মাত্র ১৫ সেকেন্ডেই ছিন্ন-ভিন্ন দেহের স্তুপ
- হিন্দুস্তান টাইমস ও বিবিসি
- ২০ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৩০, আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৫৮
চোখের নিমিষেই যেন সব ঘটে গেলো। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতভম্ব মানুষগুলোর বর্ণনা অনুযায়ী, মাত্র ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড সময় লেগেছে! আর তারপরই রক্তাক্ত পুরো রেল স্টেশন। ছিন্ন-ভিন্ন দেহরে স্তুপ। যে মানুষটি কিছুক্ষণ আগেও প্রিয়জনের সাথে হাসি-ঠাট্টায় মেতে ছিল, তার ক্ষত-বিক্ষত দেহটি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
ঘটনা ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসর শহরের। শুক্রবার সন্ধ্যায় জোরা ফটকের কাছে দশেরার অনুষ্ঠানে রাবণের কুশপুত্তলিকায় আগুন দেয়ার সময় চলন্ত ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে শতাধিক মানুষ হতাহত হয়। নিহতের সংখ্যা ৬২ ছাড়িয়েছে।
অমৃতসরের পুলিশ কমিশনার শুধাংশু শেখর বলেছেন, কমপক্ষে এক শ' মানুষ আহত হয়েছে।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬০ জনের মতো ভর্তি হয়েছে।
স্থানীয় সাংবাদিক রভিন্দর সিং রবীন বলছেন, রেললাইনের ধারে দাঁড়িয়ে যখন বহু মানুষ দশেরা উৎসব দেখছিলেন, সেই সময়েই ট্রেন সেখানে এসে পড়ে।
তিনি জানান, কুশপুতুলে আগুন দেয়ার সময়ে মাইকে ঘোষণা করা হয়, দর্শকরা যেন পিছন দিকে সরে যান।
সেই কথা মতো মানুষ পিছনের একটা রেললাইনের ওপরে চলে গিয়েছিল, তখনই সেখান দিয়ে একটি দ্রুতগামী ট্রেন চলে যায়।
যেসব ছবি স্থানীয় সাংবাদিকরা পাঠিয়েছেন, তা ভয়াবহ। শরীরের নানা অংশ রেল লাইনের আশেপাশে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, ''মাত্র ১০-১৫ সেকেন্ডের মধ্যে ট্রেনটি এলো এবং মানুষগুলোতে ছিন্ন-ভিন্ন করে ফেলে রেখে গেলো। চারদিকে লাশের স্তুপ।''
একজন পুলিশ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, "প্রচুর বাজি ফোটনোর শব্দ হচ্ছিলো, ফলে ট্রেন আসার শব্দ মানুষ শুনতে পায়নি।"
রাবন-দহনের সময়ে বহু মানুষ সেটার ভিডিও করছিলেন মোবাইল ফোনে।
এরকমই একটি ভিডিও বিবিসি'র হাতে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, রাবণের কুশপুতুলে আগুন দেয়া হয়েছে, আর তার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই একটি ট্রেন বেশ দ্রুতগতিতে চলে গেল।
ওই ট্রেনটি পাঠানকোটের দিক থেকে আসছিল বলে জানা গেছে।
স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলি প্রত্যক্ষদর্শীদের যে বয়ান দেখাচ্ছে, সেখানে বলতে শোনা যাচ্ছে, প্রতি বছরই এই জায়গায় রাবণ পোড়োনো হয় কিন্তু ওই সময়টায় ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে, বা অতি ধীরে ট্রেন যায়। কিন্তু এবারে ট্রেনটি দ্রুতগতিতে চলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী অমিত কুমার বিবিসিকে জানিয়েছেন, "বহু মানুষ রেল লাইনের ওপরেই ভীড় করে দাঁড়িয়েছিলাম প্রতি বছরের মতোই। রাবন দহন দেখছিলাম, হঠাৎ করেই জোরে ট্রেনটা এসে পড়ল লোকের ওপর দিয়ে চলে গেল। কোনো হর্ণ বাজায়নি, ট্রেনের গতিও কমায়নি একটুও।
বন্ধুদের সাথে রাবণ দহন দেখতে জোড়া ফটকে গিয়েছিলেন রবি। বিবিসিকে তিনি বলেন, তার এক বন্ধুকে দুর্ঘটনার পর থেকে খুঁজে পাচ্ছেন না।
"এত জোরে ট্রেনটা চলে এল, মানুষ সরে যাওয়ার সময়ই পায় নি। হর্ণও দেয়নি।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং টুইট করে জানিয়েছেন, তিনি অমৃতসরে পৌঁছচ্ছেন ব্যক্তিগতভাবে উদ্ধার কাজ তদারকি করতে। নিহতদের পরিবারের জন্য ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা