২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পাকিস্তানের নির্বাচন

এক হিজড়াকে নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ইমরান খান!

ইমরান খান ও নাদিম কাশিশ। - সংগৃহীত

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন যত কাছাকাছি আসছে নির্বাচনী প্রচারণাও তত চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছেছে। রাজনৈতিক দলগুলো, প্রার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীরা বিভিন্ন উপায়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছে নিজেদের জন্য ভোট আদায় করতে। পুরুষ, মহিলা এবং হিজড়া সবাই ভোটারদেরকে তাদের নিজস্ব উপায়ে আকৃষ্ট করার জন্য চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে।

২০১৮ সালের এ নির্বাচনে রাজধানী ইসলামাবাদের এনএ- ৫৩ তেমনি নির্বাচনের জন্য একটি আকর্ষণীয় যুদ্ধক্ষেত্র।পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলোর সবচেয়ে হেভিওয়েট প্রার্থীরা এখানে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে। পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফের চেয়ারম্যান ইমরান খান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শহিদ খাকান আব্বাসীর মতো প্রার্থীরা এখানে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। আর এই দুই প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে একজন হিজড়া এই আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন। তিনিও একই আসনটিতে তাদের মুখোমুখি হচ্ছেন।

নাদিম কাশিশ, একজন হিজড়া। এবারের নির্বাচনে এনএ-৫৩ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য উদ্দীপ্ত এবং রোমাঞ্চিত।

তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য সাজগোছ করে মানুষের বাড়ির দরজায় দরজায় যাচ্ছেন, রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি ভোটারদের সমর্থক এবং ভোটারদের সাথে নিজেকে পরিচিত করতে আগ্রহী। তিনি একজন স্বাধীন প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে 'রেডিও' বরাদ্দ পেয়েছেন।

কাশিশ সকাল থেকেই তার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। পুরুষ, নারী, যুবক, বৃদ্ধ, ব্যবসায়ী সবার কাছে যাচ্ছেন আর তার নির্বাচনী প্রতীক দেখিয়ে ভোট চাচ্ছেন। এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা পরিবর্তন করা কথা বলছেন।সাধারণ মানুষদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাচ্ছেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারণায় তার সাথে হিজড়াদের দেখা যায়।

ভোট চাইতে গিয়ে তিনি বলেন, দল আমাদের কোন সমস্যা দেখে সমাধান করে না, আমাদের নিজেদের সমস্যা নিজেদেরই সমাধান করতে হবে

নাদিম বলেন, প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে নির্বাচিত হলে তিনি তার সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি, শনাক্তকরণ এবং সম্মানের জন্য কাজ করতে চান। একের পর এক করে পরিণত হবে এবং সুষ্ঠু উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ব্যর্থ হবে।

জনগণকে তার ভোট পাওয়ার জন্য প্রভাবিত করতে তিনি ভোটারদের দরজার পৌঁছানোর জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। নাদিম কাশীশ বলেন, প্রথমে আমার নির্বাচনী প্রার্থীতার ফরম জমা দিতে গিয়ে ভয়ে ছিলাম। ‍যদি কোন কারণে বাছাইয়ে বাদ পড়ে যাই বা কোন সমস্যা হয়। কিন্তু আল্লাহর রহমতে এসব কোন সমস্যা হয় নি।

তিনি বলে 'নির্বাচনে ব্যর্থতার কোন ভয় নেই কারণ আমার উদেশ্য পরিস্কার'।

সমাজের অন্যান্য প্রান্তিক স্তরের মানুষদের মতো হিজড়াদের সংকট ও উদ্বেগের বিষয়গুলি উত্থাপনের জন্য কাশিশকে আসন্ন আইন পরিষদে তাদের সম্প্রদায়ের ‘প্রতিনিধি' হিসেবে দেখছেন হিজড়া সম্প্রদায়। আর তাই হিজড়ারা তাকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন।

হিজড়া সম্প্রদায়ের একজন বলেন, এখানে যারা নির্বাচনে লড়ছেন তারা নিজেদের বড় নেতা হওয়ার জন্য, মন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা কেউ জনগণের সমস্যা সমাধানের জন্য লড়ছেন না।

কাশিশ নির্বাচনে শক্তিশালী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, আমার হয়তো নির্বাচনী ব্যানার, পতাকা, সমাবেশ এবং অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী উপায়ে প্রচারণা করার মত সম্পদ নেই। আমার সীমিত সম্পদ থাকা স্বত্ত্বেও আমি রেডিও মাধ্যমে আমার বার্তা পৌঁছে দিতে পারি। এর ফলে খুব সহজেই মানুষের কাছে আমার বার্তা পৌঁছে দিতে পারছি।

কাশিশ তার নির্বাচনী প্রচারণাকে জনপ্রিয় করতে এবং দারুণভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য প্রতীক হিসেবে রেডিও বেছে নিয়েছেন।

এই নির্বাচনে একজন হিজড়া সম্প্রদায়ের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করায় এটা বুঝা যায় যে, সমাজের প্রান্তিক স্তরের মানুষগুলো তাদের দাবী আদায়ের জন্য চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন।


আরো সংবাদ



premium cement