২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

একটি পরকীয়া প্রেমে দু’টি খুনের রোমহর্ষক কাহিনী

ভারত
ব্যস্ত রাস্তায় কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হল জি রমেশ নামে বছর চব্বিশের যুবককে। - ছবি: সংগৃহীত

পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে দুই যুবকের দ্বন্দ্ব। এর জেরে একজনকে খুন করে আরেকজন। আর এ মামলায় জেল থেকে বেরোনোর পরে খুনিকে হত্যা করে বদলা নিল নিহতের পরিবার।

গত বুধবার ভারতের হায়দরাবাদের ব্যস্ত রাস্তায় কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হল জি রমেশ নামে বছর চব্বিশের যুবককে। নিহত যুবক মহেশ গৌড় নামে আরেক যুবককে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত।

জানা যায়, নৃশংস এই ঘটনার পিছনে রয়েছে পরকীয়া প্রেম ও বিশ্বাসঘাতকতার রোমহর্ষক কাহিনী।

২০১৭ সালে স্থানীয় এক বিবাহিত মহিলার প্রেমে পড়েছিল রমেশ ও মহেশ দুজনেই। পথের কাঁটা সরাতে ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর মহেশকে খুন করার ষড়যন্ত্র করে প্রতিবেশী রমেশ। সে দিন কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে জুম্মেরাত বাজার থেকে মহেশকে নিয়ে সে কাডতালের মসিগন্ডি মন্দিরে পূজা দিতে যায়। ফেরার পথে গাড়িতে মদ্যপানের আসর বসে। মহেশকে মাতাল করার পরে গাড়িতে বসেই শামসাবাদের কাছে তার গলায় ছুরি চালায় রমেশ। পরে মুচিনতালে গাড়ি থেকে তার লাশ ফেলে দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।

অপরাধ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেও বিফল হয় রমেশ। সার্ভিস সেন্টারে তার গাড়ির ভিতর রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশকে জানান গ্যারাজ কর্মীরা। গাড়ি ফেরত নিতে এলে হাতেনাতে ধরা পড়ে রমেশ। জেরায় সে খুনের কথা স্বীকার করে এবং তার থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় হত্যাকাণ্ডে তার সঙ্গী ঢুলপেটের পি নরেশ (২১), জিয়াগুডার এম শিভা (২৬) ও জি ইয়াদাইয়াকে (৬০)।

বিচারে কারাদণ্ড হলেও কয়েক মাস পরে জামিনে ছাড়া পায় রমেশ।

মহেশের স্বজনরা যেন তাকে খুঁজে না পায়, সেজন্য সে এলাকা ছেড়ে শহরের বাইরে পাতানচেরুতে এসে বসবাস শুরু করে।

কিন্তু সেখানেও তাকে খুঁজে বের করে মহেশের পরিবার। বুধবার সে আদালতে হাজিরা দিতে আসবে জানতে পারে নিহত মহেশের বাবা ও চাচা কিষাণ ও লক্ষ্মণ গৌড়। রমেশ আদালত থেকে বেরিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পরই তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন তারা।

এ সময় বেশ কিছু লোক তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন তারা।

এমনকি একটি ভিডিও ‍ফুটেজে দেখা গেছে, এ সময় পুলিশের একটি টহল যান ঘটনাস্থল অতিক্রম করছে, কিন্তু তারাও এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেননি।

রমেশের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযুক্তরা ঘটনাস্থলে অস্ত্র ফেলে দিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে।

শামসাবাদ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার এন প্রকাশ রেড্ডি টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, নারীঘটিত কারণে গত বছরের ডিসেম্বরে শামসাবাদে মহেশ খুনের প্রধান আসামি ছিলেন রমেশ। তাই তিনি এ হত্যাকাণ্ডকে পূর্বের ঘটনার প্রতিশোধই বলছেন।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

আরো পড়ুন :
সমকামিতার পর পরকীয়াকেও বৈধতা দিল ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
পরকীয়া ফৌজদারি অপরাধ নয়। ইংরেজ শাসনকালে তৈরি এই আইনের ৪৯৭ ধারা অসাংবিধানিক। রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এই আইন স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর। মহিলাদের স্বাতন্ত্র্য খর্ব করে। স্বামী কখনই স্ত্রীর প্রভূ বা মালিক হতে পারেন না।

ব্রিটিশদের তৈরি করা ১৮৬০ সালের আইনকে চ্যালেঞ্জ করে একটি মামলার প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের এই রায়। রায়ের পর আবেদনকারীর আইনজীবী রাজ কালিশ্বরম বলেন, ‘এই রায় ঐতিহাসিক। আমি খুশি।’

এর আগে ভারতীয় সুপ্রীম কোর্ট সমকামিতাকেও বৈধতা দেয়।

১৮৬০ সালে তৈরি ওই আইনের ৪৯৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি কোনও মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করলে এবং ওই মহিলার স্বামীর অনুমতি না থাকলে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে। এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন জনৈক যোশেফ শাইন।

৪৯৭ ধারাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে রায়দানের সময় প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘এই আইন জোর করে চাপিয়ে দেওয়া এবং স্বেচ্ছাচারিতার সমান। এখন এটা বলার সময় হয়েছে যে, কোনও মহিলার স্বামী তার প্রভূ বা মালিক হতে পারেন না।’ কোনও নারী কখনই স্বামী বা কারও সম্পত্তি হতে পারেন না বলেও পর্যবেক্ষণ সাংবিধানিক বেঞ্চের।

রায়ে আরও বলা হয়েছে, কারও যৌনতার অধিকারকে আইনি পরিসরে বেঁধে দেওয়া ঠিক নয়। কাউকে সমাজের ইচ্ছানুযায়ী ভাবতে এবং কাজ করতে বাধ্য করার অর্থ তার স্বাধীনতা খর্ব করা। এটা মহিলাদের অধিকার রক্ষা এবং সমানাধিকারের পরিপন্থী।

আইনজীবী কালিশ্বরমের মামলার প্রেক্ষিতে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠিত হয়। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি রোহিংটন ফলি নরিম্যান, বিচারপতি এ এম খানউলকর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র। গত পয়লা আগস্ট শুনানি শুরু হয়। সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল পিঙ্কি আনন্দ। মামলাকারীর পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী রাজ কালিশ্বরম এবং সুবধত এমএস। গত পয়লা অগস্ট মামলার শুনানি শুরু হয়। শেষ হয় আট আগস্ট। ওই দিনই ২৭ সেপ্টেম্বর রায়দানের দিন নির্ধারিত করে দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।

সমকামিতাকে বৈধতা দিলো ভারতের আদালত
বিবিসি, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:২৮
সমকামিতা ভারতে আর অপরাধ নয় বলে রায় দিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।

সমকামিতাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বর্ণনা করা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা বাতিল করে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।

ব্রিটিশ আমলের এই আইনটির সুবাদে ‘অপ্রাকৃতিক যৌনতা’র অপরাধে ভারতে কোনো ব্যক্তির ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারতো।

১৮৬১ সালের জারি করা ধারাটি ২০০৯ সালে সমকামিতা অপরাধ নয় বলে রায় দিয়েছিল দিল্লির হাইকোর্ট। তবে তার বিরুদ্ধে আপীল করা হলে ২০১৩ সালে ওই আইনটি বহাল করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ। নিজেদের সেই আদেশ আজ বাতিল করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ভারতে এলজিবিটি শ্রেণীভুক্ত পাঁচজন ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা তাদের আবেদনে বলেছিলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির সেকশন ৩৭৭ এমন একটি আইন যে কারণে সব সময় তাদের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতে হয় - কারণ তাদের যৌনতার দোহাই দিয়ে পুলিশ যখন খুশি তাদের গ্রেফতার করতে পারে।

গত জুলাই মাসে তাদের আবেদনের শুনানি শুরু করেন সুপ্রিম কোর্ট, যা দেশটিতে স্বাধীনতা এবং গোপনীয়তার বিতর্ক তৈরি করে।

শুনানির একপর্যায়ে একজন বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘যৌনতার কারণে কাউকে ভীতির মধ্যে জীবনযাপন করা উচিত নয়।’ যা ভারতের সমকামীদের মধ্যে আশাবাদের সৃষ্টি করে।

সমকামিতাকে কোনো অপরাধ হিসাবে গণ্য না করার জন্য ভারতে অনেকেই দাবি তুলেছেন।

যদিও এখনো ভারতে সমকামিতা নিয়ে সংকোচ রয়েছে এবং অনেকেই এটিকে বেআইনি বলে গণ্য করে।

‘সেকশন ৩৭৭’ বহাল থাকা না থাকার প্রশ্নে ২০১৬ সালে পুনরায় শুনানি গ্রহণ করতে সম্মত হন আদালত। তিনজন জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, এটা সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে তারা মনে করেন।

‘সেকশন ৩৭৭’ কী?
এটি ১৫৭ বছর পুরনো ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইন, যেটি ১৮৬১ সালে জারি করা হয়।

সেখানে কিছু যৌন অপরাধকে অস্বাভাবিক অপরাধ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, যার জন্য ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

যেখানে বলা হয়েছে, ‘স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে মানুষ, নারী বা কোনো পশুর সঙ্গে যৌন মিলন’ করা হলে তা শাস্তিযোগ্য হবে।

অ্যাকটিভিস্টরা বরাবরই অভিযোগ করছেন, দেশের সমকামী এবং তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়কে হয়রানি করতে আইনটি ব্যবহার করা হচ্ছে।

সমঅধিকার কর্মীরা বলছেন, এ ধরণের একটি আইন থাকা মানেই প্রমাণ করে যে, যৌনতার ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বৈষম্য করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৩৭ বাংলাদেশে নতুন করে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা হিট অ্যালার্ট নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা ভান্ডারিয়ায় পিকআপ চাপায় বৃদ্ধ নিহত হোচট খেল লিভারপুল, পিছিয়ে গেল শিরোপা দৌড়ে যোদ্ধাদের দেখতে প্রকাশ্যে এলেন হামাস নেতা সিনওয়ার! ফের পন্থ ঝড়, ঘরের মাঠে গুজরাটকে হারাল দিল্লি ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র গ্রেফতারের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ আরো বেড়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে দুর্নীতি, পুতিনের নির্দেশে গ্রেফতার রুশ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী!  আমেরিকানরা কি ধর্ম থেকে সরে যাচ্ছে?

সকল