১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ : পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নতুন ভাবনা

ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ : পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নতুন ভাবনা - ছবি : সংগৃহীত

পূর্বাঞ্চলের প্রতিবেশী ভারতের সাথে ‘যুদ্ধের স্থান নেই’ বলে জানিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। একই সাথে কাশ্মিরের বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি প্রতিশ্রুতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটিকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশ এ দুই দেশের সব সঙ্কট আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘কূটনীতির ব্যর্থতা হচ্ছে যুদ্ধ। আমরা পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুটি দেশ, এখানে যুদ্ধের কোনো স্থান নেই। সুতরাং সংলাপ অব্যাহত আছে। তবে ভারত সবসময় সংলাপ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে, পাকিস্তান নয়।’

ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতীয় উপমহাদেশ মুক্ত হওয়ার ১৯৪৭ সালে বিভক্ত হয় পাকিস্তান-ভারত। কাশ্মির নিয়ে এ দুই দেশ তিনবার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। উভয় দেশই কাশ্মিরকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করলেও খণ্ডিত অংশের নিয়ন্ত্রণ করছে।
লাইন অব কন্ট্রোল দ্বারা বিভক্ত ভারত অধিকৃত ও আজাদ কাশ্মির। এই লাইন অব কন্ট্রোলের উভয় পাশে ভারত ও পাকিস্তানের ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। ২০০৩ সালে পাক-ভারত যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হলেও সম্প্রতি তা পরস্পরের বিরুদ্ধে বারবার লঙ্ঘনের অভিযাগ করছে তারা।

চলতি বছর সীমান্তের পাকিস্তান অংশের টার্গেটে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কমপক্ষে ১ হাজার ৫৭৭ বার গুলি নিক্ষেপ করছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আসিফ গফুর বলেছেন, গুলিতে কমপক্ষে ৪৮ জন নিহত ও আরো ২৬৫ জন আহত হয়েছেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘২০১৮ সালে পাকিস্তান কমপক্ষে এক হাজার ৮৮ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এতে ৩৬ জন নিহত ও আরো ১২৭ জন আহত হয়েছেন। গত ২৯ মে দুই দেশের সেনাবাহিনী ২০০৩ সালে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতিশ্রুতি রক্ষায় আবারো অঙ্গীকার করে। উভয় দেশের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আরো পড়ুন :
সামরিক সক্ষমতা বাড়াচ্ছে পাকিস্তান, চীন থেকে কিনছেই যুদ্ধজাহাজ
আনাদুলো এজেন্সি
পাকিস্তান চীন থেকে দুটি যুদ্ধ জাহাজ ক্রয় করতে যাচ্ছে। শুক্রবার পাকিস্তানের নৌবাহিনীর বরাতে এ তথ্য জানানো হয়।

বাহিনীটি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই যুদ্ধ জাহাজ ক্রয় করার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা বন্ধন জোড়ালো হবে।

চায়না শিপিং ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড এবং রাওয়ালপিন্ডির গ্যারিসন শহরের প্রতিরক্ষা প্রোডাকশন মন্ত্রণালয়ের মধ্যকার এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে এ চুক্তি সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানানো হয়নি।

সূত্রের বরাতে বলা হয়, এ যুদ্ধজাহাজ ক্রয় করার মাধ্যমে পাকিস্তানের নৌবাহিনী আরোও শক্তিশালী হবে এবং তাদের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পাবে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, ভারতকে চাপে রাখতেই অত্যাধুনিক যুদ্ধ জাহাজ কিনছে পাকিস্তান। এর মাধ্যমে ভারত পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা ফের বৃদ্ধি পেতে পারে মন্তব্য করেছেন তারা। তবে এই যুদ্ধজাহাজ পাকিস্তান নৌবাহিনীর আলাদা শক্তি যোগান দেবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।


আরো পড়ুন :
তুরস্ক-পাকিস্তান সামরিক সম্পর্ক জোরদার, অস্ত্র সজ্জিত হেলিকপ্টার ও যুদ্ধজাহাজের জন্য চুক্তি

আনাদলু এজেন্সি, বিজনেস ইনসাইডার ও গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার

তুরস্ক এবং পাকিস্তান এর সামরিক সম্পর্ক দিন দিন অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। তুরস্ক থেকে ৩০টি সামরিক হেলিকপ্টার কিনবে পাকিস্তান। এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। তুরস্কে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির ম্যানিফেস্টোতে এ তথ্য জানিয়েছে।

২০১৭ সালের নভেম্বরে একটি সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা পণ্য উৎপাদনমন্ত্রী রানা তানভীর হোসেন এ কথা বলেছেন। রানা তানভীর জানান, পাকিস্তান তুরস্ক থেকে ৩০টি অস্ত্র সজ্জিত হেলিকপ্টার ও চারটি যুদ্ধজাহাজ কেনার পরিকল্পনা করছে।

ইতোপূর্বেও পাকিস্তান ও তুরস্কের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাক সামরিক বাহিনীর জন্য তুরস্ক থেকে এট্যাক হেলিকপ্টার ক্রয়, অত্যাধুনিক কর্ভেট শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ প্রযুক্তি সহ ক্রয় ও পাকিস্তানে নির্মাণ, সাবমেরিন আপগ্রেডেশন প্রোগ্রাম, সাবমেরিন অপারেটিং সিস্টেমস ক্রয় ও তুরস্কের কাছে জেট ট্রেইনার বিক্রয়ের ব্যাপারে কাজ করেছে। পাকিস্তান তুরস্ক থেকে তাদের অত্যাধুনিক ব্যাটেল ট্যাংক ‘আলাতে এমবিটি’ ক্রয়ের আগ্রহও প্রকাশ করেছিল।

৫৫টি মুসলিম দেশের মধ্যে পাকিস্তান হলো একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রের দেশ। পাকিস্তানে তৈরি জেএফ-১৭ জঙ্গিবিমান থেকে সফলতার সঙ্গে ‘দৃষ্টিসীমার বাইরে’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে দেশটির বিমান বাহিনী। জেএফ-১৭ বিমান যুদ্ধক্ষেত্রে বহুমূখী ভূমিকা পালনের ক্ষমতা রাখে। এ বিমান পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মেরুদণ্ড।

আর সামরিক সক্ষমতার দিক থেকে বিশ্বে অন্যতম শক্তিধর দেশ তুরস্ক। জনশক্তি, যুদ্ধাস্ত্র, প্রযুক্তি-প্রশিক্ষণ ও সামরিক ব্যয়সহ বিভিন্ন দিক থেকে তুর্কি সামরিক বাহিনী বিশ্বের সেরা বাহিনীগুলোর একটি। ১৯৫২ সাল থেকেই দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য।

৭ লাখ ৪৩ হাজার ৪১৫ জন সামরিক জনশক্তি নিয়ে বিশ্বে আট নাম্বারে রয়েছে তুরস্ক। রিজার্ভ সদস্য রয়েছে আরো এক লাখ ৭৮ হাজার ৭০০ জন। আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যসংখ্যা তিন লাখ ৬০ হাজার।

দেশটির সামরিক বাহিনীতে ৩৭৭৮টি ট্যাংক, ১০২০টি উড়োজাহাজ, আর্মারড ফাইটিং ভেহিকেল (এএফভি) ৭ হাজার ৫৫০টি, স্বচালিত কামান (এসপিজি) ১ হাজার ১৩টি, ভ্রাম্যমাণ কামান (টিএ) ৬৯৭টি, বহুমুখী রকেট ব্যবস্থা (এমএলআরএস) ৮১১টি এবং ১৩টি সাবমেরিন রয়েছে। সামরিক খাতে দেশটি বার্ষিক ১৮.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে।

দেশটির ২০১৬ সালের সামরিক বাজেট ছিল ১ হাজার ৮১৮ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। সামরিক বাহিনীর সদর দফতার রাজধানী আঙ্কারায়। ‘তুর্কি স্থলবাহিনী’ নামে পরিচিত দেশটির সেনাবাহিনী। প্রধানত চারটি ডিভিশন রয়েছে তুরস্কের সেনাবাহিনীর ফার্স্ট আর্মি (ইস্তাম্বুল), সেকেন্ড আর্মি (মালাতায়া), থার্ড আর্মি (ইরজিনকান) ও আজিয়ান আর্মি (ইজমির)। এই ডিভিশনগুলোর অধীনে রয়েছে ১০টি কমান্ড। আর কমান্ডগুলোর অধীনে রয়েছে শতাধিক সেনা ব্রিগেড। এ ছাড়া রয়েছে সেনাবাহিনীর নিজস্ব বিমান, নৌ ও পুলিশিং ইউনিট। বিশেষ অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ১০০টি এমজিএম-১৪০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা। এই ক্ষেপণাস্ত্র ১০০ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। নিজস্ব প্রযুক্তিতে উৎপাদিত আলটায় ট্যাংক যুক্ত হয়েছে তুর্কি বাহিনীতে। আছে আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য মিসাইল মিজরাক-ইউ। আছে সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ৬০০ সাঁজোয়া যান বিএমসি কিরপি। পান্টার হুইটজার নামক অত্যাধুনিক কামান, যার পাল্লা ২৫ মাইল।

তুর্কি বিমান বাহিনীর মোট সদস্যসংখ্যা ৬০ হাজার। প্রধানত পাঁচটি ডিভিশনে বিভক্ত তুর্কি বিমানবাহিনী। ফার্স্ট এয়ার ফোর্স কমান্ড (এসকিশেইর), সেকেন্ড এয়ার ফোর্স কমান্ড (দিয়ারবাকির), স্টাফ ডিভিশন কমান্ড, ট্রেনিং কমান্ড (ইজমির), লজিস্টিক কমান্ড (আঙ্কারা)। এই কমান্ডগুলোর অধীনে রয়েছে ৯টি যুদ্ধবিমান ঘাঁটি। এ ছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ও ড্রোন ঘাঁটিসহ রয়েছে আরো ১১টি ঘাঁটি ও ৪১টি স্কোয়াড্রন। মোট বিমানসংখ্যা ১০০৭টি, যুদ্ধবিমান ২০৭টি, প্রশিক্ষণ বিমান ২৭৬টি, হেলিকপ্টার ৪৪৫টি, সামরিক হেলিকপ্টার ৭০টি। তুরস্কের যুদ্ধবিমানের মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অত্যাধুনিক এফ-১৬ ফ্যালকন। আছে ইসরাইলের তৈরী মনুষ্যবিহীন বিমান আইএআই হিরন। এর সংখ্যা দশটি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী সর্বাধুনিক প্রযুক্তির তিনটি প্রিডেটর ড্রোন রয়েছে তুরস্কের। প্রিডেটর ড্রোন শত্রুকে নিজের উপস্থিতি জানতে না দিয়েই মিসাইল হামলা করতে সক্ষম। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যৌথভাবে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ লাইটনিং -২ জঙ্গিবিমান উৎপাদন করছে। গোকতুর্ক-১ ও গোকতুর্ক-২ নামে দুটি গোয়েন্দা স্যাটেলাইট রয়েছে তুরস্কের।

তুর্কি নৌবাহিনীর সদস্যসংখ্যা ৪৮ হাজার ৬০০ জন। এ বাহিনীর প্রধান ঘাঁটিগুলো হলো, নৌবহর কমান্ড (ফ্লিট), উত্তর সমুদ্র এলাকা কমান্ড, দক্ষিণ সমুদ্র এলাকা কমান্ড, নৌপ্রশিক্ষণ কমান্ড এবং আরো রয়েছে তিনটি বিশেষ বাহিনী কমান্ড। এই কমান্ডগুলোর অধীনে রয়েছে ১৮টি নৌঘাঁটি। তুর্কি নৌবাহিনীর যুদ্ধ সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে ফ্রিগেট ১৬টি, বিশেষ রণতরী ৮টি, সাবমেরিন ১৩টি, উপকূল প্রতিরক্ষা যান ২৯টি, মাইন ব্যবস্থাপনা যান ১৫টি, হেলিকপ্টার ও বিমান মোট ৫১টি, ব্যবহৃত বন্দর ৯টি। জার্মানির তৈরি টাইপ-২০৯ সাবমেরিনগুলোর প্রত্যেকটি ১৪টি টর্পোডো বহন করতে সক্ষম। আছে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি যুদ্ধজাহাজ।


আরো সংবাদ



premium cement
শিবপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারীর নিহত চকরিয়ায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩ গাজা মানবিক নরকে পরিণত হয়েছে : জাতিসঙ্ঘ প্রধান রাফা হামলার পরিকল্পনা ইসরাইলের ত্যাগ করা উচিত : চীন গাজা যুদ্ধে নতুন যে কৌশল অবলম্বন করল ইসরাইল হাসপাতালের শৌচাগারে মিলল নবজাতক শিশু ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিসিডিপি গঠন করা হবে : পরিবেশমন্ত্রী অননুমোদিত জমি ভরাট কার্যক্রমের সন্ধান পেলে দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ ভূমিমন্ত্রীর ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা ইসরাইলকে পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাতের ব্যাপারে সতর্ক করলো আইআরজিসি

সকল