১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রশাসক বটে!

-

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা ভারতবর্ষের শাসনব্যবস্থা হস্তগত করার পর প্রথমত তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল ভূমি প্রশাসনের সুষ্ঠু ও কার্যকর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা করা। এটা করতে গিয়ে প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে তারা জেলা ব্যবস্থার প্রবর্তন করে প্রতিটি জেলায় ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর হিসেবে মুখ্য রাজস্ব কর্মকর্তার পদ সৃষ্টি করেছিলেন। ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টররা কর আদায় করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলে তাদের ফৌজদারি ক্ষমতা অর্পণ করা হয়। পরে কোনো এক পর্যায়ে ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টরের পদবি পরিবর্তন করে ‘ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট’ করা হয়।

১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ বিভাগের ফলে ভারত ও পাকিস্তান নামক দু’টি পৃথক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হলেও উভয় রাষ্ট্রে জেলার মুখ্য রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের পদ অব্যাহত থাকে। রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটদের ফৌজদারি বিচারকার্য তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেয়া হয়। অধিকন্তু ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাসম্পন্ন ছিলেন।

পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খানের শাসনামলের প্রথম দিকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পদবি পরিবর্তন করে ‘ডেপুটি কমিশনার’ করা হয় যা অদ্যাবধি অব্যাহত আছে। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর ডেপুটি কমিশনারের বাংলা নামকরণ করা হয় ‘জেলা প্রশাসক’ এবং বর্তমানে ডেপুটি কমিশনাররা ‘জেলা প্রশাসক’ হিসেবে বহুল পরিচিত হলেও এর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।

পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হওয়ার পর বর্তমান বাংলাদেশ ‘পূর্ব-পাকিস্তান’ নামে অভিহিত হতো এবং তখন পূর্ব পাকিস্তানে ১৭টি জেলা ছিল। বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির অব্যবহিত আগে পূর্ব পাকিস্তানে জেলার সংখ্যা ১৯টিতে উন্নীত হলো। অতঃপর ১৯৮৪ সালে সামরিক শাসক এরশাদের সময় ব্যাপক প্রশাসনিক সংস্কারের অংশ হিসেবে সব মহকুমাকে জেলায় রূপান্তরিত করায় জেলার সংখ্যা ৬৪তে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক ওই জেলায় সরকারের মুখ্য প্রতিনিধি ও সমন্বয়কারী। সরকারের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তাকে কেন্দ্র করেই নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হচ্ছে।

১ নভেম্বর, ২০০৭ সালে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ দায়রা জজের ওপর ন্যস্ত হলেও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ জেলা প্রশাসকের ওপরেই রয়ে গেছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ফৌজদারি কার্যবিধির অনুবলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আগের মতো একইরূপ ক্ষমতা ভোগ করে আসছেন।
যেকোনো জেলায় রাষ্ট্রের প্রধান এবং সরকারের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের যেকোনো মন্ত্রী বা পদস্থ কোনো কর্মকর্তা সরকারিভাবে সফরে গেলে সফর সংক্রান্ত যাবতীয় আয়োজন ও ব্যয়ভার জেলা প্রশাসকই নির্বাহ করে থাকেন। এর বাইরে জেলা প্রশাসকদের প্রতি দিনই জেলার বিভিন্ন কার্যক্রমের সমন্বয় করতে গিয়ে তার কার্যালয়ের সভাকক্ষে একাধিক সভার আয়োজন করতে হয়। এসব কার্যক্রমের ব্যয়ভার খড়পধষ জবয়ঁরৎবসবহঃ ফান্ড (সংক্ষেপে খজ) থেকে নির্বাহ করা হয়ে থাকে। খজ ফান্ডটি অডিটের আওতাবহির্ভূত এবং এ ফান্ডে কোন্ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা বা অনুদান সংগ্রহ করা হয়েছে এবং কিভাবে এ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে, এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকদের দায়বদ্ধতা থাকেনা। এ দায়বদ্ধতার অনুপস্থিতিতে এবং সর্বোপরি বিচারব্যবস্থাপনা ব্যতীত জেলার সব ধরনের কর্মকাণ্ডের সমন্বয়ক হওয়ার সুবাদে, অনেক জেলা প্রশাসক বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা যায়। কারো কারো ক্ষেত্রে এ ধরনের অনিয়মের মাত্রা নীতিজ্ঞান ও নৈতিকতার সীমারেখাকে অতিক্রম করতেও দেখা গেছে।

বিংশ শতাব্দীর ’৯০-এর দশকে নৈতিকতা ও নীতিজ্ঞান বিবর্জিত এবং দুর্নীতিতে নিমজ্জিত এমন এক প্রশাসকের আগমন ঘটেছিল একটি পুরাতন জেলায়। তিনি এ জেলায় প্রায় চার বছরকাল অবস্থান করেন। তার কন্যা ঢাকায় ভালো স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিধায় তিনি একাই কর্মস্থলে অবস্থান করতেন। কর্মস্থলে যোগদানের পরই তিনি সহকর্মী ও অধীনস্থদের ধারণা দেন তার সম্পদ বলতে ‘কিছুই নেই’। জেলা প্রশাসক হিসেবে তিনি যে বেতনভাতা পান তা দিয়ে তার সাংসারিক ব্যয় ও সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ নির্বাহ করা দূরের কথা, বাড়ি ভাড়া মেটানোও কষ্টসাধ্য। তাছাড়া আগামী পাঁচ-ছয় বছরের মধ্যে তিনি অবসরের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবেন। অথচ এখনো ঢাকায় ‘মাথা গোঁজার ঠাঁই’ করতে পারেননি এবং তিনটি কন্যা সন্তানের মধ্যে অন্তত দু’টি বিয়ের যোগ্য হওয়ায় অর্থাভাবে তাদের সুপাত্রস্থ করতে পারেননি। অনেকেই আগেই তার চরিত্রের এসব বৈশিষ্ট্য বিষয়ে অবহিত ছিলেন এবং তার অধীনে নির্বিঘেœ ও নিরাপদে চাকরি করতে এবং পদোন্নতির জন্য অত্যাবশ্যক ভালো ‘বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন’ পেতে হলে তাকে সহযোগিতা ছাড়া অপর কোনো বিকল্প নেই, এ কথা ভেবে সবাই তাকে আশ্বস্ত করলেন- স্যার, আপনি কোনো চিন্তা করবেন না, আপনার সব সুবিধা অসুবিধা দেখার দায়িত্ব আমাদের ওপর ছেড়ে দিন।’ সহকর্মী ও অধীনস্থদের কাছ থেকে তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়ায় তিনি এতটাই উদ্বেলিত হলেন যে, তিনি যে তাদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ- এ কথা ভুলে গিয়ে বললেন, আপনারা আমাকে আর্থিকভাবে চিন্তামুক্ত রাখলে আপনারাও আমার কাছ থেকে অনুরূপ সহযোগিতা পাবেন।’

জেলায় যোগদানের দু’তিন দিনের মধ্যেই তিনি তার এক সহকর্মী ও অধীনস্থ ব্যক্তিকে ডেকে একটি লম্বা তালিকা দিয়ে বললেন, বাজার থেকে এ তালিকায় উল্লিখিত দ্রব্যসামগ্রী কিনে জেলা প্রশাসকের পুলের একটি গাড়ি দিয়ে যেন তার ঢাকার বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়। দীর্ঘ তালিকায় চাল, ডাল, তেল, লবণ, সাবান, আটা, মাছ, গোশত, মুরগি, ধনেপাতা, লেবু, লালশাক, পুঁইশাক, ডাঁটা, লাউ, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আদা, জিরা, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচামরিচ, হলুদ, মরিচের গুঁড়া, ডিম, দুধ, ঘি, মাখন ও মিষ্টান্ন কোনো কিছুই অবশিষ্ট ছিলনা। তালিকা দেখে সহকর্মী ও অধীনস্থ উভয়ে পরামর্শ করে জেলা প্রশাসককে বললেন, এ সব দ্রব্য কেনার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা ঢাকার বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হলে ভাবী প্রয়োজন মতো বাজার থেকে কিনে নিতে পারবেন। এতে করে গাড়ির তেল খরচের সাশ্রয় হবে, অপর দিকে ড্রাইভার ও অপর একজন কর্মচারীকে ঢাকায় পাঠানোর বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। তাদের কথা শুনে জেলা প্রশাসক বললেন, আমাকে জ্ঞান দিতে আসবেন না। ঢাকার বাজারে ‘টাটকা’ বলে কি কিছু পাওয়া যায়? যা কিছু পাওয়া পায় সবইতো ভেজাল। আপনারা কি চান ভেজাল খেয়ে আপনাদের ভাবী ও ভাতিজিরা অসুস্থ হয়ে পড়–ক? ঢাকার বাসায় কি কোনো ছেলে মানুষ আছে যে, বাজারে গিয়ে এসব কিনে আনবে? এর পর থেকে উক্ত জেলা প্রশাসকের উক্ত জেলায় অবস্থানকালীন প্রায় চার বছর প্রতি সপ্তাহেই জেলা প্রশাসকের পুলের গাড়ি দিয়ে তালিকা অনুযায়ী দ্রব্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হতো। পরে অধিকাংশ সময় ঢাকা থেকে জেলা শহরে গাড়ি ফেরত আসার সময় পরবর্তী সপ্তাহের তালিকাটি ধরিয়ে দেয়া হতো এবং কখনো কখনো দেখা যেত তালিকায় আরো স্থান পেয়েছে হাঁড়িপাতিল, প্রেসার কুকার, ব্লেন্ডার, রাইস কুকার, টোস্টার, ইলেকট্রিক ইস্ত্রি, কাপ-প্লেট প্রভৃতি।

একদিন জেলা প্রশাসক আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় সভাপতিত্ব করাকালে হঠাৎ জরুরি টেলিফোন এলো। অপরপ্রাপ্ত থেকে যিনি কথা বলছিলেন তিনি অপর কেউ নন, আমাদের ‘ভাবী সাহেবা’। সভার কার্যক্রম স্থগিত করে প্রায় পনেরো মিনিট ধরে জেলা প্রশাসক তার স্ত্রীর সাথে যে কথোপকথন করলেন, তার সারবত্তা হচ্ছে ভাবী সন্ধ্যায় তিন কন্যাসহ একটি বিয়ের দাওয়াতে যোগদান করবেন। তাই সন্ধ্যার আগে বিয়ের অনুষ্ঠানের উপহারসামগ্রী ঢাকার বাসায় পৌঁছ দিতে হবে। জেলা প্রশাসক দেখলেন, সন্ধ্যা হতে এখনো ঘণ্টা চারেক বাকি আছে। তিনি সাথে সাথে এনডিসিকে ডেকে বললেন, আটশ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে একটি শাড়ি কিনে সুন্দরভাবে র‌্যাপিং পেপার দিয়ে আবৃত করে তার ওপর তার একটি ভিজিটিং কার্ড লাগিয়ে সচরাচর ঢাকার বাসায় যায় এমন একজন বাহক মারফত উপহারটি যেন পাঠিয়ে দেয়া হয়।

অন্য একদিন বিকাল ৪টার দিকে জেলা প্রশাসক তার খাস কামরায় দু’তিনজন সহকর্মীর সাথে খোশগল্প করছিলেন। এমন সময় ঢাকা থেকে ভাবীর টেলিফোন এলো। তিনি রাতে পারিবারিক দাওয়াতে যাবেন। সে অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য কিছু মিষ্টান্ন প্রয়োজন এবং তা যেন অবশ্যই রাত ৮টার আগে বাসায় পৌঁছানো হয়। অগত্যা জেলা প্রশাসক আর কী করবেন? মিষ্টান্ন ঠিকভাবে পৌঁছাতে না পারলে তো স্ত্রীর বকুনি খেতে হবে। এবার তিনি নাজিরকে ডেকে বললেন, এক কেজি রসমালাই ও এক কেজি রসগোল্লা স্থানীয় মিষ্টান্নের দোকান থেকে কিনে দ্রুত যেন পরিচিত বাহকমারফত পাঠিয়ে দেয়া হয়। তোষামোদে অভ্যস্ত এক সহকর্মী পরদিন সকালে জেলা প্রশাসকের কাছে জানতে চাইলেন, মিষ্টান্ন ঠিকভাবে পৌঁছানোর ব্যাপারে কোনো ধরনের অসুবিধা হয়েছে কি না। যখন তিনি শুনলেন সঠিক সময়ে মিষ্টান্ন বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে, তখন বললেন আমাদের নাজির সাহেব ‘আসলেই করিৎকর্মা’।

সাহেব জেলা শহরের বাংলোতে কী খাওয়া দাওয়া করেন, তা নিয়ে সবসময় তার স্ত্রী উদ্বিগ্ন থাকতেন। স্ত্রীর উদ্বেগ প্রশমনে সপ্তাহান্তে ঢাকায় আগমনের কারণে পরিবারের আপনজনে পরিণত হওয়া ড্রাইভার ও অপর এক কর্মচারী তাকে জানালেন, সাহেবের জন্য প্রতিবেলায় আমরা সাহেবের রুচি ও ফরমায়েশ অনুযায়ী উপাদেয় খাবারের ব্যবস্থা করি এবং তিনি প্রতি বেলাতেই পরিতৃপ্তি সহকারে আহার করে বেশ ভালোই আছেন।’

এ তো গেল ঢাকায় ও জেলা শহরে জেলা প্রশাসকের পরিবার ও খাদ্য ব্যয় নির্বাহের খরচ। হিসাব করে দেখা গেল, এতে আনুষঙ্গিক ব্যয়সহ মাসিক ব্যয় ষাট হাজার থেকে লাখের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে। আরো আছে জেলা প্রশাসকের ব্যক্তিগত ব্যয়, সন্তানদের পোশাক পরিচ্ছদ ও লেখাপড়ার ব্যয়, স্ত্রীর হাত খরচ, কন্যা সন্তানদের পাত্রস্থ করার খরচ এবং ভবিষ্যতে রাজধানী ঢাকা শহরে ‘ভদ্রোচিতভাবে বসবাস করা যায়’ এমন আবাসস্থল নির্মাণের খরচ। এভাবে দেখা যায়, তার মাসিক আর্থিক চাহিদা ১০ লাখ অতিক্রম করে যাচ্ছে। বিপুল অর্থের জোগান দিতে গিয়ে তার সহকর্মী ও অধীনস্থরা সিদ্ধান্ত নিলেন, কোনো নথিতে জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরের প্রয়োজন হলে ন্যূনতম সম্মানী/সালামি হবে ৩০০ টাকা এবং উপরের দিকের তা কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী প্রতিকার প্রার্থীর সক্ষমতার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক কর্মস্থলে অবস্থানকালেই রাজধানী শহর ঢাকার অভিজাত সেনাকুঞ্জে তার প্রথম কন্যার বিয়ে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হলো এবং পরে অপর একটি অভিজাত কমিউনিটি সেন্টারে দ্বিতীয় কন্যার বিয়ে হলো। উভয় অনুষ্ঠানের গায়ে হলুদের খরচ থেকে শুরু করে সামগ্রিক ব্যয়ভার সার্থকভাবে বহন করতে সহকর্মী ও অধীনস্থরা সফল হয়েছিলেন। এ ছাড়া মাসিক খাদ্য ব্যয়বহির্ভূত অন্যান্য ব্যয় নির্বাহে সহকর্মী ও অধীনস্থরা কখনো বিফল হয়েছেন এ কথা সম্ভবত বলার সুযোগ সৃষ্টি হতে তারা দেননি।

জেলা প্রশাসকের একটি কর্মস্থলে অবস্থানের মেয়াদ সর্বোচ্চ তিন বছর। কিন্তু আমাদের আলোচ্য কর্মকর্তা চার বছরের কাছাকাছি যাওয়ার পর বদলি হলেন। তার জন্য একাধিক বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। বিদায় অনুষ্ঠানে তার অনেক সহকর্মী ও অধীনস্থ চোখের পানিবিজড়িত বাকরুদ্ধ কণ্ঠে তাকে ‘সততার এক মহান নজির’ হিসেবে উপস্থাপন করলেন। আমাদের বিভিন্নমুখী সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে এ ধরনের অসততা আজ আর কোনো অযোগ্যতা নয় বরং উপরের সিঁড়িতে ওঠার জন্য ‘সর্বোৎকৃষ্ট যোগ্যতা’। এ ধরনের যোগ্যতাসম্পন্ন একাধিক কর্মকর্তা উপসচিব পধদারী জেলা প্রশাসক পদ থেকে ক্রমান্বয়ে যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে ‘সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ’ কর্মকর্তা হিসেবেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এ বাস্তবতায় যারা প্রকৃত সৎ, কিন্তু অকৌশলী ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, তাদের উপরের সিঁড়িতে আরোহণের জন্য আমরা কি বাণী শোনাব, তা কেউ বলতে পারবেন কি?

লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক

iktederahmed@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরে দুর্ঘটনায় মা-ছেলে নিহত, আহত বাবা-মেয়ে দিরাইয়ে বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিশ্বমানের পাঠ্যক্রম গ্রহণের আহ্বান রাষ্ট্রপতির বগুড়ায় পুলিশ পরিচয়ে ট্রাকভর্তি কলা ছিনতাই : গ্রেফতার ৪ ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থী নাটক প্রচার করায় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিশ, চুক্তি বাতিল স্নান করতে গিয়ে দূর্গাসাগর দীঘিতে ডুবে একজনের মৃত্যু ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে লালন করে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে : শ্রিংলা মানবতার কল্যাণে জীবন বাজি রেখে আন্দোলনে ভূমিকা রাখতে হবে : জামায়াত আমির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৭ ফিট তামিমকে যেকোনো ফরম্যাটের দলে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক বিকেবি ও রাকাব একীভূতকরণের প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানববন্ধন

সকল