২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

মোদিকে রাহুলের আচমকা আলিঙ্গনের ছবি ভাইরাল

আচমকা ছুটে গিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে আলিঙ্গন করেন রাহুল গান্ধী - ছবি : সংগ্রহ

লোকসভায় চলছিলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের ওপর অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনা। আলোচনায় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দেয়া বক্তৃতায় রীতিমতো সরকারকে ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে ধুয়ে দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কিন্তু এরপরেই রাহুল যা করলেন, তা আলোচনার জন্ম দিয়েছে সংবাদ মাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

লাইভ সম্প্রচারের সুবাদে সেই ছবি দেখল সবাই। লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভাষণের ফাঁকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আলিঙ্গন করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। পার্লামেন্টে শাসক দলের প্রধানকে প্রধান বিরোধী দলের নেতার এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ আলিঙ্গন শেষ কবে দেখেছে ভারত, তা মনে করতে পারছেন না বর্ষীয়ান এমপিরাও।

শুক্রবার লোকসভায় চলছিল অনাস্থা প্রস্তাবের উপর আলোচনা। বক্তৃতায় ঝড় তুলছেন রাহুল গান্ধী। বিরোধীরাও হইচই করে যথাসম্ভব বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাকে। রাহুল তাঁর বক্তৃতার শেষ পর্বে ভারতীয় সংস্কৃতির ইতিহাস, রাজনৈতিক পরম্পরার কথা তুলে ধরেন। বলেন, ‘অন্যরা যতই হিংসা, বিদ্বেষ করুন তাঁকে, ভালবাসাই ভারতীয় সংস্কৃতি, ভারতীয় কৃষ্টি। বহু বছর ধরে এই সংস্কৃতি তৈরি করেছে দেশ।’ এরপর বিজেপির এমপিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা আমাকে হিংসা করেন, আমাকে ঘৃণা করেন; কিন্তু আপনাদের প্রতি আমার কোনও রাগ নেই, দ্বেষ নেই। আমি আপনাদের সবাইকে ভালবাসি।’

বক্তৃতা শেষে আসন ছেড়ে নেমে এলেন রাহুল। স্পিকারের ডান দিকে কংগ্রেসের বসার জায়গা। তার উল্টোদিকে বিজেপি এমপিদের আসন। রাহুল হঠাৎ আসন ছেড়ে উঠে হাঁটতে শুরু করলেন। চলে গেলেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর আসনের কাছে কাছে। গিয়েই উঠে দাঁড়াতে বললেন। মোদীও ঠিক কিছু বুঝে উঠতে পারছিলেন না। অবশেষে নিজেই ঝুঁকে মোদীকে জড়িয়ে ধরলেন। তারপর আবার নিজের আসনে ফিরে এলেন। এরপর নিজের জায়গায় ফিরে এসে দলের এক এমপির দিকে তাকিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ চোখ মারেন কংগ্রেস নেতা।

তার আগেও অবশ্য বিজেপির উদ্দেশ্যে একের পর এক ইস্যুতে তোপ দাগেন রাহুল। বলেন, রাফাল যুদ্ধবিমান কেনায় বিজেপি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছেন। প্রশ্ন তোলেন, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ্‌র ছেলের সম্পত্তি ১৬ গুণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে। একে একে জিএসটি, নোট বাতিল, ডোকালাম ইস্যু নিয়ে শাসক দলকে তুলোধুনো করেন। যদিও রাহুলের বক্তব্যের গোটা পর্বেই বিজেপির মন্ত্রী-এমপিরা তুমুল হট্টগোল করেন। রাহুলের এদিনের বক্তৃতার পর তার মা সোনিয়া গান্ধী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।

আরো পড়ুন : হেলিকপ্টার কেলেঙ্কারি নিয়ে তোলপাড় ভারতে

অগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার দুর্নীতির ঘটনায় ‘মিডিল ম্যান’ ক্রিশ্চিয়ান মিশেল গ্রেফতার করা হয়েছে। দুবাই থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় তদন্তকারীরা সংস্থা।

সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস নাউ’ সূত্রে খবর, মিশেলকে শিগগিরই ভারতে ফিরে আনার প্রস্তুতি শুরু করেছে সিবিআই। গ্রেফতারির কথা স্বীকার করেছেন মিশেলের আইনজীবী রোজমেরি প্যাট্রিজ দস আঞ্জস। মিশেলের বিরুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আদালতে মামলা চলছে।


দু’দিন আগেই অভিযোগ উঠে, আদালতে মিশেলের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ ও নথি জমা দেয়নি সিবিআই। যদিও সমস্ত দাবি উড়িয়ে দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থাটি। সিবিআই সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে আদালতে সমস্ত নথি জমা দেয়া হয়েছে। মিশেলকে ভারতে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে। মিশেলের আইনজীবী জানান, মঙ্গলবার তার মক্কেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও মিশেলের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই। ইতালি, সুইজারল্যান্ড ও ভারতেও মিশেলের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির প্রমাণ নেই।

প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার হেলিকপ্টার দুর্নীতি মামলার যৌথভাবে তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। ইতিমধ্যে দাখিল করা হয়েছে তিনটি অভিযোগপত্র। সেখানে নাম রয়েছে বেশ কয়েকজন ভারতীয় রাজনৈতিক-সহ সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান এসপি ত্যাগিরও। অভিযোগ, ৫টি ভিভিআইপি হেলিকপ্টার কেনার জন্য ত্যাগি-সহ তৎকালীন ইউপিএ সরকারের একাধিক নেতারা ঘুষ নিয়েছেন। ইটালির হেলিকপ্টার নির্মাণকারী সংস্থা অগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড মিশেলের মাধ্যমে চুক্তিটিকে প্রভাবিত করে। বেআইনিভাবে হেলিকপ্টারের ‘সার্ভিস সিলিং’ কমিয়ে ইটালির সংস্থাটিকে বরাত পাইয়ে দিতে সাহায্য করেন ত্যাগি ও তৎকালীন কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতা।

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে মিশেলের গ্রেফতারি মোদি সরকারের বড়সড় হাতিয়ার হতে পারে। অভিযোগ, হেলিকপ্টার দুর্নীতিতে সাবেক বিমানবাহিনী প্রধানের সঙ্গে টাকা নয়্ছয় করেছেন একাধিক হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতাও। তাই তদন্তে সনিয়া শিবিরের কারো নাম উঠে আসতেই পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আগেও হেলিকপ্টার দুর্নীতি নিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির। রাহুল যতই ‘অগস্টা দুর্নীতি’ থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন, তার ঘনিষ্ঠ কনিষ্ক সিংকে অগস্টা দুর্নীতির ঘুষ আদান প্রদানের মধ্যস্থতাকারী বলেই দাবি করেছেন বিজেপি এমপি কিরীট সোমইয়া৷ কনিষ্ক যে রাহুলের অন্যতম রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন সেকথা উল্লেখ করে কীরিটের দাবি, রাহুলকেও এই বিষয় জবাবদিহি করতে হবে৷


আরো সংবাদ



premium cement

সকল