কুলসুম নওয়াজের ইন্তেকাল
- দ্য ডন
- ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:৪৪
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের স্ত্রী কুলসুম নওয়াজ ইন্তেকাল করেছেন। এক বছর ধরে ক্যান্সারের সাথে লড়াই করার পর অবশেষে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার লন্ডনের একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। কুলসুম নওয়াজের দেবর ও পাকিস্তান মুসলিম লিগের(এন) চেয়ারম্যান শাহবাজ শরিফ কুলসুমের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, নওয়াজ শরিফ ও কন্যা মরিয়াম নওয়াজ বর্তমানে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ইসলামাবাদের আদিয়ালা কারাগারে আছেন। স্বামী ছাড়াও হাসান, হুসাইন, মরিয়াম ও আসমা নামের চার সন্তান রেখে গেছেন কুলসুম নওয়াজ।
পাকিস্তানের জিও টিভি জানিয়েছে, গত এক মাস ধরে তিনি হাসপাতালে ছিলেন। লন্ডনের হার্লি স্ট্রিট ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবস্থার অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে কুলসুম নওয়াজকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। ক্যান্সারে আক্রান্ত কুলসুমের অবস্থা আগের রাত থেকেই অবনতির দিকে যেতে থাকে।
গত বছরের আগস্টে ক্যান্সার ধরা পরে তিনবারের এই সাবেক ফার্স্ট লেডির শরীরে। তার পর থেকেই চিকিৎসার সুবিধার্থে তিনি লন্ডেনে থাকছেন। সেখানে তার বেশ কয়েকটি অস্ত্রপচার ও অন্তত ৫টি কেমোথেরাপি দেয়া হয়েছে।
গত জুন মাসে আদালতের রায়ে শাস্তি হওয়ার পর নওয়াজ শরিফ ও মরিয়াম নওয়াজ যখন পাকিস্তানে ফিরে আসেন, সে সময় কুলসুম নওয়াজের অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছিলো।
গত বছর আদালত কর্তৃক নওয়াজ শরিফ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে অযোগ্য ঘোষিত হলে লাহোরে তার আসনে উপ নির্বাচনে জিতে এমপি হয়েছিলেন কুলসুম নওয়াজ। যদিও নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করার আগেই তাকে চিকিৎসার জন্য লন্ডন চলে যেতে হয়। নির্বাচিত হয়েও তিনি আর শপথ নিতে দেশে ফিরতে পারেননি।
আরো পড়ুন: চীনের ইন্ধনে যৌথ মহড়ায় যোগ দিলো না নেপাল? ক্ষুব্ধ ভারত
সোমবার পুণেতে শুরু হলো বিমস্টেকভুক্ত দেশগুলির যৌথ সামরিক মহড়া। কিন্তু তাতে যোগ দিল না নেপালের খড়্গপ্রসাদ ওলি সরকার। অনিবার্য কারণ দেখিয়ে আসেননি থাইল্যান্ডের প্রতিনিধিরাও। এই মহড়ার পরে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ভারতেই এই গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর সেনাপ্রধানদের দু’দিনের সম্মেলন হবে। সেখানেও অনুপস্থিত থাকবেন নেপালের সেনাপ্রধান। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।। চীনের পরোক্ষ হস্তক্ষেপেই এই ঘটনা ঘটছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সে কথা এখনই প্রকাশ্যে না এনে যতটা সম্ভব সৌজন্য বজায় রেখে কূটনৈতিক চ্যানেলে নেপালের কাছে নিজেদের উষ্মার কথা প্রকাশ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। গত সপ্তাহে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের চেয়ারপার্সন পুষ্পকুমার দহল ওরফে প্রচণ্ড এসেছিলেন নয়াদিল্লিতে। তখনই নেপালের এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে আসে। তাকেও বিষয়টি নিয়ে নিজেদের ক্ষোভ জানিয়েছেন ভারতীয় নেতৃত্ব। রোববার প্রচণ্ড ফিরে দিয়েছেন কাঠমান্ডুতে।
সাম্প্রতিক বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন দেশগুলোকে নিয়ে নিরাপত্তা সহযোগিতার একটি অবিভক্ত পরিসর গড়ে তোলার ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সার্ক-এ পাকিস্তান থাকার কারণে যে বিষয়গুলো নিয়ে উদ্যোগী হওয়া সম্ভব হয় না সেগুলোকেই বিমস্টেকের মঞ্চে জোর দিতে চাইছে সাউথ ব্লক। কিন্তু বিমস্টেকের অন্যতম সদস্য নেপালের এমন পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত ছিল না নয়াদিল্লি। এই নেপালই দু’বছর আগে ভারতের ডাকে সাড়া দিয়ে উরি হামলার প্রতিবাদে ইসলামাবাদের সার্ক সম্মেলন বয়কট করেছিল।
নেপালের রাজনৈতিক সূত্রের মতে, শেষ মুহূর্তে ওলির নিষেধাজ্ঞায় বাতিল হয়ে গেছে সে দেশের সেনাপ্রতিনিধিদের পুণে সফর। কূটনীতিকদের মতে, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ওলি সরকার বার্তা দিতে চাইছে যে ভারতের উপর সামরিক এবং বাণিজ্যিক নির্ভরতা কমিয়ে আনা হবে। ২০১৬ সালে চীন সফরে গিয়ে ওলি চীনা বন্দরগুলির সঙ্গে তার দেশের সংযোগের জন্য একটি প্রোটোকল সই করানোর জন্য প্রয়াস শুরু করেছিলেন। সম্প্রতি সেই প্রোটোকলটির কথাও ঘোষণা করেছে নেপাল। ভারতকে প্রত্যাখ্যান করা এবং চীনকে আরো কাছে টানা—একইসঙ্গে এই দু’টি সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি নিছকই কাককালীয় নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।