২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তেলসম্পদে বিশ্বের ষষ্ঠ দেশ হতে যাচ্ছে পাকিস্তান!

তেলসম্পদে বিশ্বের ষষ্ঠ দেশ হতে যাচ্ছে পাকিস্তান! - ছবি : সংগৃহীত

ইরান সীমান্তের কাছে বিশাল তেলের মজুদ আবিষ্কারের খবর দিয়েছেন পাকিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ হুসেইন হারুন। তিনি দাবি করেছেন, এই একটি খনিতে কুয়েতের মোট মজুদের চেয়েও বেশি তেল রয়েছে।

তিনি গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের ফেডারেশন অব চেম্বার্স অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির এক বৈঠকে ঘোষণা করেন, ইরান-পাকিস্তান পানিসীমার কাছে আমেরিকার ‘এক্সন মোবিল’ কোম্পানি বিশাল এক তেলের মজুদ খুঁজে পেয়েছে। উত্তোলন উপযোগী এই তেলের খনি পাকিস্তানকে তেলের মজুদের দিক দিয়ে বিশ্বের ষষ্ঠ দেশে পরিণত করবে।

এই তেল ত্রে থেকে তেল উত্তোলন শুরু করতে ১,০০০ কোটি ডলার খরচ হবে বলে জানান পাক অস্থায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, পাকিস্তান সরকারের সাথে স্বারিত চুক্তি অনুযায়ী, এই ত্রে থেকে উত্তোলনকৃত তেলের শতকরা ২৫ ভাগ এক্সন মোবিলকে দিতে হবে। সম্প্রতি এক্সন মোবিল জানিয়েছিল, তারা ইরান-পাকিস্তান সীমান্তে বড় ধরনের তেলের মজুদ পাওয়ার কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছে।

পাকিস্তানের তেল ও গ্যাসের মতো খনিজ সম্পদের সন্ধানে এক্সন মোবিল এ পর্যন্ত ৫,০০০ মিটার খননকাজ সম্পন্ন করেছে। আমেরিকার এ কোম্পানিকে গ্যাস অনুসন্ধানেরও দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

পাকিস্তানের অস্থায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেয়া তথ্য সঠিক হয়ে থাকলে তা পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এক যুগান্তকারী ঘটনা হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বর্তমানে পাকিস্তানের মোট তেলের চাহিদার শতকরা ১৫ ভাগ অভ্যন্তরীণভাবে উৎপন্ন হয়। বাকি ৮৫ ভাগ প্রয়োজনের জন্য দেশটি আমদানির ওপর নির্ভরশীল।

আরো পড়ুন :

বিশেষ মর্যাদা মামলার শুনানি মুলতবি দ্বিতীয় দিনেও ধর্মঘটে অচল কাশ্মির
এনডিটিভি ও হিন্দুস্তান টাইমস

স্বাধীনতাকামী বেশ কয়েকটি সংগঠনের ডাকা সর্বাত্মক ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে। এরই মধ্যে কাশ্মিরের বিশেষ আইন বাতিল আবেদনের ওপর শুনানি মুলতাবি করেছেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। 
স্থানীয় নির্বাচন প্রক্রিয়া চলতে থাকার কারণ দেখিয়ে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য উভয় সরকার শুনানি মুলতবির আবেদন জানায়। আগামী ২৭ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া সপ্তাহে ফের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। অনুচ্ছেদ-৩৫এ নামে পরিচিত ওই আইনে রাজ্যের বাসিন্দা ছাড়া অন্য কারো সম্পত্তি ক্রয় এবং সরকারি চাকরিতে নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা রাখা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে এই আইন বাতিলের জন্য একটি আপিলের পর এর বিরোধিতায় উত্তাল হয়ে উঠেছে কাশ্মির। তাদের আশঙ্কা, এই আইন বাতিল হলে ভারতের উগ্র জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর লোকেরা কাশ্মিরিদের জনতাত্ত্বিক ও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে দেবে।

এই আইন বাতিলে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মোট চারটি আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি আবেদনই করেছে হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের সাথে সম্পৃক্ত উই দ্য সিটিজেন নামের একটি এনজিও। তাদের দাবি, আইনটি উচ্চমাত্রায় বৈষম্যমূলক। ফলে তা অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হোক। তাদের যুক্তি এই আইন পার্লামেন্টে অনুমোদিত নয় বরং তা প্রেসিডেন্টের আদেশে জারি করা। এসব আবেদনের শুনানির মধ্যেই জম্মু-কাশ্মিরের রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, নাগরিক সমাজ ও বাসিন্দারা এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কাশ্মিরের স্বাধীনতাপন্থী নেতা সৈয়দ আলী গিলানি, মিরাওয়াইজ ওমর ফারুক ও ইয়াসিন মালিক দুই দিনের সর্বাত্মত ধর্মঘটের ডাক দেন। সম্মিলিত আন্দোলন ব্যানারে ডাক দেয়া এই ধর্মঘট রোববার থেকে শুরু হয়েছিল। 

ধর্মঘটের সময় রাজ্যের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরে দোকানপাট, বাজার ও বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলো বন্ধ রাখা হয়। বন্ধ রয়েছে যানবাহন। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধৃত করে হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, রাজ্যজুড়ে যে তীব্র বিক্ষোভ চলছে তা গত কয়েক বছরের মধ্যে দেখা যায়নি। রাস্তায় লোক চলাচল খুবই সীমিত। এমনকি রিকশা, অটোরিকশাও চলছে না শ্রীনগরের রাজপথে। অবরোধের কারণে সাময়িকভাবে তীর্থযাত্রীদের জন্য অমরনাথ যাত্রা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। কাশ্মির উপত্যকার বালতাল ও ফাহালগাম ক্যাম্পে প্রায় তিন লাখ তীর্থযাত্রী অবস্থান করছেন।

বিশেষ আইন বাতিলের আবেদনের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে আদালতে মধ্যবর্তী আবেদন দাখিল করেছে জম্মু ও কাশ্মির বার অ্যাসোসিয়েশন। এই আবেদনের শুনানিতে বিলম্ব করার আবেদন করেছেন রাজ্যের গভর্নর এন এন ভোহরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছেও তিনি এই বিষয় উত্থাপন করেছেন। তিনি চান, রাজ্যে নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরই এই আবেদনের শুনানি করা হোক। এই আইনটি প্রণয়ন করেছিলেন কাশ্মিরের শেষ রাজা মহারাজা হরি সিং। ১৯২৭ সাল থেকে এই আইন জারি আছে। পরে স্বাধীনতার পর তা ভারতীয় সংবিধানে যুক্ত করা হয় এবং ১৯৫৪ সালে তা গৃহীত হয়। এই আইন বাতিলের ইস্যুটিকে কেন্দ্র করে কাশ্মিরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীকে একত্রিত করেছে। 

২০১৪ সালে এক বেসরকারি সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে জম্মু-কাশ্মির থেকে ৩৫-এ ধারা বাতিল করার আবেদন জানায়। জম্মু-কাশ্মির সরকার আদালতে পাল্টা হলফনামা দিয়ে ওই আবেদন খারিজ করার দাবি জানায়। কিন্তু জম্মু-কাশ্মির সরকার একাধিকবার অনুরোধ করলেও কেন্দ্রীয় সরকার ওই ধারার পক্ষে কোনো সাফাই দেয়নি। অধিকন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।

জম্মু-কাশ্মিরের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও ওই ইস্যুতে এর আগে বলেছিলেন, ‘রাজ্য থেকে ৩৫-এ ধারা তুলে নেয়া হলে উপত্যকায় ভারতের জাতীয় পতাকা তোলার মতো আর কেউ থাকবে না।’ জম্মু-কাশ্মিরের বিজেপি মুখপাত্র বীরেন্দ্র গুপ্ত সেসময় বলেন, ‘মেহবুবার মন্তব্যে আমরা হতবাক! ভারতীয় সংবিধানে সাময়িকভাবে ৩৭০ ধারা যুক্ত করা হয়েছিল। সংবিধানের ৩৫এ ও ৩৭০ ধারা এমন নয় যে তাতে হাত দেয়া যাবে না। ওই দু’টি ধারার চেয়ে সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদের চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ এই সপ্তাহের শুরুতে ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, পরিবহন সমিতি ও ফল উৎপাদকদের ২৭টি সংগঠনে প্রতিনিধিরা আইনটি বহাল রাখার অঙ্গীকার করেছেন। এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, আইনটি জম্মু-কাশ্মিরের জনগণের জন্য জীবন-মৃত্যুর মতো বিষয়। আইনটি রক্ষায় আমরা রক্ত দিতেও প্রস্তুত আছি।


আরো সংবাদ



premium cement