২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

এবার নওয়াজের মহিষ নিলামে তুললেন ইমরান

আটটি দামি মহিষ নিলামে তুলে বিক্রি করেন ইমরান খান। - ছবি: এএফপি

পাকিস্তানে ইমরান খানের সরকার দেশটির সরকারি কোষাগার সমৃদ্ধ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আর এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের আটটি দামি মহিষ বিক্রি করে দিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

মহিষগুলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে রাখা হয়েছিল। এগুলো ইমরান খানের পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ ও তার পরিবারের দুধের উৎস ছিল।

নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী কথিত ব্যয় সংকোচন বা কৃচ্ছ্র সাধনপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মহিষগুলো বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

নির্বাচনী প্রচারে দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের অঙ্গীকার করে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে কথিত সরকারি ব্যয় সংকোচনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন ইমরান। তার পদক্ষেপ

প্রশংসার পাশাপাশি তার পদক্ষেপকে সমালোচনাও করেছেন অনেকে।।

সমালোচকেরা বলছেন, সরকারি ব্যয় সংকোচনের নামে ইমরান যা করছেন, তা আসলে অনেকটা লোক দেখানো বিষয়। তিনি মুখে ব্যয় সংকোচনের কথা বলছেন অথচ মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরত্বের পথে তিনি হেলিকপ্টার ব্যবহার করছেন। আর এটা হয়েছিল গত আগস্ট মাসেই।

নওয়াজের মহিষগুলো নিলাম বিক্রি করা হয়। নিলাম নওয়াজের অনেক সমর্থকও অংশ নেন।

নিলামে আটটি মহিষের দাম ওঠে ১৯ হাজার ডলার বা সাড়ে ২৩ লাখ পাকিস্তানি রুপির মতো। এই অর্থ সরকারি কোষাগারে যাচ্ছে।

গত ১০ দিনে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার সরকারি সম্পদ বিক্রির ঘটনা ঘটল। মহিষ বিক্রির আগে বুলেটপ্রুফ গাড়ি বিক্রি করা হয়েছিল। যেটি বিক্রি করা হয় ৬ লাখ ডলারে।

হাসান লতিফ নামের এক ব্যক্তি ২৫০০ ডলারে একটি মহিষ কেনেন। তিনি বিবিসি উর্দু বিভাগকে বলেন, তার একটি বাণিজ্যিক দুগ্ধ খামার আছে। খামারে ১০০ টির বেশি মহিষ আছে। কিন্তু ঐতিহাসিক রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে তার নেতা নওয়াজের একটি মহিষ কিনেছেন তিনি। নওয়াজের সম্মানেই মহিষটি কিনছেন। সুযোগ পেলে এই মহিষটি নওয়াজকে উপহার দেবেন বলেও জানান তিনি।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা যে দাম আশা করেছিলাম, তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে মহিষগুলো। আমরা এতে খুশি।’

অবশ্য অনেকে নিলাম প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ বলছেন, ক্রেতারা ভুয়া। এত দাম হতে পারে না মহিষগুলোর। রাওয়ালপিন্ডি থেকে এক ক্রেতা এই নিলাম প্রকিয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, তারা যে দাক হাকিয়েছেন তার অর্ধেক দামে এরকম মহিষ বাজারে পাওয়া যায়

তবে দাম বেশি পাওয়ায় সরকার খুশি। দেশের অর্থনীতি ঠিক রাখতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ইমরান খানের নতুন সরকারকে। নানা উপায়ে তারা খরচ কমানোর চেষ্টা করছে।

 

আরো পড়ুন: শতাধিক সরকারি গাড়ি নিলামে তুললেন ইমরান খান
দ্য ডন, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:৩২


অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসবহুল সরকারি গাড়ি নিলামে তুলেছেন ইমরান খান - ছবি : সংগ্রহ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শতাধিক বিলাসবহুল গাড়ি বিক্রির জন্য নিলামে তুলেছে দেশটির তেহরিকই-ই ইনসাফ পার্টির সরকার। এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে পাঁচটি বুলেট প্রুফ কারসহ বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জের মতো দামী ব্রান্ডের গাড়ি। ইমরান খান সরকারের কঠোরতা নীতির অংশ হিসেবে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বিলাসবহুল ও অপ্রয়োজনীয় গাড়িগুলোই শুধু বিক্রি করা হচ্ছে এই নিলামে। নিলামে তোলা গাড়ির সংখ্যা মোট ১০২টি। পিটিআই দলের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জানানো হয়েছে, নিলামে তোলা গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে ২০০৫ মডেলের ৫ হাজার সিসি মার্সিডিজ বেঞ্জ, যেটি বিক্রি হয়েছে এক কোটি ৪৫ লাখ পাকিস্তানি রুপিতে। এছাড়া ভি৮ মডেলের একটি ল্যান্ডক্রুজার বিক্রি হয়েছে দুই কোটি ৭৪ লাখ রুপিতে।


পিটিআইয়ের টুইটারে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কঠোরতা নীতির অধীনে বিক্রিত গাড়ির এই অর্থ পাকিস্তানের জনগনের কল্যাণে ব্যয় হবে। এই প্রচেষ্টা পাকিস্তানের নেতৃত্বের প্রচলিত ধারণায় বিপ্লব আনবে।

জানা গেছে, বিক্রির জন্য নিলামে তোলা গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে ৮টি বিএমডব্লিউ যার মধ্যে তিনটি ২০১৪ মডেল, তিনটি ৫ হাজার সিসি ও দুইটি ৩ হাজার সিসি এসইউভি ২০১৬ মডেল। এছাড়া আরো চারটি মার্সিডিজ বেঞ্জ রয়েছে তালিকায়, যার মধ্যে ২টি ৪ হাজার সিসি বুলেট প্রুফ গাড়ি।

এছাড়া আছে ১৮টি টয়োটা গাড়ি যার মধ্যে একটি ২০০৪ লেক্সাস, একটি ২০০৬ লেক্সাস এসইউভি এবং দুটি ২০০৪ ল্যান্ড ক্রুজার। এর বাইরে আরো আছে চারটি বুলেট প্রুফ ল্যান্ড ক্রুজার। এছাড়া হোন্ডা ও সুজুকি মডেলের গাড়ি রয়েছে ৪টি। একটি হিনো ব্রান্ডের বাস।

নিলামে তোলা গাড়িগুলোর  মধ্যে ৬১টি বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ২১ গাড়ির নিলাম বাতিল করেছে সরকার।

আরো পড়ুন: ২৮ লাখ বাঙালিকে নাগরিকত্ব দেবে পাকিস্তান

পাকিস্তানে জন্ম নেয়া বাঙালি ও আফগান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। রোববার করাচির গভর্নর হাউজে বাঁধের জন্য তহবিল সংগ্রহের এক অনুষ্ঠানে ইমরান খান এ ঘোষণা দেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি ও আফগান শরণার্থীদের সন্তান এবং অভিবাসী শ্রমিকরা পাকিস্তানের পাসপোর্ট পাবেন। তিনি বলেন, শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ না থাকায় করাচির নিম্ন শ্রেণির মানুষজন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।


ইমরান বলেন, এই অন্যায় বন্ধ হওয়া দরকার। বঞ্চিত শ্রেণির মানুষজন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে, এটার ‍দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার।

করাচির উন্নয়ন ও সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন ইমরান খান। তিনি বলেন, দরিদ্র এবং সুবিধাবঞ্চিতদের উন্নয়নে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের সামনে চীনের অনুকরণীয় মডেল আছে, যেখানে সাত কোটি মানুষ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে।

ইমরান বলেন, বিচারহীনতার কারণে শহর এলাকায় অপরাধ হচ্ছে। তিনি বলেন, আবর্জনা ব্যবস্থাপনা শহরের জন্য একটি বড় বিষয়।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য সিন্ধু প্রশাসনকে দুই মাসের সময়ও বেঁধে দিয়েছেন ইমরান খান।

পাকিস্তানে প্রায় ২৮ লাখ বাঙালি বসবাস করেন। এদের মধ্যে ১৫ লাখই আবার করাচিতে বসবাস করেন। তবে এই বিপুল সংখ্যক বাঙালিকে এখনও নাগরিকত্ব দেয়নি পাকিস্তান। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তবে তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল