১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুসলিমদের নিয়ে মোদির ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা

মুসলিমদের নিয়ে মোদির ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা - ছবি : সংগৃহীত

বিশিষ্ট লেখিকা অরুন্ধতী রায় বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের শাসনামলে সংখ্যালঘুদের বিপন্নতা বেড়েছে। হিন্দ্ত্বুবাদী রাষ্ট্র গড়তে মুসলিমদের সমাজবিচ্ছিন্ন ও দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানাতে চাইছেন মোদি। এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন।

স্বনামধন্য সংবাদকর্মী ইভান ডেভিসের সঞ্চালনায় বিবিসি নাইট নামের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে অরুন্ধতী বলেন, গোটা বিশ্বেই একটি একমুখী বাজারব্যবস্থার অধীনে মানুষকে বৈচিত্র্যহীন একমুখী করে তোলা হচ্ছে। ন্যায়-সমতা আর মুক্ত পৃথিবীর পক্ষে এক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর অরুন্ধতী রায়ের প্রথম উপন্যাস ‘গড অফ স্মল থিংস’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। এর ২০ বছর পর ২০১৭ সালের জুনে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় উপন্যাস ‘দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস’। সেই উপন্যাস নিয়েই বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অরুন্ধতী। সাংবাদিক ইভান ডেভিসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘বিবিসি নাইট’ নামের অনুষ্ঠানে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘মোদিকে আপনি খুব একটা ভালো চোখে দেখেন না।

আপনার বইয়ের প্রশ্নেও তিনি খুব একটা খুশি নন। তিনি কি ততটা খারাপ, আপনি তাকে যতটা ভয় পান?’ উত্তরে অরুন্ধতী বলেন, ‘হাঁ, তাই। কারণ আজকে ভারতে এমন একটা পরিস্থিতি বিরাজ করছে যেখানে মুসলিম সম্প্রদায়কে সমাজের মূল স্রোত থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে নির্বিচারে তাদের হত্যা করা হচ্ছে। তাদের পূর্বতন পেশা আর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে তাদের বিযুক্ত করে দেয়া হচ্ছে। গোশতের দোকান কিংবা চামড়াজাত পণ্য কিংবা হস্তশিল্পের মতো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলো বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।’


অরুন্ধতী বলেন, ভারতজুড়ে সহিংসতার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিজেপি ও এর ভাবাদর্শিক সহযোগীদের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একটি সম্প্রদায় সেখানে হিন্দু জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় মত্ত। সেখানে হিন্দুরা ছাড়া সবাই দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হবে। বিবিসির পক্ষে জানতে চাওয়া হয়, এটি ভারত নাকি গোটা বিশ্বের অবস্থা। উত্তরে অরুন্ধতী বলেন, ‘আমি মনে করি আপনি যা দেখছেন, এক কথায় বললে বিশ্বজুড়ে সমগ্র মানবসমাজকে একমুখী সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গীর অধীনে নিয়ে আসা। একটা বাজারতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে সবাই একইরকম পণ্য কিনতে প্ররোচিত হবে, একই রকম জিনিস চাইবে। আর এভাবেই তৈরি হয় বিকৃত মনোগত অপরায়ন। যারা ওই সমন্বিতকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে নিজেদের ‘অপর’ বিবেচনা করবে, সেখান থেকে বিচ্ছিন্নবোধ করবে এবং সমন্বয় প্রক্রিয়ার অংশ হতে চাইবে।

কাশ্মিরের জনতার আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রশ্নে অরুন্ধতী দাঁড়িয়েছেন নিজ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। ভারতের মাওবাদী আন্দোলন নিয়ে মূলধারার বুদ্ধিজীবীদের এবং এস্টাবলিশমেন্টের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অবস্থান নিয়েছেন তিনি। তিনি পেয়েছেন ‘রাষ্ট্রদ্রোহীর’ খেতাব। এসব বিভিন্ন বিষয়ে লেখা তার বহু রচনা নিয়ে বই প্রকাশিত হয়েছে। বিপুল পরিমাণ পাঠক তা সাদরে গ্রহণও করেছেন। ভারতে তার কাজের মূল্যায়ন সম্পর্কে জানতে চাইলে অরুন্ধতী বিবিসির সাংবাদিক ইভান ডেভিসকে বলেন, ‘আমার মতো মানুষকে ভারতবিরোধী-জাতিবিরোধী আখ্যা দেয়াটা একটা বড় রকমের তামাশা। অথচ আমরাই এই ভূখণ্ডকে ভালোবাসি।

আরো পড়ুন :
রাজীব গান্ধীর মতোই মোদিকে হত্যার ছক মাওবাদীদের
এনডিটিভি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর মতোই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খুনের ছক কষছে মাওবাদীরা। আদালতে এমনটাই দাবি করেছে পুনের পুলিশ। বৃহস্পতিবার পুনের একটি আদালতে পুনে পুলিশের আইনজীবী উজ্জ্বলা পাওয়ার দাবি করেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ধাঁচেই মোদিকে খুনের ছক কষছিল ভারতে নিষিদ্ধ মাওবাদী সংগঠনের সদস্যরা।

কয়েক দিন আগে নিষিদ্ধ সংঘঠনের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে পাঁচ মাওবাদীকে গ্রেফতার করে পুনে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি চিঠি বাজেয়াপ্ত করা হয়। পুলিশের দাবি, সেই চিঠিগুলোর মধ্যেই একটি চিঠিতে লেখা ছিল মাও সংগঠনটির অস্ত্র কেনার জন্য আট কোটি টাকা প্রয়োজন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর মতো আরো একটি হত্যার ছক রয়েছে। সে জন্য একটি এম-৪ রাইফেল এবং চার লাখ রাউন্ড গুলি কিনতে হবে।

চিঠিটিতে আরো লেখা ছিল, রাজীব গান্ধীর মতোই প্রধানমন্ত্রীর রোড শোগুলোকে টার্গেট করছে নিষিদ্ধ সংগঠনটি। ২১ মে, ১৯৯১ তামিলনাড়ুর শ্রীপুরমবদুরে প্রকাশ্য জনসভায় খুন করা হয়েছিল রাজীব গান্ধীকে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর গলার মালায় টাইম বোমা লাগিয়ে তাকে খুনের ছক কষেছিল নিষিদ্ধ সংগঠন এলটিটিই। এলটিটিই কমান্ডার ধানু এই কাজ সম্পন্ন করেন। দেশ হারায় সবচেয়ে তরুণ প্রধানমন্ত্রীকে। পুলিশের সন্দেহ, সেই একই ভঙ্গিমায় নরেন্দ্র মোদির রোড শোতে বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক ছিল সিপিআই (মাওবাদী) সংগঠনটির।

 


আরো সংবাদ



premium cement