২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নওয়াজের প্যারোল শেষ হচ্ছে সোমবার

প্যারোলে মুক্তি পেয়ে স্ত্রীর জানাজা ও দাফনের অংশ নেন নওয়াজ শরিফ - ছবি : সংগ্রহ

স্ত্রী কুলসুম নওয়াজের মৃত্যুর পর পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাঁচ দিনের প্যারোল শেষ হচ্ছে সোমবার। একই সাথে আজ প্যারোল শেষ হবে নওয়াজের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ও জামাতা ক্যাপ্টেন(অব.) সফদরের।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় কুলসুম নওয়াজের। লন্ডন থেকে দেশে লাশ আনার পর প্যারোলে মুক্তি পান নওয়াজ শরিফ, তার মেয়ে ও জামাতা। প্রথমে ১২ ঘণ্টার প্যারোল দেয়া হলেও পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে পাঁচ দিন করা হয়। সোমবারাই আবার তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে কারাগারে।

তবে শরিফ পরিবারের পক্ষ থেকে আরো পাঁচ দিন প্যারোল বৃদ্ধির একটি আবেদন করার কথা শোনা যাচ্ছে। যদিও প্রাদেশিক সরকার কিংবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এমন কোন আবেদন এখনো পায়নি। প্যারোল বৃদ্ধি করা না হলে সোমবার বিকেল পাঁচটার পর আবার তাদের রাওয়ালপিন্ডি কেন্দ্রিয় কারাগারে পাঠানো হবে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, নওয়াজ পরিবারের পক্ষ থেকে সোমবারই প্যারোল বৃদ্ধির আবেদন করা হবে এবং বিষয়টির মানবিক দিক বিবেচনা করে তা গ্রহণ করবে সরকার।

আরো পড়ুন:

সঙ্কটে হাল ধরেছিলেন যে গৃহবধূ
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে এক বছরের লড়াইয়ের পর অবশেষে হার মেনেছেন পাকিস্তানের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী (বর্তমানে কারাবন্দী) নওয়াজ শরিফের স্ত্রী কুলসুম নওয়াজ। লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলবার। স্ত্রীর মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন নওয়াজ। এক মাস আগে আদালতের রায়ের পর নওয়াজ অসুস্থ স্ত্রীকে লন্ডনে রেখে দেশে আসেন, তার সাথে আসেন কন্যা মরিয়মও। জানাই ছিলো যে, দেশে আসা মাত্র গ্রেফতার হবেন। তবু দেশ থেকে পালিয়ে থাকেননি নওয়াজ শরিফ।

এয়ারপোর্টেই গ্রেফতার করা হয় দুজনকে। সেই থেকেই ইসলামাবাদের আদিয়ালা কারাগারে আছেন বাপ-কন্যা। কারাবন্দী অবস্থাতেই শুনলেন ৪৭ বছরের সঙ্গী চলে গেছে পরকালে।


নওয়াজের স্ত্রী ও তিনবারের সাবেক ফার্স্টলেডি কুলসুম নওয়াজের মূল পরিচয় গৃহবধূ। মূলধারার রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় ছিলেন না কখনোই, যদিও দল ও দেশের ক্রান্তিলগ্নে নিজের সেই গৃহবধূ ইমেজ থেকে ঠিকই বের হয়ে এসেছিলেন এই নারী। ১৮ বছর আগে প্রথমবারের মতো জাতির সামনে নতুন এক পরিচয়ে হাজির হন বেগম কুলসুম নওয়াজ। সামরিক শাসক পারভেজ মুশাররফ ক্ষমতা দখল করার পর। সে সময় দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে একটি কর্মসুচি দিয়েছিলো নওয়াজ শরিফের দল। নওয়াজ তখন নির্বাসনে, কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেয়ার কথা কুলসুম নওয়াজের। কিন্তু আগের রাত থেকেই তার বাড়ি ঘিরে রাখে পুলিশ। কিন্তু অনেক কৌশলে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান কুলসুম। গাড়ি করে কর্মসূচি স্থলের দিকে যাওয়ার সময় তাকে আটকে দেয় পুলিশ।

গাড়ি থেকে নামতে বলা হলে গাড়ির দরজার লক করে দেন তিনি। অনেক চেষ্টা করেও পুলিশ তাকে বের করতে পারেনি গাড়ি থেকে। শেষে ক্রেনের সাহায্যে গাড়িসহ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে। দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা সেদিন সামরিক শাসকদের পুলিশ বাহিনীর সাথে দৃঢ়তা দেখিয়েছে কুলসুম নওয়াজ।

পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উর্দু সাহিত্যে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেয়া কুলসুম নওয়াজের জন্ম এক কাশ্মিরি পরিবারে। তার বাবা ছিলেন চিকিৎসক আর দাদা ছিলেন কিংবদন্তী গামা পালোয়ান। সাধারণত ফার্স্টলেডি অবস্থায় দেশের রাজনৈতিক ইস্যুগুলো এড়িয়ে চলতেন কুলসুম নওয়াজ। কিন্তু যখনই তার পরিবারের ওপর আঘাত আসতে শুরু করে নিজেকে আর গুটিয়ে রাখেননি এই গৃহিনী।

দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পারভেজ মোশারফ সরকারের বিপক্ষে তার উদ্যোগেই গঠিত হয়েছিলো ‘অ্যালায়্ন্সে ফর দ্য রিস্টোরেশন অব ডেমোক্র্যাসি(এআরডি)। দেশের প্রধানপ্রধান দলগুলো একত্রিত হয়েছিলো সেই জোটে। এবছর আদালত কর্তৃক নওয়াজ শরিফ অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার পর আবার রাজনীতির মাঠে আসেন কুলসুম। নওয়াজের শূন্য আসে প্রার্থী হন তিনি; কিন্তু নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করার আগেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন, ধরা পড়ে ক্যান্সার। চলে যেতে হল লন্ডন। বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন তিনি স্বামীর আসন থেকে।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, নওয়াজ শরিফের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বড় অবদান আছে কুলসুম নওয়াজের। সরাসরি রাজনীতি না করলেও সব সময় স্বামীকে পাশ থেকে সহযোগিতা করেছেন, আবার যখন পরিবারের ওপর আঘাত এসেছে কিংবা দেশে গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে ঠিকই মাঠে নেমেছেন নেতৃত্ব দিতে।

স্ত্রীর মৃত্যুতে যদিও নওয়াজ শরিফ প্যারোল চাননি বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের জিও নিউজ। কারা কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও প্যারোল আবেদনে সই করাতে পারেননি নওয়াজকে। বাবার মতোই কন্যা মরিওম নওয়াজও প্যারোল আবেদনে স্বাক্ষর করেননি।

অবশেষে নওয়াজের ছোট ভাই ও পাকিস্তান মুসলিম লিগের(এন) প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ নওয়াজ ও মরিয়মের পক্ষে প্যারোল আবেদন করেন। পানামা পেপারর্স কেলেঙ্কারিতে নাম আসার পর লন্ডনে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় কারাদণ্ড হয় নওয়াজ শরিফ ও তার কন্যা মরিয়মের। নওয়াজ শরিফ কেন প্যারোল চাননি সেই প্রশ্নের জবাব তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে ক্ষোভ থেকেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
গফরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান

সকল