১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চীনকে খুশি রাখতে পিছু হটল ভারত

গত মার্চে ভারত সফরে গিয়ে শক্তিশালী প্রতিবেশী চীনের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন মোদি - ফাইল ছবি(এএফপি)

চীনের বিরুদ্ধে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্রকল্প থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত। বেইজিংকে ক্ষুব্ধ না করার নরেন্দ্র মোদি সরকারের যে কৌশল, এটি তারই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এই সিদ্ধান্ত ক্ষুব্ধ করতে পারে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে। অনেকদিন ধরেই এই অঞ্চলে চীনের বিরোধীতায় ভারতে কাজে লাগাতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।

সিঙ্গাপুরে গত ১ জুন শাংগ্রি লা সংলাপে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, এই মহাসাগরীয় অঞ্চলকে তিনি কখনওই ‘হাতে গোনা কিছু সদস্য দেশের কৌশলগত ক্ষেত্র’ হিসেবে দেখেন না। তখনই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল, চীনের সাথে সংঘাত এড়িয়েই মহাসাগরীয় নীতি তৈরি করা হবে। ৩০ জুলাই জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার উদ্যোগে ওই অঞ্চলেই পরিকাঠামো সংক্রান্ত যে প্রকল্প ঘোষণা হয়, তাতে থাকার কথা ছিল ভারতেরও; কিন্তু ওই প্রকল্প থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে নয়াদিল্লি।

ভারতের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে আমেরিকার সঙ্গে যে বৈঠকটি হতে চলেছে, সেখানে প্রসঙ্গটি ফের উত্থাপন করে ভারতের উপর চাপ তৈরি করবে ওয়াশিংটন। বলা হবে ওই উদ্যোগে শামিল হতে। সেখানে কী ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়, তার প্রস্তুতি শুরু করেছে নয়াদিল্লি।

এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যে ত্রিপাক্ষিক প্রকল্পটি শুরু হল, তাকে চীনের ওবর প্রকল্পের পাল্টা হিসেবেই মনে করা হচ্ছে। এটা ঘটনা যে ভারত এখনও ঘোষিত ভাবে ওবর-এর বিরোধী; কিন্তু একই সাথে তারা এই মুহূর্তে নতুন করে এমন কোনও বার্তাও বেজিংকে দিতে চায় না যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আবার সঙ্কট তৈরি হয়।

উহানে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সাথে ঘরোয়া বৈঠকের পর থেকেই ডোকলাম-ক্ষতে প্রলেপ দিতে তৎপর হয়েছে মোদি সরকার। মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সাথে জোট বেঁধে নেতৃত্ব দান থেকেও ধীরে ধীরে পিছু হঠেছে মোদী সরকার।

শাংগ্রি-লায় তাঁর বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কোনও বিশেষ দেশের (চীন) বিরুদ্ধাচরণ করা তাঁর কাম্য নয়। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, ভারতের এই পরিবর্তিত অবস্থান ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামের মতো দেশগুলির কাছে হতাশাজনক হলেও নয়াদিল্লি এক্ষেত্রে অটল। নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় বাধ্যবাধকতার দিকটি বিবেচনা করে শক্তিশালী প্রতিবেশী চীনের সাথে নরম নীতি নিয়েই এগোনোটাই এখন বিজেপি সরকারের কাছে জরুরি।


অথচ গত নভেম্বরে সাড়ম্বরেই এই তিনটি দেশের (জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকা) সঙ্গে চতুর্দেশীয় জোট গড়েছিল ভারত। উদ্দেশ্য ছিল, চীনের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। মহাসাগরীয় অঞ্চলকে ‘মুক্ত এবং অবাধ’ এবং ‘আঞ্চলিক সংযোগকে শক্তিশালী’ করতে জাপান এবং জাপান-অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পৃথক আলোচনাও করেছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু এরপরই চীনের সাথে ধীরে ধীরে সম্পর্ক সহজ করার পথে হাঁটতে থাকে ভারত সরকার। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

 


আরো সংবাদ



premium cement