১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুসলিম ছেলেদের হাত থেকে ‘বাঁচতে’ হিন্দু মেয়েদের জন্য ১০ পরামর্শ!

ভারত
প্রতিকী ছবি - ছবি: সংগৃহীত

‘মুসলিম ছেলেরা তোমাদের লোভ দেখাতে পারে। খবরদার সেই লোভে পা দেবে না’- এমন বাক্য লিখেই এখন লিফলেট বিলি করছে ভারতের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)। এই লিফলেটে লেখা রয়েছে মুসলিম ছেলেদের ‘বিছানো ফাঁদ’ থেকে ‘রেহাই পেতে’ হিন্দু মেয়েদের কী করতে হবে, কী করতে হবে না।

সূত্রের খবর, বিলি হওয়া এই লিফলেটেই একটি স্থানে বিবাহিত হিন্দু মেয়েদের সারাক্ষণ শাঁখা-সিঁদূর পরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এতে নাকি হিন্দুত্বের রক্ষা হবে। এমনকী, কোনো মুসলিম ছেলের সাথে হিন্দু মেয়েদের বিয়ে হলে নাম না পরিবর্তনের জেদ বজায় রাখারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

কোনো হিন্দু মেয়ের শ্বশুরবাড়ি যদি মুসলিম হয় তাহলে সারাক্ষণ হিন্দু পূজা-অর্চনা পালন করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন হিন্দু সংস্কার বজায় রাখারও কথা বলা হয়েছে। মুসলিম উৎসব না মেনে নিজের হিন্দু উৎসব পালন করার কথা নাকি লেখা হয়েছে এই লিফলেটে।

বলতে গেলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তৈরি করা এই লিফলেটে আগাগোড়াটাই মুসলিমবিদ্বেষে ভর্তি। যার মূল কথাই হল হিন্দু মেয়েরা হিন্দু ছেলেদেরই বিয়ে করুক অথবা মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করলেও তাকে ধর্ম পরিবর্তন করে হিন্দু হতে বলুক।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই লিফলেট নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মতো স্থানে যেখানে জাত-পাত বা ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি হয় না সেখানে এই কট্টর হিন্দুত্বের প্রচারে উসকানির অভিযোগ উঠেছে।

আর কী ধরণের বিধিনিষেধের কথা বলা হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই লিফলেটে :
১। গ্রাম বাংলায় থাকা হিন্দু মেয়েদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয় মুসলিম ছাত্ররা।

২। এরা হিন্দু মেয়েদের জন্য বাসে আসন ধরে রাখে। আবার অনেক মুসলিম ছেলে মোটরবাইকে চাপার জন্যও আহ্বান জানায়।

৩। কোনো উৎসবে বা অনুষ্ঠানে মুসলিম ছেলেরা হিন্দু মেয়েদের নিশানা করে। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতায়। এরপর প্রলোভন দেখায়।

৪। হিন্দু মেয়েদের নিজেদের ফাঁদে ফেলতে বহু সময় মুসলিম ছেলেরা হিন্দু ছেলেদের নামও ধারণ করে। যেমন- পিন্টু, মিন্টু ইত্যাদি।

৫। মেয়েদের মন পেতে মুসলিম ছেলেরা দামি দামি জিনিস উপহার দেয়। যেমন- মোবাইল, পারফিউম, মোবাইল ইত্যাদি।

৬। শারীরিকভাবে ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করে এরা। এর জন্য এরা মেয়েটিকে ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করতেও পিছপা হয় না।

৭। সিনেমা দেখার নাম করে বা হস্টেলে নিয়ে গিয়ে এরা হিন্দু মেয়েদের সাথে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করে।

৮। কোনো মুসলিমদের মাধ্যমেই এরা হিন্দু মেয়েদের সাথে যোগাযোগ রাখে।

৯। এরা খুব ভালো অভিনয় করতে পারে এবং সিনেমার তারকাদের মতো জামা-কাপড় পরে।

১০। যদি কোনো হিন্দু মেয়ে এদের সাথে সম্পর্কে আপত্তি জানায়, তাহলে এই মুসলিম ছেলেরা আত্মহত্যার অভিনয়ও করে।

এতেই শেষ হয়নি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই নীতি-পুলিশগিরি। কোনো হিন্দু মেয়ে যদি কোনোভাবে ‘লাভ জিহাদ’-এর শিকার হয় তাহলে কী করতে হবে তারও এক নির্দেশিকা রাখা হয়েছে এই লিফলেটে। এমনকী, মুসলিম শ্বশুরবাড়িতে হিন্দু ধর্মের পরিবেশ গড়ে তোলার সাথে সাথে ছোটদের রামায়ণ, মহাভারত পড়ানোর অভ্যাস তৈরি করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

ইতিমধ্যেই কলকাতা ও জেলার বেশকিছু স্কুল-কলেজেও এই লিফলেট বিলি করেছে ভিএইচপি।

কিন্তু, অধিকাংশ হিন্দু ছাত্র-ছাত্রী এই লিফলেটে বর্ণিত সমস্ত নির্দেশিকা ও পরামর্শকে উড়িয়ে দিয়েছে। এই হিন্দু-ছাত্রছাত্রীদের মতে, পশ্চিমবঙ্গের মতো ধর্মনিরপেক্ষ রাজ্যে ধর্মের নামে এই জিগির টেকসই হবে না। কে কাকে পছন্দ করবে, কার সাথে থাকবে- সেগুলো একজনের ব্যক্তিগত পছন্দ। এখানে জোর করে ধর্মের নামে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কারা এই ধরণের নির্দেশিকা বানায়? এমন প্রশ্নও তুলেছে ছাত্র-ছাত্রীরা। লিফলেট তৈরিকরাদের মাথায় সমস্যা রয়েছে বলেও অনেকের দাবি।

ভিএইচপি’র কার্যনির্বাহী সম্পাদক অলোক কুমার প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ‘যখন হিন্দু মেয়েদর মুসলিম ধর্মান্তর করা হয় তখন একজন নয়, একটা গোটা জেনারেশনেরই ধর্মান্তর ঘটে। তাই আমরা হিন্দু মেয়েদের সতর্ক করছি যে মুসলিমদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি-তে পা না দিয়ে নিজেদের ধর্মের মধ্যেই বিয়ে করতে।’ সূত্র : ওয়ান ইন্ডিয়া

আরো পড়ুন :
অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের মৃত্যুদণ্ড দাবি হিন্দু পরিষদের
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬
ভারতের বিদেশি নাগরিক অনুপ্রবেশ আইন পরিবর্তনের দাবি করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। বাংলাদেশের কোনো নাগরিক অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করলে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন প্রণয়নেরও দাবি করেছে সংগঠনটি। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি প্রবীণ তোগাড়িয়া এসব দাবি করেন।

তোগাড়িয়া বলেন, বাংলাদেশ থেকে অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে দ্রুত মৃত্যুদণ্ডের আইনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া অবিলম্বে অনুপ্রবেশকারীদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থাও করতে হবে, যাতে করে ভারতকে হিন্দুদের জন্য একটি উন্নত, নিরাপদ এবং সম্মানিত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা যায়।

ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রবীণ তোগাড়িয়া আশা প্রকাশ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খুব দ্রুত অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করবেন।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে কোনো হিন্দু ভারতে প্রবেশ করলে তাদের শরণার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়ার আহ্বান জানান বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই নেতা। যত দ্রুত সম্ভব তাঁদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

পাকিস্তানে পরমাণু বোমা ফেলা উচিত : বিশ্ব হিন্দু পরিষদ
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ০২ জুন ২০১৭
পাকিস্তানে পরমাণু বোমা ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) নেতা আচার্য ধর্মেন্দ্র। তিনি দাবি করেছেন, পাকিস্তানি সেনাদের ক্রমবর্ধমান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের মুখে দেশটির ওপর পরমাণু বোমা ফেলা উচিত।

রাজস্থানের কোটায় সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথা বলার সময়ে তিনি আরো দাবি করেন, উপমহাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য পাকিস্তানে পরমাণু বোমা ফেলার প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া, পাকিস্তানকে ভারতের প্রতিবেশী দেশ না বলে শত্রু দেশ বলা উচিত বলেও মনে করেন উগ্রবাদী এ হিন্দু নেতা।

এ ছাড়া, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পার্টিশনের জন্য গান্ধিকে দায়ী করেন তিনি। গান্ধির ছবি ভারতের কাগজের মুদ্রায় রাখার সরকারি সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement
সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার

সকল