২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

জটিল ঘূর্ণিতে মালয়েশিয়ার রাজনীতি

জটিল ঘূর্ণিতে পড়েছে মালয়েশিয়ার রাজনীতি। ঘটনা শুরুর একদিন আগে মাহাথিরের বাসায় আনোয়ার ইব্রাহিম - ছবি : সংগৃহীত

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ক্ষমতাধর মুসলিম রাষ্ট্র মালয়েশিয়ার রাজনীতি এক জটিল ঘূর্ণির মধ্যে পড়েছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাতের সাথে আন্তর্জাতিক প্রভাব বিস্তারের বিষয় যুক্ত হয়ে তা মালয়েশিয়ায় একটি বড় রকমের রাজনৈতিক রূপান্তর ঘটাতে চলেছে বলে মনে হচ্ছে। দৃশ্যত, পাকাতান হারাপান জোটের প্রধান দল পিকেআর প্রধান আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে একটি রাজনৈতিক অভ্যুত্থান ঘটানো হয়েছে মালয়েশিয়ায়।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বারিসান ন্যাশনাল সরকারকে বিদায় করার জন্য ডা: মাহাথির মোহাম্মদ সব বিরোধী দলকে নিয়ে এক মহা-ঐক্যজোট গঠন করেছিলেন। সে জোটের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে বিরোধী পাকাতান হারাপানের নেতৃত্ব দেন মাহাথির মোহাম্মদ। তার নেতৃত্বে জোটটি জয় লাভ করে। এই জোট গঠনের আগে মাহাথিরের সাথে আনোয়ারের লিখিত চুক্তি হয় যে, পাকাতান জয়ী হলে পরবর্তী সরকারের দুই বছরের জন্য নেতৃত্ব দেবেন মাহাথির মোহাম্মদ। আর এরপর আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব হস্তান্তর করবেন।

এই সমঝোতা অনুসারে মাহাথিরের নেতৃত্বে পাকাতান হারাপানের সরকার চলে আসছিল। আগামী মে মাসে এই সরকারের দু’বছর মেয়াদ পূর্ণ করার কথা। ঠিক এ সময়ে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে জটিল এক উত্তাল অবস্থা তৈরি করা হয়। মাহাথির মোহাম্মদ পূর্ব সমঝোতা অনুসারে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে অনির্দিষ্ট কথাবার্তা বলতে থাকেন। কোনো সময় তিনি বলেন, অঙ্গীকার অনুসারে আনোয়ারের কাছেই সময়মতো ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। আবার কোনো সময় বলেন, কখন কাকে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন এ বিষয় সুনির্দিষ্ট নয়। এ সময়ে পিকেআর’র ডেপুটি প্রেসিডেন্ট আজমিন আলী দলের মধ্যে সমান্তরাল একটি বলয় তৈরি করে পদে পদে আনোয়ারকে চ্যালেঞ্জ করতে থাকেন। আর দাবি করতে থাকেন যে, মাহাথিরকে পুরো মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে দিতে হবে।

এই পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে ওঠে সম্প্রতি পাকাতান হারাপান জোটের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ফলে। চুক্তি অনুসারে দু’বছর পর প্রধানমন্ত্রিত্ব আনোয়ারের কাছে হস্তান্তরের কথা থাকলেও মাহাথির আগামী নভেম্বরে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠেয় এপেক সম্মেলনের আগে দায়িত্ব হস্তান্তর না করার কথা ঘোষণা করেন। হারাপান জোটের সর্বোচ্চ ফোরামে এই বিষয়ে একমত হয়েই অন্য নেতারা ডা: মাহাথিরকে নভেম্বরের পরে হলেও একটি সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করার জন্য চাপ দেন। সেটি করতে অস্বীকার করে মাহাথির ও তার দলের অন্য নেতারা পাকাতান হারাপান জোট ত্যাগ করার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। শেষ পর্যন্ত পাকাতান নেতারা ক্ষমতা হস্তান্তরের তারিখ নির্ধারণের বিষয়টি মাহাথিরের ওপর ছেড়ে দেন।

এ দিকে মাহাথিরের দল পিপিবিএম, পিকেআরের আজমিন গ্রুপ, বিরোধী উমনু ও ইসলামিস্ট পাস একটি বৃহত্তর মালয় দলগুলোর জোট গঠনের প্রক্রিয়া সমাপ্ত করে আনে। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে গত শনিবার ছিল ঘটনাবহুল দিন। এ দিন বিরোধী উমনু, পাস, পিপিবিএম নিজ পিকেআর-এর আজমিন অনুগতরা পৃথকভাবে নিজ নিজ ফোরামের সভা করে কেবল মালয় দলগুলোর সরকার গঠনের প্রচেষ্টার চূড়ান্ত কার্যক্রম চালান। হারাপান থেকে আজমিন অ্যান্ড কোং এবং পিপিবিএম বেরিয়ে আসার ঘোষণা দেয়। এই তিন দল ও আজমিন গ্রুপ এবং মালয়েশিয়ার সাবাহ রাজ্যের শাসকদল ওয়ারিসান ও সারওয়াকের শাসকদল জিপিএসকে নিয়ে ১২৯ জন এমপির সমর্থনের একটি হিসাব নিয়ে রাজা (ইয়াং ডি-পার্টুয়ান আগং) সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমদ শাহের কাছে সরকার গঠনের আর্জি নিয়ে হাজির হন এসব দলের নেতারা। রাজা তাদের কাছে আরো চিন্তাভাবনা করার জন্য সময় নেন।

শনিবারের পাকাতানবিরোধী সরকার গঠনের এই তৎপরতায় আনোয়ার ইব্রাহিম ও শাসক জোটের অন্য শরিক দলগুলো পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। রোববার আনোয়ার ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী উপপ্রধানমন্ত্রী ডা: ওয়ান আজিজাহ রাজার সাথে সাক্ষাৎ করেন। তার আগেই পাকাতানের শীর্ষ নেতারা মাহাথিরের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তার ওপর আস্থা স্থাপন করে বলেন যে, রাজনৈতিক অভ্যুত্থানের মাস্টারমাইন্ড মাহাথির নন। এরপর মাহাথির প্রধানমন্ত্রিত্ব ও নিজ দল পিপিবিএম’র চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন। সোমবার রাজার সাথে সাক্ষাৎ করেন মাহাথির। রাজা মাহাথিরের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহাথিরকে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত দেন। একই সাথে মন্ত্রিসভা ভেঙে দেন তিনি।

শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত তিন দিনের শ্বাসরুদ্ধকর মালয়েশিয়ায় নানা ধরনের অনিশ্চয়তা, আশা ও আশঙ্কা তৈরি হয়। আনোয়ার অনুসারীরা প্রথম দিন নিরাশ হলেও দ্বিতীয় দিন কিছুটা আশাবাদী হয়ে ওঠেন। তৃতীয় দিনের ঘটনাবলি আবারো অনিশ্চিত হয়ে উঠতে শুরু করে। এর পরের ঘটনা পরম্পরা বিশ্লেষণ ও অন্তরালের খবরাখবরে মনে হয় মালয়েশিয়ার রাজনীতি ও ক্ষমতা নতুন এক অভিমুখ নিতে শুরু করেছে। এই গতিধারা পাকাতান হারাপানের জন্য তেমন একটি সুখকর হবে বলে মনে হচ্ছে না।

মালয়েশিয়ার সংবিধান অনুসারে ২২২ আসনের সংসদের নিম্নকক্ষে ১১২ আসনের সমর্থনপুষ্ট দল বা জোট সরকার গঠন করবে। নতুন মেরুকরণে এই সংখ্যার ভারসাম্য নির্ধারণে নির্ণায়ক দল হলো মাহাথিরের পিপিবিএম। দলটি পাকাতান হারাপান জোটে থাকলে এই জোটই সরকার গঠন করতে পারে। আর দলটি যদি বিরোধী দলগুলোর সাথে হাত মেলায় তাহলে সরকার গঠন করবে তারা। মাহাথিরের প্রতি সাবাহ ও সারওয়াকের ক্ষমতাসীন আঞ্চলিক দুই দলের ২৭ জন এমপির সমর্থন থাকতে পারে। ফলে শনিবারের মেরুকরণ যেটি পরের দিনগুলোতেও বজায় রয়েছে বলে মনে হয় তাতে নতুন সরকার পাকাতানের বিচ্ছিন্ন অংশ ও বিরোধী উমনু-পাস আর সারওয়াকের জিপিএস ও সাবাহর ওয়ারিসান দলের সমন্বয়ে হবে বলে অনেকের ধারণা।

অন্য দিকে পিকেআর ডিএপি ও আমানাহ মাহাথিরের ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করে মেয়াদের বাকি সময় তাকে ক্ষমতায় থাকতে দিলে পাকাতান জোট আবার জোড়া লাগতে পারে। অথবা সাবাহ সারওয়াকের দলগুলোর সমর্থন পেলেও পাকাতান হারাপান সরকার গঠন করতে পারে। সেই সম্ভাবনা একপ্রকার নেই বললেই চলে। মাহাথির ও তার দলের জন্য উমনু-পাসের সাথে মিলে সরকার গঠনে একটি বড় সমস্যা হলো এর মাধ্যমে একেবারে নতুন যাত্রা করতে হবে শতায়ুর কাছাকাছি পৌঁছা মাহাথিরকে। দুর্নীতি-অপশাসনের বিরুদ্ধে এত দিন তিনি যেসব কথাবার্তা বলেছেন, সেসব আর বলা যাবে না। উমনুর নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

নতুন মেরুকরণের জন্য আজমিন আলী গত শনিবার প্যাটেলিন জায়ার শেরাটন হোটেলে যে ডিনারের আয়োজন করেছিলেন সেখানে উমনু নেতারা নবগঠিতব্য পাকাতান-ন্যাশনাল জোটের প্রধান এবং সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী উমনু থেকে করার দাবি জানিয়েছেন। এসব বিষয় মেনে নিয়ে মাহাথির আগামী তিন বছর ক্ষমতায় থাকার কথা ভাববেন কি না বলা মুশকিল। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদকে অতীতে ক্ষমতার স্বার্থে অনেক কিছু করতে দেখা গেছে। আজমিন আলী মাহাথিরকে ধর্মপিতা বলে থাকেন। ফলে আজমিনের গত দুই বছরের কর্মকাণ্ডের কিছুই মাহাথির জানতেন না, বিষয়টি সে রকম মনে করা কঠিন। ফলে মাহাথির ক্ষমতায় নিজে থাকুন অথবা কারো কাছে হস্তান্তর করুন সেই ক্ষমতার অধিকারী আনোয়ার না হয়ে অন্য কেউ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কিছু দিন আগে আনোয়ারের বিরুদ্ধে তৃতীয় দফা সমকামিতার মামলা দেয়া তারই ইঙ্গিত বলে মনে হয়।

মালয়েশিয়ার রাজনীতির আরো দু’টি বাস্তবতা রয়েছে। এর একটি অভ্যন্তরীণ আর অন্যটি আন্তর্জাতিক বিষয়। অভ্যন্তরীণ বিষয়টি হলো জনসংখ্যার নৃতাত্ত্বিক ভারসাম্যগত অবস্থা। দেশটির ৬০ শতাংশের বেশি হলো ভূমিপুত্রা- মালয় ও অন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠী, যাদের প্রায় সবাই হলো মুসলিম। বাকিদের ২৭ শতাংশের মতো ‘চীনা’ এবং ১০ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে তামিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠী। মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে মালয় আধিপত্য সব সময় বজায় থাকলেও ৭০ শতাংশ অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ চীনাদের হাতে। চীনা ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মূল দল হলো ডিএপি, যেটির ৪২টি সংসদীয় আসন রয়েছে। পাকাতান সরকারের অন্যতম প্রধান শরিক দল এটি। মালয়েশিয়ার অতীতের প্রায় সব সরকারেই চীনা-ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্যে মন্ত্রী ছিলেন; কিন্তু পাকাতান আমলে এসে সরকারের নীতিনির্ধারণে তাদের প্রভাব বেশ খানিকটা বেড়ে গেছে। সরকারের কাঠামো নির্ধারণে মাহাথিরের ভূমিকা থাকলেও মালয়দের মধ্যে অনেকের ধারণা আনোয়ার ইব্রাহিম প্রধানমন্ত্রী হলে ডিএপির প্রভাব আরো বাড়বে। এই ধারণা মালয়দের মধ্যে বেশি সৃষ্টি হয়েছে উমনুর পাশাপাশি পাস ব্যাপকভাবে এই প্রচারণা চালানোর কারণে।

বিগত নির্বাচনে মাহাথির মোহাম্মদ প্রচারণায় মূল ভূমিকা পালন করার ফলে চীনা ভীতির বিষয়টি সেভাবে চাঙ্গা হয়নি। মালয়দের একটি অংশ বিশেষত তরুণ মালয়রা দুর্নীতি ও অপশাসনে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পাকাতান হারাপানকে ভোট দিয়েছে। আগামী নির্বাচনে সেটির কতটা প্রভাব হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ এর মধ্যে সাম্প্রতিক প্রায় সব উপনির্বাচনে পাকাতান প্রার্থীদের পরাজয় ঘটেছে। মাহাথির হয়তো তার দলের জন্য মালয় ধারায় থেকে পরের নির্বাচনে জয় পেতে চাইছেন।

মালয়েশিয়ার রাজনীতির উত্তাল অবস্থার পেছনে আন্তর্জাতিক রাজনীতির একটি যোগসূত্রও রয়েছে। আনোয়ার ইব্রাহিমের রাজনৈতিক পটভূমি হলো ইসলামী যুব আন্দোলনে আবিমের সাথে। আবিমের সভাপতি হিসেবে আনোয়ারের রাজনৈতিক উত্থান শুরু হয়। ব্যক্তিগতভাবে তিনি তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। পাকাতান ক্ষমতায় আসার পর থেকে সৌদি- আমিরাত বলয়ের চেয়েও তুরস্ক-ইরানের সাথে মালয়েশিয়ার সম্পর্ক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়। দেশটি এর মধ্যে সৌদি নেতৃত্বাধীন প্রতিরক্ষা জোট থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আর তুরস্ক, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, ইরানের সাথে মিলে ওআইসি দেশগুলোর মধ্যে একটি শক্তিমান বলয় তৈরির লক্ষ্যে মাহাথির সম্প্রতি কুয়ালালামপুরে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করেন। রিয়াদ-আবুধাবি এই সম্মেলনকে ওআইসির পাল্টা আয়োজন হিসেবে দেখেছে। এরপর তারা কোনোভাবেই তুরস্কের মতো নেতৃত্ব মালয়েশিয়া বা অন্য কোনো শক্তিমান মুসিলম দেশে দেখতে চাইছে না। আনোয়ারের ক্ষমতার কক্ষপথ থেকে অনেকখানি ছিটকে পড়ার পেছনে সৌদি- আমিরাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে কুয়ালামপুরের রাজনীতির গভীর পর্যবেক্ষক অনেকে মনে করেন।

মালয়েশিয়ার রাজনীতি এখন যে অবস্থায় এসে উপনীত হয়েছে তাতে দেশটিতে কী হতে যাচ্ছে এ প্রশ্ন অনেকের। তিনটি সম্ভাব্য দৃশ্যপট দেখা যেতে পারে মালয়েশিয়ায়।

প্রথম দৃশ্যপটটি হলো, উমনু-পাস-পিপিবিএম, আজমিন কোং, ওয়ারিসান ও জিপিএসের মধ্যে যে রাজনৈতিক জোট গঠনের প্রচেষ্টা চলছে সেটি চূড়ান্ত হওয়ার পর তারা রাজার কাছে সরকার গঠনের আর্জি জানাবেন। সংবিধান অনুসারে তাদের দাবি মেনে নিয়ে রাজা সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন। এ ক্ষেত্রে মাহাথির নতুন সরকারেরও প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। অথবা মহিউদ্দিন ইয়াসিনকে প্রধানমন্ত্রী এবং হিশামুদ্দিন হোসেন অথবা আজমিন আলীকে উপপ্রধানমন্ত্রী করতে পারেন। কেবল মালয় দলগুলো নতুন সরকার গঠন করবে। বারিসানের শরিক দল অথবা আজমিন অনুগত দুয়েকজন চীনাকে মন্ত্রিসভায় নেয়া হতে পারে।

দ্বিতীয় দৃশ্যপট অনুসারে, পাকাতান হারাপানের দলগুলোর সাথে মাহাথিরের পিপিবিএমের নতুন সমঝোতা হতে পারে। সে সমঝোতা অনুসারে মাহাথির এক বছর বা বাকি সময় প্রধানমন্ত্রী থাকবেন আর উপপ্রধানমন্ত্রী হবেন আনোয়ার ইব্রাহিম। মাহাথির ক্ষমতা ছাড়ার আগে আনোয়ারের কাছে প্রধানমন্ত্রিত্ব দিয়ে যাবেন। এ ক্ষেত্রে পাকাতান হারাপান জোট নতুন অবয়ব লাভ করবে।

তৃতীয় দৃশ্যপট হলো, মাহাথির নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করে বেশ কিছু দিন অন্তর্বর্তী সরকার চালিয়ে যাবেন। আর তার নেতৃত্বে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে নির্বাচনে যারা ক্ষমতায় থাকবেন তারা নতুন সরকার গঠন করবেন। নতুন কোনো মেরুকরণ না হলে তাতে উমনু-পাস ও তাদের সহযোগীরা ভালো ফল করতে পারে।

এই সম্ভাব্য তিন দৃশ্যপটের মধ্যে প্রথমটি ঘটার সম্ভাবনা প্রবল। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এটি পরিষ্কার হয়ে উঠবে। মালয়েশিয়ার এবং জটিল আন্তর্জাতিক রাজনীতির ঘূর্ণিপাকে আনোয়ারের ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা সম্ভবত আরো একবার দূরে চলে যাচ্ছে। আর একেবারে বৈরী দৃশ্যপট সামনে এলে তার বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দিয়ে আবারো কারারুদ্ধ করা হতে পারে। আজমিনের অনুুসারীরা এসব কথা বলে সমর্থকদের আশাবাদী করতে চাইছেন। অন্য দিকে আনোয়ার অনুসারীরা ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে আবারো এক উজ্জ্বল সকালের প্রত্যাশায় রয়েছেন। কে জানে সেই সকাল কবে আসবে!

mrkmmb@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে প্রথম হয়েছেন যারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিজ দেশে ৫ বছর পর ফিরল দিপক চট্টগ্রামে ৬ কিশোর গ্যাংয়ের ৩৩ সদস্য আটক শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : শামসুল ইসলাম ইউরো ২০২৪’কে সামনে রেখে দল নির্বাচনে বিপাকে সাউথগেট ভারতীয় পণ্য বর্জনকে যে কারণে ন্যায়সঙ্গত বললেন রিজভী মাকে ভরণ-পোষণ না দেয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত ঢাবির সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিরাপত্তা-বিষয়ক আলোচনা করতে উত্তর কোরিয়ায় রুশ গোয়েন্দা প্রধান

সকল