২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্বামীকে খুনে প্রেমিককে দেড় লাখ টাকার টোপ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি

স্বামীকে খুনে প্রেমিককে দেড় লাখ টাকার টোপ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি - ছবি : সংগৃহীত

স্বামীকে খুন করতে নিজের প্রেমিককে দেড় লক্ষ রুপির ‘টোপ’ দিয়েছিল স্ত্রী। এমনকী কাজ হাসিল করতে পারলে টাকা দেয়ার পাশাপাশি প্রেমিককে বিয়ে করারও প্রতিশ্রতি দিয়েছিল নিতাই ভৌমিকের স্ত্রী পূরবী। প্রেমিকাকে তড়িঘড়ি জীবন সাথী করার বাসনায় মাত্র ২৬ হাজার রুপি হাতে পেয়েই পূরবীর স্বামীকে খুন করে তার প্রেমিক।

১২ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির অদূরে ফুলবাড়ির কাঞ্চনবাড়িতে খুন হন নিতাই ভৌমিক নামে এক ব্যক্তি। এই খুনের তদন্তে নেমে তার স্ত্রীকে এনজেপি থানার পুলিস গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পারে। সেই সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার রাতে নাগরাকাটার চ্যাংমারি চা বাগান থেকে রতন বর্মন নামে এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে। সেখানে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর বাড়িতে আত্মগোপন করেছিল রতন। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (জোন ১) গৌরব লাল বলেন, নিতাই ভৌমিক খুনে প্রধান অভিযুক্ত পূরবীর প্রেমিক রতনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা দু’জনে মিলে খুন করেছিল। ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে তদন্ত হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রতন বর্মনের সঙ্গে পূরবীর প্রণয় ছিল। প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর রতন দ্বিতীয়বার বিয়ে করে। ওই স্ত্রী নাগরাকাটার চ্যাংরামারি চা বাগানে থাকেন। ফুলবাড়িতে বাসা নিয়ে কাঞ্চনবাড়িতে শ্রমিকের কাজ করতেন রতন। সেসময় পূরবীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর প্রেম এবং পরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে দু’জনের মধ্যে। এই সম্পর্ক ছ’মাস ধরে চলছিল। তাদের এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা নিতাইবাবু জেনে ফেলায় স্ত্রীর উপর নানাভাবে অত্যাচার করতেন বলে অভিযোগ। স্বামীর অত্যাচারের কথা পূরবী তার প্রেমিককে জানিয়েছিলেন। তারপরই স্বামীকে খুন করার পরিকল্পনা করেন পূরবী।

জেরায় পুলিশকে রতন জানিয়েছেন, পূরবী তাকে বলেছিল, দেড় লক্ষ রুপি দেয়া হবে তার স্বামীকে খুন করলে। তাহলেই সে তাকে পাবে। এরপর ১২ জুলাই বাড়ির জানালা খুলে রতনকে ঘরের ভিতরে ঢোকায় পূরবী। দু’জনে মিলে ঘুমিয়ে থাকা নিতাই ভৌমিককে গলা কেটে খুন করেন। এরপর তারা গা ঢাকা দেন। পূরবী স্বামীর এটিএম কার্ড ও পিন নম্বর জানিয়ে দেন রতনকে। সেই এটিএম কার্ড দিয়ে ২৬ হাজার রুপি তুলতে পারেন বলে রতন জেরায় জানিয়েছেন। খুনের পর স্বামীর লাশ তোশকে জড়িয়ে ফুলবাড়ির ক্যানেলের পাশে ঝোপে ফেলে দেন পূরবী ও রতন।

গত ১১ জুলাই থেকে নিতাই ভৌমিক তার স্ত্রী পূরবীদেবী ও তাদের এক সন্তান নয়ন নিখোঁজ ছিলেন। নিতাইবাবুর ভাই গণেশ ভৌমিক ২১ জুলাই এনজেপি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এরপর ২৬ জুলাই দুর্গন্ধ ছড়ালে এলাকার বাসিন্দারা এনজেপি থানায় খবর দেয়। নিতাইবাবুর বাড়ির অদূরে ঝোপঝাড়ের মধ্যে থেকে বস্তাবন্দি পচাগলা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পরিবার লাশ দেখে শনাক্ত করে।

তদন্তে প্রথমেই পুলিশের সন্দেহ হয় নিতাইবাবুর স্ত্রী পূরবীকে। তাকে গ্রেফতার করে টানা জেরা করতেই পূরবী স্বীকার করেন তার স্বামীকে খুন করার কথা। এরপরেই পুলিশ রতনের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু করে। মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে পুলিস রতনের সন্ধান পায়। ধৃতকে এদিন জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

 


আরো সংবাদ



premium cement