১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আমিরাতের সাহায্য প্রত্যাখানে ক্ষোভে ফুঁসছে কেরালাবাসী

আমিরাতের সাহায্য প্রত্যাখানে ক্ষোভে ফুঁসছে কেরালাবাসী - সংগৃহীত

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে দক্ষিণ ভারতের কেরালাবাসী গভীর সঙ্কটে।শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বন্যার সম্মুখীন হবার পর নিভে গেছে অনেকের আশার আলো। বিধ্বংসী বন্যায় বিপর্যস্তদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত ১০০ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব করেছিল। ভারত সরকার দুর্যোগপূর্ণ এমন পরিস্থিতিও তা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে বন্যাদুর্গতরা।

ভারতের প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজ করেন যার মধ্যে ৮০ ভাগই কেরালার বাসিন্দা অর্থাৎ  আমিরাতের জনসংখ্যার একটা বড় অংশই কেরালা থেকে যাওয়া লোকজন। ভারতের ওই ভূখন্ডের সাথে তাদের বিশেষ সম্পর্কের সুবাদেই তারা বিপুল অঙ্কের সাহায্য দিতে চেয়েছিল। তা ছাড়া কেরালার পুনর্গঠনেও এখন প্রচুর অর্থের দরকার। তা সত্ত্বেও কেন ভারত ওই সহায়তা নিচ্ছে না, তা নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে বিস্তর। কেননা ভয়াবহ বন্যায় কেরালায় শুধু শত শত প্রাণহানিই হয়নি, লক্ষ লক্ষ মানুষের ঘরবাড়ি ভেসে গেছে - প্রায় পুরো রাজ্যের অবকাঠামোও ভেঙে পড়েছে।

কেরালার বন্যা পরিস্থিতি মোকেবেলার জন্য বিদেশি অর্থ সাহায্য নেবে না ভারত। বুধবার একটি বিবৃতিতে এ কথা জানায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কেরালার বন্যার্তদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত ৭০০ কোটি রুপি, কাতার ৩৫ কোটি রুপি এবং মালদ্বীপ ৩৫ লাখ রুপি সাহায্যের ঘোষণা দেয়। প্রায় ৩০ লাখ ভারতীয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করে যারমধ্যে ৮০ শতাংশই কেরালার। এসব কেরালার প্রবাসীদের মধ্যে একটি বড় অংশই মুসলিম জনগোষ্ঠী।

ধনী উপসাগরীয় রাষ্ট্রের কাছ থেকে সহায়তার অফার প্রত্যাখ্যান করে দিল্লি সরকার কেরালা প্রশাসনকে অপমান করেছে বলে মনে করছে অনেকে। কেরালার অর্থমন্ত্রী টমাস আইজাক সরকারের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। তিনি টুইটার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ‘নেতিবাচক অবস্থান’ নেয়ায় কেরালাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে দাবি করেছেন।

রাজ্য সরকারের এক প্রাথমিক হিসাব মতে, ভয়াবহ এই বন্যায় অন্তত ২০ হাজার কোটি রুপি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় দক্ষিণ ভারতের কেরালায় গত ৮ আগস্ট থেকে এপর্যন্ত কমপক্ষে ৪২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩৩০০ অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ১৩ লাখ মানুষকে। ২ দিনেই ৩ লাখ মানুষের ঠিকানা হয়েছে অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে।

তৃতীয় দফায় বন্যা ও ভূমিধসে ভেঙে পড়েছে কেরালার পর্যটন শিল্প। ২০১৭ সালে প্রায় ১০ লাখ ৯২ হাজার বিদেশি ও ১ কোটি ৪৬ লাখ ৭৩ হাজার দেশি পর্যটক ওই রাজ্যে ভ্রমণে গেলেও এবছর কয়েক দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানায় মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে পর্যটন খাত। ১০ হাজার কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এই বিপর্যয়ের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথমেই ১০০ কোটি টাকার ঘোষণা করেছিলেন। তারপরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিপর্যয়ের সাথে লড়াই করার জন্য ৫০০ কোটি টাকা ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ  এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। এমনকি মোদী সরকার ডিজাস্টার রিজার্ভ ফান্ড থেকে আরো ৩২০ কোটি টাকা ঘোষণা করেছে। যাদের বাড়ি এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের প্রত্যেকের জন্য ফ্রী হাউসিং এর ঘোষণা, ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্তরকমের স্কিম এর ঘোষণা, যতগুলি জাতীয় সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেইসমস্ত সড়কের দ্রুত পূর্ননির্মাণ ঘোষণা করা হয়েছে।

কেন্দ্রের তফরে উদ্ধার কাজে নামানো হয়েছে ১ লাখ সেনা। উদ্ধারের জন্য মোদী সরকার ৬৭টি হেলিকপ্টার, ২৪টি এয়ার ক্র্যাফট, ৫৪৮টি মোটরবোটস, ৬৯০০ টি লাইফ জাকেটস, ১৬৭টি ইনফ্লাটেবলে টাওয়ার লাইট, ২১০০টি রেইন কোর্ট, ১৩০০টি গামবোটস, ১৫৩টি চেইনস্ব এর ব্যবস্থা পরিপোক্ত করেছে। এছাড়াও ৩০০,০০০ খাবারের প্যাকেট, ৬০০,০০০ মিলিয়ন টন দুধ, ১,৪০০,০০০ লিটার খাবার পানি, ১০০,০০ লিটার ক্ষমতা সম্পন্ন ১৫০ পটাবল ওয়াটার পিউরিফিকেশন কিটস। এছাড়াও দেশের প্রত্যেক রাজ্য তাদের সরকারের তরফ থেকে কোটি টাকা সাহায্যের ঘোষণা করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement
শিবপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারীর নিহত চকরিয়ায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩ গাজা মানবিক নরকে পরিণত হয়েছে : জাতিসঙ্ঘ প্রধান রাফা হামলার পরিকল্পনা ইসরাইলের ত্যাগ করা উচিত : চীন গাজা যুদ্ধে নতুন যে কৌশল অবলম্বন করল ইসরাইল হাসপাতালের শৌচাগারে মিলল নবজাতক শিশু ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিসিডিপি গঠন করা হবে : পরিবেশমন্ত্রী অননুমোদিত জমি ভরাট কার্যক্রমের সন্ধান পেলে দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ ভূমিমন্ত্রীর ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা ইসরাইলকে পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাতের ব্যাপারে সতর্ক করলো আইআরজিসি

সকল