২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুর্গাপুজায় দেবীর নামে প্রাণী উৎসর্গ দেয়া হয় যে মন্দিরে

মহিষ বলি দেয়ার আগ মুহুর্তে। - এএফপি

বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজা। এই দুর্গাপুজায় বিভিন্ন ধরণের প্রথা প্রচলিত হয়ে আসছে আবহমানকাল থেকেই। ভারতের আসাম রাজ্যের গোহাটিতে তেমনি একটি প্রথা হচ্ছে দেবী দুর্গার উদ্দেশ্যে প্রাণী বলিদান। এখানকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দুর্গাপুজার সময় বিভিন্ন প্রাণী বলি দিয়ে থাকেন।

আসামের গোহাটির রাণী গ্রামে বুড়ি গোসানি দুর্গা মন্দিরে বিভিন্ন ধরণের প্রাণী বলি দেয়া হয়ে থাকে। এই মন্দিরে মহিষ, পাঠা, হাঁস ও কবুতরের মত প্রাণী দুর্গাপুজা উপলক্ষে উৎসর্গ করা হয়।

এ উপলক্ষে বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে এএফপি। একটি ছবিতে দেখা যায়, একটি মহিষকে বলি দেয়ার স্থানে বাশঁ দিয়ে চারজন চেপে ধরেছে আর মাথায় অন্য একজন ধরে রেখেছেন। অন্য একজন খড়গ হাতে মহিষটিকে বলি দেয়ার জন্য প্রস্তুত।

এই জীবিত প্রাণীগুলো দেবী দুর্গার নামে উৎসর্গ করা হয় যাতে দেবী দুর্গা এই সম্প্রদায়ের উপর সন্তুষ্ঠ থাকে ও তাদেরকে আশীর্বাদ দেয়। যদিও বিভিন্ন প্রাণী অধিকার সংগঠনগুলো এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।

 

আরো দেখুন : দুর্গাপূজা শুরু আজ মহাষষ্ঠী

খোকন বড়ুয়া, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে আজ। দেবী দুর্গাকে ভক্তিভরে বরণ করে নেবেন সারা দেশের প্রায় তিন কোটি হিন্দু নরনারী। মন্দিরের পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে চলছে এখন উৎসবের আমেজ। ঢাকের বোল কাঁসার ঘণ্টা, শাঁখের ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠবে সারা দেশের পূজামণ্ডপ।

বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া গত ৮ অক্টোবর সোমবার সারা দেশে নানা আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে। মহালয়ার মাধ্যমে দেবী দুর্গা পা রাখেন মর্ত্যলোকে।
আজ ১৫ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে দশভুজা দেবী দুর্গার অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে মূল পুজোর আনুষ্ঠানিকতা। গতকাল (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ছিল দেবীর বোধন। আজ মহাষষ্ঠী, ১৬ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ১৭ অক্টোবর মহাষ্টমী ও কুমারী পুজো, ১৮ অক্টোবর মহানবমী এবং ১৯ অক্টোবর বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনের দুর্গোৎসব। পাঁচ দিনব্যাপী মণ্ডপে চলবে পূজা-অর্চনা, ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, মহাপ্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যায় আরতি প্রতিযোগিতা।
পুরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি এই পুজোর আয়োজন করায় দেবীর এ পুজোকে বাসন্তী পুজোও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে রামচন্দ্র দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিলেন। তাই শরৎকালের এই পুজোকে হিন্দুধর্মমতে অকালবোধনও বলা হয়। 
হিন্দু পঞ্জিকা মতে এবার দেবী দুর্গা আসছেন ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে, যাবেন দোলায় (পালকি) চেপে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত রঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, ‘শাস্ত্র অনুযায়ী দেবী ঘোড়ায় চড়ে এলে তার ফল হয় ‘ছত্রভঙ্গসরঙ্গম’, অর্থাৎ সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংসারিক ক্ষেত্রে অস্থিরতার প্রকাশ পাবে। রাজনৈতিক উত্থান, পতন, সামাজিক স্তরে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, দুর্ঘটনা ও অপমৃত্যুর প্রভাব বাড়বে। ‘আর দেবী দোলায় চেপে বিদায় নিলে ফল হয় ‘দোলায়াং মরকং ভবেৎ’। অর্থাৎ দেখা দেবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয়।’
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, এবারো নগরীর ওয়াইজঘাট, তুরাগ, পোস্তগলা, ডেমরা ও শ্যামবাজার ঘাটে হবে প্রতিমা বিসর্জন। ১৯ অক্টোবর বেলা সাড়ে ৩টায় ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রতিমাগুলো নিয়ে হবে শোভাযাত্রা। নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রধান র্যালিটি যাবে নগরীর ওয়াইজঘাটে। রাত ১০টার মধ্যে সব ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছে পূজা কমিটি।
এবার সারা দেশে ৩১ হাজার ২৭২টি পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপিত হবে। গত বছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার ৭৭টি। এবার বেড়েছে এক হাজার ১৯৫টি। এর মধ্যে ঢাকায় ছয় হাজার ৮০৪টি, চট্টগ্রামে চার হাজার ৫০৬টি, সিলেটে দুই হাজার ৩৪১টি, খুলনায় চার হাজার ৮৮৩টি, রাজশাহীতে তিন হাজার ৫৪২টি, রংপুরে পাঁচ হাজার ৩৭১টি, বরিশালে এক হাজার ৭২৪টি ও ময়নসিংহে দুই হাজার ১০১টি। একমাত্র সিলেট বিভাগ ছাড়া বাকি সাতটি বিভাগেই পূজামণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে।
শারদীয় দুর্গোৎসব ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে আগামী ১৯ অক্টোবর সরকারি ছুটি থাকবে। বিজয়া দশমীতে রাষ্ট্রপতি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। ওই দিন বেলা ১১টায় হিন্দুধর্মাবলম্বী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করবে বিশেষ নিবন্ধ। 
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সারা দেশে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
সারা দেশের পূজামণ্ডপে পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও পূজামণ্ডপে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন। 
এদিকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণীতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বাসস জানায়, রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ এক বাণীতে দেশের চিরাচরিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন রেখে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। 
তিনি বলেন, ‘বাঙালি হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। প্রতি বছরের মতো এ বছরও সারা দেশে যথাযথ উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সাড়ম্বরে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।’ 
অপর এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ দেশের সব নাগরিকের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন। 
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি। ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এ আপ্ত বাক্যে উজ্জীবিত হয়ে আমরা সবাই এক সাথে উৎসব পালন করব।


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১ খাবারের সন্ধানে বসতবাড়িতে হরিণ, মহামায়ায় অবমুক্ত সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ মাহমুদের লাশ দেশে ফিরেছে ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: ড. সুকোমল বড়ুয়া

সকল