২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সমাজে যত যাতনা

-

নারী নির্যাতন, হত্যা, গুম, রোগশোক, সড়কে মৃত্যু, অনিয়ম, দুর্নীতি, মানুষের অধিকারহীনতা- সব মিলিয়ে যত দুঃসংবাদ নিয়ে দিন কাটছে বাংলাদেশের মানুষের। প্রতিদিনের খবরের কাগজসহ আর যত সংবাদমাধ্যম রয়েছে তাতে প্রধানত এমন শত অপসংবাদ প্রকাশ পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কারো পক্ষে স্বাভাবিক থাকা সম্ভব নয়। তার ওপর, নানা আর্থসামাজিক ইস্যু নিয়ে চরম দুর্দশার মধ্যে জীবনযাপন করছে মানুষ। সবচেয়ে অবাক হতে হয় এই ভেবে যে, এসব থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য উদ্যোগ আয়োজনের অনেক কথা বলা হয় বটে; কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তার কোনো প্রতিফলন নেই। এমন অর্থহীন আশ্বাস মানুষের মধ্যে হতাশা আর ক্ষোভ সৃষ্টি করে চলেছে। রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ হরহামেশা নানা উন্নয়ন আর সমৃদ্ধির কথা বলছেন। কিন্তু এসব কথার প্রতিফলন জনসাধারণের জীবনে কোনো পরিবর্তনের সূচনা করছে না। রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন তখনই যথার্থ বলা যাবে যখন সেটি বৈষম্য ব্যতিরেকে দেশের সবার দুর্ভোগকে কমাতে সক্ষম হবে। শীর্ষ রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সম্প্রতি এ ধারণা দেয়া হয়েছে যে, তৃণমূলের উন্নয়ন ঘটলেই কেবল বলা যাবে এ দেশের অগ্রগতি হচ্ছে। এখন প্রশাসনের সব পর্যায়ে এই ধারণা প্রতিফলন ঘটাতে হবে। আসলে এটিই উন্নয়নের মূল কথা; আর সব কথা অসার।

মানুষের যত কষ্টের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোর সাথে মৌলিক মানবাধিকারের প্রশ্ন সরাসরি জড়িত। বাংলাদেশের সংবিধানে এসব অধিকারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সংবিধান হচ্ছে রাষ্ট্রের পথ চলার দিকনির্দেশিকা। তাই মানবাধিকারের বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া বিশেষত সরকারের বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে। এখন আমাদের সমাজের যে হাল, তাতে এ কথা কোনোভাবে বলা যাবে না যে, প্রশাসন সঠিকভাবে এসব ক্ষেত্রে যথাবিহিত ব্যবস্থার দিকে নজর দিচ্ছে। অথচ সমাজের নেতাদের কাছে সাধারণ মানুষের শুধু দাবি নয়; এটি তাদের বুঝতে হবে যে, নেতৃত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ‘উপর’ থেকে বলা হচ্ছেÑ আমরা এগোচ্ছি। কিন্তু মানুষের সাধারণ অধিকারগুলো যদি রক্ষিত ও বিকশিত না হয় তবে এগিয়ে যাওয়ার সব বাক্য বচন হবে বাচালতা যা শুধু কপট আর দূরাচারীদের জন্যই সাজে।

যেসব অব্যবস্থার বিষয়গুলো তুলে ধরে এ লেখার সূচনা করা হয়েছে, মোটা দাগে তা শুধু গাফিলতিই নয়। আইন কানুনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো এবং প্রয়োগের ঘাটতি থেকেই হচ্ছে। নাগরিকরা এখন যেসব অবস্থার সম্মুখীন, সেটা বহুলাংশে সমাজে অপরাধ সঙ্ঘটিত হওয়া এবং তা দমনে আইন প্রয়োগের দুর্বলতার কারণে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য ও সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই আইন প্রণীত ও কার্যকর হয়ে থাকে। যে সমাজে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ রয়েছে অর্থাৎ বিধান মতো দণ্ডের ব্যবস্থা রয়েছে, সে জনপদে শান্তিশৃঙ্খলা বিরাজ করে এবং নাগরিকরা স্বস্তি ও নিরাপত্তার মধ্যে বসবাস করার সুযোগ পায়। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আইনের শাসন কার্যকর থাকা। অর্থাৎ আইনের বিধান পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রতিপালিত হওয়া। এর সাথে যোগ হয়ে থাকে পছন্দ অপছন্দ ব্যতিরেকে তার নিরপেক্ষভাবে সমান প্রয়োগ। আমাদের দেশে আইনের কোনো স্বল্পতা নেই। তাই এমন কোনো অপরাধ নেই যার প্রতিবিধান করা নিয়ে দেশের আইনে সম্ভব নয়। আসলে এখানে অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বহু বাধা রয়েছে। বিশেষ করে যারা ব্যবস্থা নেবেন, তাদের কাছে আইনই সর্বোচ্চ প্রাধান্য পাওয়ার বিষয়। কিন্তু নানাভাবেই সেটি বিঘ্নিত হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে তারা নানাভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকেন। রাজনৈতিক ও বিভিন্ন প্রেশার গ্রুপের চাপের মোকাবেলায় তাদের টিকে থাকা সম্ভব হয় না।

গোটা বিশ্বেই এখন নারী অধিকার ও ক্ষমতায়ন নিয়ে বহু কাজ হচ্ছে। নারী সমাজের উন্নয়নকে বিভিন্ন দেশ নিজেদের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বাংলাদেশেও নারী সমাজের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে পরিকল্পনা ও কর্মসূচির কথা শোনা যায়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের এখানেও নারীরা মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। তাদের পেছনে ফেলে রেখে সব নাগরিকের প্রতি সমান মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীদের অগ্রগতির কথা বলেই শুধু দায়িত্ব পালন শেষ হয়ে যাবে না। তাদের উন্নতি ও মর্যাদার পাশাপাশি নারী সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আজ গভীর উদ্বেগের সাথে বলতে হচ্ছে, নারী সমাজের সম্ভ্রম সম্মান ও ইজ্জত চরম ভঙ্গুর অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে। গোটা দেশে প্রতিদিন অসংখ্য গৃহবধূ যুবতী ও কিশোরী শিকার হচ্ছে যৌন নির্যাতনের। এই বিষয়টি এতটাই নাজুক যে, তা এখন দেশের নারী সমাজের এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এটি অত্যন্ত আশঙ্কার বিষয় যে, আমাদের সমাজ ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান নারীর সম্ভ্রমরক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছে। এর প্রতিকার নিশ্চিত করা এককভাবে কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। সবচেয়ে বড় কথা, নীতি-নৈতিকতার যে মারাত্মক অবক্ষয় আমাদের সমাজে বিরাজ করছে তাকে উদ্ধারের কাজই প্রথমে শুরু করতে হবে। কেননা দূরাচারীদের মধ্যে নীতি-নৈতিকতা ও আইনকানুনের প্রতি বিন্দুমাত্র সমীহ শ্রদ্ধা নেই। সেই সাথে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা দ্রুততার সাথে করা দরকার।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের ব্যাপক অসন্তুষ্টি রয়েছে। সমাজবিরোধী শক্তির দৌরাত্ম্য এতটা বেড়েছে যে, তাদের দৌরাত্ম্যে সাধারণের জীবন বিপন্ন হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ। আইনকানুনসহ কোনো কিছুতে তাদের রোখা যাচ্ছে না। এদের সাহস সীমাহীন হয়ে ওঠার পেছনে কারণ হচ্ছে, রাজনীতির সাথে তাদের সম্পৃক্ততা। রাজনীতি কেউকেটাদের পেটোয়া হিসেবে এরা কাজ করে বলে সেই সব ব্যক্তির ‘আশীর্বাদ’ তাদের ওপর থাকে। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে তারা দাপট দেখিয়ে বেড়ায়।

ইদানীং কমলেও মানুষ গুম হয়ে যাওয়ার বহু ঘটনা এ দেশে ঘটেছে। গুম হয়ে যাওয়া এসব মানুষের পরিবার পরিজন অসহায় হয়ে স্বজনদের খোঁজে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেও তাদের কোনো হদিস পাননি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকেও এ নিয়ে কোনো সদুত্তর পাননি পরিবারের সদস্যরা। এসব ঘটনার ব্যাপারেও রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শোনা যায় না কোনো আশার কথা। এমন অভিজ্ঞতা সমাজের মানুষকে ভীতিগ্রস্ত করে তুলেছে।

মানুষকে প্রতিদিন তার দায়িত্ব কর্তব্য পালনের জন্য বাসস্থান থেকে বের হতে হয়। তাই সড়কে মানুষ যাতে নিরাপদে চলাফেরা করতে সক্ষম হয় সেজন্য সেখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা প্রশাসনের সাধারণ দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এ দায়িত্ব পালন কতটা সুষ্ঠু হচ্ছে সেটি প্রতীয়মান হবে সড়কে মানুষের নিরাপদে চলাচলের মধ্য দিয়ে। সড়কে মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য যানবাহনও চলে। এসব নিয়ন্ত্রণের জন্য বিধি-বিধানের কোনো কমতি নেই। যানবাহন সড়কে চলার উপযুক্ত কিনা, চালক যান চালাতে সক্ষম কিনা- এসব বিষয়সহ যান চলাচলে যেসব নিয়মনীতি রয়েছে তা অনুসৃত হচ্ছে কিনা- এগুলো দেখার জন্য ট্রাফিক পুলিশ রয়েছে। সব দিকে যদি সুষ্ঠু তদারকি হয় তবে সড়কে অনিচ্ছা সত্ত্বেও দুর্ঘটনা ঘটবে না, সেটি বলা যাবে না। তবে সেটি হবে নিছক দুর্ঘটনা। কিন্তু এখন দেশে যেভাবে এবং যে হারে প্রতিদিন বহু সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে এবং তার ফলে প্রতিদিন বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটছে, এসবকে কোনোভাবে সাধারণ ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা যায় না। এ জন্যই সমাজে এখন ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’ গড়ে উঠেছে। অথচ সড়ক আইন কার্যকর করে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধানের একটি নির্দোষ ও সৎ আন্দোলনের উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে; তাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। এসব মিলিয়ে মানুষের জীবনের নিরাপত্তার বিষয় কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অথচ এ নিয়ে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের যে ভূমিকা থাকার কথা, তার ন্যূনতম নেই।

বাংলাদেশে যে মারাত্মক অনিয়ম দুর্নীতি চলছে তা দেশ ছাপিয়ে আন্তর্জাতিক বলয়ে পৌঁছে গেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর যে তালিকা রয়েছে, তার শীর্ষে অবস্থান করছি আমরা। এমন একটি দেশের নাগরিক হিসেবে বহির্বিশ্বে জাতি হিসেবে লজ্জা তো পেতেই হচ্ছে, সেই সাথে দেশের ভেতরে দুর্নীতির যে জাল ছড়িয়ে রয়েছে তাতে সৎ মানুষের ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। উৎকোচ দেয়া ভিন্ন সাধারণ মানুষের কোনো কাজ করা সম্ভব নয়। তবে এই দুর্নীতির শিকার সাধারণ মানুষ হলেও তারা কিন্তু দুর্নীতিপরায়ণ নন। দুর্নীতির সূতিকাগার হচ্ছে প্রশাসন আর উচ্চ মহল। তাই প্রশাসনের কাছে এই অনিয়মের কার্যকর কোনো প্রতিকার নেই। আসলে সমাজ এমন ব্যাধিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে যে, তার সর্বাঙ্গে ক্ষত। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সহজ নয়। এ জন্য সর্বব্যাপী একটি শুদ্ধাচার আন্দোলন জরুরি। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে অনাচার বাসা বেঁধেছে তাকে দূরীভূত করতে হবে সে আন্দোলন করে। সমাজ থেকে দুর্নীতি হটাতে না পারলে তা একসময় এমন প্রকট রূপ ধারণ করবে যে, সেটি সব কিছু গ্রাস করবে। সম্প্রতি দেশে দৃশ্যত দুর্নীতিবিরোধী একটি অভিযান শুরু হয়েছিল। কিন্তু কোনো অজ্ঞাত কারণে সেটি আর চলছে না।

সমস্যা নিয়েই মানুষকে বাঁচতে হয়; কিন্তু তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উদ্যোগ সবাই দেখতে চায়। এই জনপদের মানুষের দুর্ভোগের কারণ অনেক। তা নিয়ে উপরে আলোচনা হয়েছে। এসব বহুমুখী সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব ভিন্ন ভিন্ন সংস্থার। এটি বাস্তবতা হলেও, তার সার্বিক দেখভালে নিয়োজিত থাকতে হবে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের। মানুষের এসব সমস্যা দূর করে তাদের উপশম দেয়ার ক্ষেত্রে যদি কোনো অক্ষমতা লক্ষ করা যায়, তবে এই ব্যর্থতার দশ আনা দায় রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে। এই কর্তৃপক্ষের প্রশাসন তদারকিতে ঘাটতির কারণেই সর্বত্র দায়িত্ব পালনে স্থবিরতা দেখা দিতে পারে। বস্তুত সেটিই এখন দেশে ঘটছে। এমন তদারকির পাশাপাশি রজানৈতিক কর্তৃপক্ষ যদি যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিদের প্রশাসনে পদায়ন করতে ব্যর্থ হয়, বিশেষ করে ব্যক্তির যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতা বিবেচনায় না নিয়ে কেবল নিজেদের পছন্দ অপছন্দের মাপকাঠির ভিত্তিতে কর্ম বণ্টন করা হয়, তবে অযোগ্যদের কাছ থেকে ঈপ্সিত ফলাফল পাওয়া যাবে না। আজ সমাজে সমস্যার স্তূপ, তার কারণ এটাই। অথচ এমন চরম পরিণতি দেখার পরও এই পথ থেকে সরে আসার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।

একটি প্রশাসনকে সময়োপযোগী এবং দক্ষ গতিশীল করতে হলে তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হয় সর্বাগ্রে। জবাবদিহি করার মানসিকতা দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক রাখতে পারে। কাজের লক্ষ্য বাস্তবায়নে যদি অবহেলা করা হয়, তবে সে কাজ কারো কোনো কল্যাণে আসবে না। ব্যক্তি সমাজ ও রাষ্ট্রের জবাবদিহিতার অনুশীলন যথাযথ হলে দেশে শুদ্ধাচারের বিকাশ ঘটবে। উপরে সমাজজীবনের যে নানা ব্যত্যয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এই জবাবদিহিতার সাথে সাথে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের কর্মনিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। সাধারণ মানুষের দেয়া করের অর্থ দিয়েই তারা জীবন নির্বাহ করে থাকেন। এই বোধকে সদা জাগ্রত রাখতে হবে। দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা সাধনার যে কথা এখন বলা হচ্ছে, এমন সব বচন অর্থহীন হয়ে পড়বে যদি সরকারি নির্বাহীরা পর্যাপ্ত ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হন।

জবাবদিহিতা নিয়ে সবিশেষ গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে; সেটি আসলে তখনই অর্থবহ হবে যখন জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার যে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আইনসভা বা পার্লামেন্ট তাকে সক্রিয় করা হবে। রাজনৈতিক নির্বাহীসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন করা নিয়ে এখন যেসব ভুলচুক হামেশা হচ্ছে, সে বিষয়ে আলোচনা পর্যালোচনা করে সব বিচ্যুতির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত এবং তার প্রতিবিধান করাই হচ্ছে আইন বিভাগের সভ্যদের দায়িত্ব। এখন কি সেটার জবাব পাওয়া যাবে? অথচ তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে প্রশাসনের ভুলত্রুটি দূর করা এবং সরকারকে সঠিকবৃত্তে ধরে রাখার জন্য কাজ করে যাওয়া। এই সংস্থাটি যদি অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তবে রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সঠিকভাবে চলার ক্ষেত্রে যত গাফিলতি সেসব দূর করা মোটেও সম্ভব হবে না।

ndigantababor@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement