ্য দেশটির প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহেক বরখাস্ত ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহেন্দ্র রাজাপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা